সাইবার অপরাধের ঘটনা দিন দিন বেড়ে চলেছে। ডিজিটাল দুনিয়ায় কত মানুষ প্রতারিত হচ্ছেন, কত আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে, তার হিসেবও নেই। অর্ধেক অভিযোগ জমাই পড়ে না। অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিয়ো থেকে শুরু করে নানা ধরনের গোপন, ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায়ের ঘটনা, ভুয়ো অ্যাকাউন্টে আর্থিক প্রতারণা, হোয়াট্সঅ্যাপের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে সেখানে প্রতারণার ঘটনা বেড়েই চলেছে। কেন্দ্রের অধীনস্থ ‘ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম কোঅর্ডিনেশন সেন্টার’-এর তথ্য বলছে, প্রতারণার অভিযোগে গত বছর ডিসেম্বরে ৬০ হাজারের বেশি হোয়াট্সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া হয়েছিল।
জাতীয় সাইবার সুরক্ষা দফতর সতর্ক করে জানিয়েছে, সাইবার অপরাধীদের নতুন নিশানা হোয়াট্সঅ্যাপ। কারণ এই প্ল্যাটফর্মেই সবচেয়ে বেশি ব্যক্তিগত তথ্যের আদানপ্রদান হয়। হোয়াট্সঅ্যাপ থেকে এখন টাকাপয়সার লেনদেনও সম্ভব। তাই সব মিলিয়েই বিপদ বাড়ছে। অথচ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখলেই নিজের অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখা সম্ভব।
হোয়াট্সঅ্যাপের অ্যাকাউন্ট সুরক্ষিত রাখার কয়েকটি উপায়
১) প্রথমত হোয়াট্সঅ্যাপ আপডেট করতে হবে। এর পর সেটিংসে গিয়ে অ্যাকাউন্ট অপশন থেকে টু-স্টেপ ভেরিফিকেশন সিলেক্ট করে নিন। এর জন্য নিজের ইমেল আইডি লিঙ্ক করাতে হবে বা পাসকোড সেট করতে হবে। এমন পাসকোড সেট করতে হবে, যাতে কোনও ভাবেই অপরাধীরা আপনার সুরক্ষাবলয় ভেদ করতে না পারে।
২) হোয়াট্সঅ্যাপ অবশ্যই পাসওয়ার্ড অথবা ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা ফেস লক সিস্টেম দিয়ে সুরক্ষিত করুন, যাতে কেউ আপনার ফোনটি হাতে পেলেই হোয়াট্সঅ্যাপ অ্যাকাউন্ট না খুলে ফেলতে পারেন।
আরও পড়ুন:
৩) একাধিক ডিভাইসে হোয়াট্সঅ্যাপ ওয়েব খুলে রাখবেন না। ব্যবহারের পর প্রতিটি ডিভাইস থেকে অ্যাকাউন্ট লগ আউট করতে হবে।
৪) কম্পিউটারে খোলা হোয়াট্সঅ্যাপ পেজটির ডান দিকে একেবারে কোণে তিনটি ডট থাকে। সেখানে ক্লিক করতে হবে। সেখানে রয়েছে ‘সেটিংস’ মেনু। সেখান থেকে ‘প্রাইভেসি’-তে গিয়ে ‘স্ক্রিন লক’ অপশনে ক্লিক করতে হবে। এ বার স্ক্রিনে একটি মেসেজবক্স ফুটে উঠবে। সেখানে ক্লিক করে নিজের পছন্দমতো পাসওয়ার্ড দিন। এ ভাবে স্ক্রিন লক করে রাখতে পারবেন। তাতে কেউ আপনার অ্যাকাউন্টে ঢুকে পড়লেও চ্যাটবক্স ব্যবহার করতে পারবেন না।
৫) হ্যাকড্ হওয়া থেকে বাঁচতে হলে সবসময়ে সফট্অয়্যার আপডেট করে রাখতে হবে। নামী সংস্থার অ্যান্টিভাইরাস ইনস্টল করে রাখতে হবে ফোনে। নতুন কোনও অ্যাপ ডাউনলোডের সময়ে ভাল করে তা স্ক্যান করে নিতে হবে। হোয়াট্সঅ্যাপে অচেনা নম্বর থেকে আসা লিঙ্ক বা ছবিতে ক্লিক করবেন না। কারণ এ সবের মাধ্যমেও ‘ম্যালঅয়্যার’ ইনস্টল হয়ে যেতে পারে।
৬)হোয়াট্সঅ্যাপে কখনওই পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করবেন না। ফ্রি ওয়াইফাইয়ের সঙ্গে সংযুক্ত হলে সেই ফোনের ব্যক্তিগত তথ্য হ্যাকারেরা খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারে। তা ছাড়া পাবলিক চার্জিং স্টেশনে ফোন চার্জ না করাই ভাল।