Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
cancer

একটু সচেতন হলেই ক্যানসার থামানো যায় প্রাথমিক পর্যায়ে

এখন আমাদের দেশে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১০ জন ক্যানসারে আক্রান্ত। অনুমান, ২০৫০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১০০ জনে প্রায় ১৬ জন।

বাড়ছে ক্যানসারের সংক্রমণ।

বাড়ছে ক্যানসারের সংক্রমণ। ফাইল চিত্র।

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৫৪
Share: Save:

ক্যানসার এমন এক অসুখ, যা সেলিব্রিটি থেকে সাধারণ মানুষ কাউকেই রেহাই দেয় না। তবে শুরুতে ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসার সাহায্যে এই অসুখ থামিয়ে দিয়ে ভাল থাকা যায়। এমনই বলছেন চিত্তরঞ্জন ন্যাশনাল ক্যানসার ইনস্টিটিউটের (সিএনসিআই) অধিকর্তা চিকিৎসক জয়ন্ত চক্রবর্তী কর্কট রোগের প্রাথমিক উপসর্গ সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়লে প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় করা অনেক সহজ। এই রোগের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যথাযথ চিকিৎসার পাশাপাশি মনের জোর একটা বড় হাতিয়ার, বলছেন সিএনসিআই-র মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট শঙ্কর সেনগুপ্ত।

সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) ও ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ অন ক্যানসার (আইএআরসি) বিশ্ব ক্যানসার দিবস পালন করে। ২০০০ সালে ইউনেসকোর প্রধানের উদ্যোগে ৪ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে বিশ্ব ক্যানসার দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুযায়ী আমাদের দেশে ২০১৮ সালে ১১ লক্ষের বেশি মানুষ নতুন করে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাঁদের মধ্যে ৭ লক্ষ ৮৪ হাজার ৮০০ জন মারা গিয়েছেন। সংখ্যাটা যথেষ্ট উদ্বেগজনক।

জয়ন্ত চক্রবর্তী জানালেন, প্রবীণ মানুষের মধ্যে ক্যানসারের ঝুঁকি তুলনামূলক ভাবে বেশি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, এখন আমাদের দেশে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ১০ জন ক্যানসারে আক্রান্ত। অনুমান, ২০৫০ সালে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১০০ জনে প্রায় ১৬ জন। বয়স্কদের মধ্যে প্রস্টেট ক্যানসার, স্তনের ক্যানসার, ফুসফুসের ক্যানসার ও পেটের ক্যানসার বেশি দেখা যায়। ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে ক্যানসারের ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায়। কম বয়সীদের তুলনায় তা প্রায় ১১ গুণ বেশি। তবে ক্যানসারের প্রাথমিক উপসর্গ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকলে, দ্রুত রোগ নির্ণয় করা যায় বলে ভরসা দিলেন শঙ্কর সেনগুপ্ত।

এই ব্যাপারে কয়েকটি উপসর্গের কথা মাথায় রাখার পরামর্শ দিলেন জয়ন্ত চক্রবর্তী। এগুলি অনেক সময় ক্যানসারের প্রথমিক লক্ষণ হতে পারে। এই সব উপসর্গ দেখলে অবিলম্বে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। লক্ষণগুলি হল:

• ২ সপ্তাহের বেশি নাগাড়ে শুকনো কাশি ফুসফুসের ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।
• স্তনে কোনও লাম্প বা ব্যথাহীন ফোলা অংশ স্তন ক্যানসারের লক্ষণ। বংশে এমন কারও হয়ে থাকলে ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। চিকিৎসক বলে দিতে পারবেন, কী ভাবে এই পরীক্ষা করতে হয়।
• খাবার গিলতে অসুবিধে হলে, তা যদি ২ সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়, চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটা অনেক সময় গলায় ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।
• মেনোপজের পর পেটে ব্যথা ক্যানসারের লক্ষণ হতে পারে।
• লাগাতার পেটে অস্বস্তি ও গ্যাস হলে নিজে নিজে ওষুধ খাবেন না। ওভারির ক্যানসারের কারণে এই উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
• ডায়েটিং বা বড় কোনও অসুখ ছাড়া ওজন কমতে শুরু করা ক্যানসারের অন্যতম লক্ষণ।
• মাড়ি, প্রস্রাব বা মল থেকে রক্তপাত হলে, এবং তার সঙ্গে জ্বর থাকলে তা ক্যানসারের লক্ষণ।
• লাগাতার পেটের গণ্ডগোল বা কোষ্ঠকাঠিন্য অন্ত্র, প্রস্টেট বা রেক্টাল ক্যানসারের উপসর্গ হতে পারে।
• বারে বারে জ্বর ও সংক্রমণ হলেও ক্যানসারের কথা ভাবতে হবে।
• আঁচিল বা তিলের রঙ ও আকার বদলে গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
• লিউকিমিয়া বা লিম্ফোমার উপসর্গ হল ভয়ানক ক্লান্তি।
এই সব উপসর্গ দেখলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ ধরা পড়লে সঠিক চিকিৎসার সাহায্যে রোগীকে ভাল রাখা যায়।

অন্য বিষয়গুলি:

cancer
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy