সোনা কেনা নিছক খরচ নয় বরং এ যুগে সোনাকে লগ্নি হিসাবে ধরাতেই সায় বিশেষজ্ঞদের। —ফাইল চিত্র।
ধনতেরাসে অনেকেই সোনা কেনেন। বাড়িতে ধন-সম্পদের প্রাচুর্য বাড়াতে অনেকেই এই দিন অন্য কোনও ধাতু বা সোনা কেনার সংস্কার মেনে চলেন। এই দিন চাহিদার সঙ্গে তাল মেলাতে ছোট-বড় সব জুয়েলারিগুলিতেই উপচে পড়বে ভিড়। দোকানের পক্ষ থেকে চলবে নানা বিশেষ অফার। শুধু তা-ই নয় গয়নার মজুরিতেও থাকে বিশেষ ছাড় সঙ্গে মেলে নানা উপহারও। সোনা কেনাকে কেবলই নিছক খরচ নয় বরং এ যুগে সোনাকে লগ্নি হিসাবে ধরাতেই সায় বিশেষজ্ঞদের। বিপদে-আপদে টাকার চেয়েও বেশি কাজে আসে সোনা।
সোনার দাম এখন আকাশছোঁয়া। ২২ ক্যারেট সোনার দশ গ্রামের দাম বৃহস্পতিবারের হিসেবে ৩৭,৭৫০ টাকার কাছাকাছি। এতগুলো টাকা খরচ করে সোনা তো কিনবেন, কিন্তু কী ভাবে বুঝবেন আদৌ ঠকছেন কি না? জানেন কি কী ভাবে বুঝতে হয় সোনা কতটা খাঁটি, আঠারো না বাইশ কত ক্যারেটের সোনা কেনা বেশি জরুরি। পার্থক্যই বা কি এই দু’রকম ক্যারেটের? এত দুর্মূল্য সম্পদে বিনিয়োগ করারর আগে জেনে নিন তার যাবতীয় খুঁটিনাটি।
খাদ কতখানি
সাধারণত ২৪ ক্যারাট সোনাই হল খাঁটি। ২৪ ক্যারাট সোনা মানে ৯৯.৯ শতাংশ খাঁটি সোনা। কিন্তু একেবারে খাঁটি সোনা দিয়ে গয়না তৈরি করা যায় না, প্রয়োজন হয় সামান্য খাদের। দোকানে সাধারণত ২২ ক্যারাট সোনা দিয়েই অলঙ্কার তৈরি হয়। সে দিকটা খতিয়ে দেখতে হবে, যাতে ২২ ক্যারাটের সোনাই দেওয়া হয়। ২২ ক্যারেট সোনা মানে ৯১.৬ শতাংশ খাঁটি সোনা। ২১ ক্যারাটে থাকে ৮৭ শতাংশ, ১৮ ক্যারেটে থাকে ৭৫ শতাংশ সোনা। তবে আমাদের দেশে ২২ এবং ২১ ক্যারেট সোনা দিয়েই বেশি গয়না তৈরি করা হয়। আজকাল হালকা সোনার গয়না ফ্যাশনে ভীষণ ‘ইন’। এই গয়নাগুলো মূলত ২২ কিংবা ১৮ ক্যারেটের সোনা দিয়েই করা হয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: গলায় আটকে মাছের কাঁটা? এই সব ঘরোয়া উপায়েই মুক্তি মিলবে সহজে
সোনার খাদ যাচাই করে তবেই সোনা কিনুন।
খাঁটি কি না কী ভাবে বুঝব?
স্পেকট্রোমিটার এমন এক যন্ত্র, যাতে মাপার পর সোনায় খাদ থাকলে সহজেই তা ধরা পড়বে। যন্ত্রই বলে দেবে কত ক্যারাটের সোনা আপনাকে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং স্পেকট্রোমিটার মেশিনে মেপে আপনার সোনার খাদ যাচাই করে তবেই সোনা কিনুন। সঙ্গে অবশ্যই দেখে নিন হলমার্ক। তাতে বিক্রির সময়ে খাদ বাদ যাবে না। কেবল মজুরিটুকুই বাদ যাবে।
সোনা কেনার আগের টিপস
সোনা কতটা খাঁটি: সোনার গয়না কতটা খাঁটি তা ঠিক করে ‘ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস’ (বিআইএস)। প্রত্যেক গয়নায় একটি নম্বর হলমার্ক করা থাকে, বিআইএস স্ট্যাম্প, সোনার ক্যারাট, হলমার্কের সাল, স্বর্ণকারের পরিচয় ও স্থান— এই তথ্য থাকতেই হবে। কেনার আগে অবশ্যই দেখে নিতে হবে এই ব্যাপারগুলি।
তৈরির উপর কত ছাড়: মেকিং চার্যের উপর বাড়তি ছাড় দেখিয়ে আপনাকে প্রলোভনে ফেলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। কেনার আগেন অবশ্যই জেনে নিন ছাড় সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য। কোনও হিড্ন চার্জেস আছে কি নাও জেনে নিন।
আরও পড়ুন: হার্টের রোগ ঠেকাতে পাতে রাখতেই হবে এ সব খাবার
বিভিন্ন দোকানে দরদাম যাচাই করে তবেই কিনুন সোনা।
দামের হেরফের: প্রায় কাছাকাছি নকশার গয়না বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন দামের হতেই পারে। কারণ হিসাবে সোনার মান আর মেকিং চার্জের যুক্তি দেখান স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা। তাই বেশ কিছু দোকানে আগে সার্ভে করে তবেই কিনুন সোনার গয়না।
সোনায় বিনিয়োগ: সোনা কেনা ‘ভাল লগ্নি’ বটে তবে সবটাই নির্ভর করে বাজারের ওঠানামার উপর। তাই লগ্নির উদ্দেশে সোনা কিনতে চাইলে, অবশ্যই সে সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে কিনুন। মতামত নিন বিশেষজ্ঞের।
মণিমুক্তাখচিত: সোনার গয়নায় হিরে, রুবি, পান্না জাতীয় পাথরের কাজ থাকলে তা দেখতে ভালই লাগে আর সে ক্ষেত্রে দামটাও বেড়ে যায় অনেকখানি। অথচ পরবর্তী কালে বিক্রি করার সময় সেই গয়নার মনের মতো দাম পাওয়া যায় না। তাই সোনার গয়নায় পাথর না থাকাই ভাল। বরং সোনা কেনার সময় সোনার উপরেই বেশি জোর দিন, মূল্যবান পাথরের উপর নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy