পাতলা করে কাটা মুচমুচে করলা ভাজা দিয়ে অনেকেই এক থালা ভাত খেয়ে ফেলতে পারেন। ডাল হোক বা শুক্তো, নানা রান্নাতে দরকার হয় করলা। সব্জিটির পুষ্টিগুণের জন্য তেতো হওয়া সত্ত্বেও হেঁশেলে তার কদর। তবে করলা শুধু নয়, তার পাতাটিও কিন্তু খাওয়া চলে।
পুষ্টিবিদ কণিকা মালহোত্র বলছেন, ‘‘করলার পাতায় থাকে ভিটামিন এ, সি, ফোলেট, পটাশিয়াম এবং আয়রন। রয়েছে নানা রকম খনিজ।’’
করলাপাতার গুণাগুণ
করলার উপকারিতার কথা সকলে জানলেও, করলাপাতার পুষ্টিগুণের খোঁজ রাখেন না তেমন কেউ। কণিকা বলছেন, রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে পাতাটি। এতে থাকা ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এবং হজমে সহায়ক। করলাপাতায় মেলে ভিটামিন সি, যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কার্যকর। অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকায় ত্বকের জৌলুসও বজায় রাখতেও পাতে রাখতে তা খাওয়া চলে। শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করতে, লিভারের কার্যক্ষমতা বজায় রাখতেও করলাপাতা উপযোগী।
আরও পড়ুন:
তবে খাবার তালিকায় করলাপাতা যোগ করার আগে কয়েকটি বিষয়ে সতর্কও করছেন পুষ্টিবিদ। যে হেতু এই পাতায় থাকা উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, তাই ডায়বিটিস থাকলে, শর্করার মাত্রা পরীক্ষা করে তবেই তা তা খেতে বলছেন তিনি। বিশেষত ডায়বিটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য কড়া মাত্রার ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি করলাপাতা নিয়মিত খেলে, আচমকা রক্তে শর্করার মাত্রা অতিরিক্ত নেমে যাওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে। পাশাপাশি কিডনির অসুখ থাকলেও করলাপাতা খেতে হবে একটু বুঝেশুনে। কণিকার পরামর্শ কোনও অসুখ থাক বা না থাক, করলাপাতা খেতে হবে মাপ বুঝে। অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বা সদ্য প্রসূতিদের করলাপাতা খেতে বারণ করছেন পুষ্টিবিদ।
দৈনন্দিন খাবারে কী ভাবে যোগ করবেন পাতাটি?
যে কোনও শাকপাতা যেমন অল্প তেলে হালকা ভেজে খাওয়ার চল রয়েছে করলাপাতাও সে ভাবে খাওয়া চলে। ধুয়ে কুচিয়ে তেলে সর্ষে, রসুন ফোড়ন দিয়ে পাতাটি নুন, হলুদ দিয়ে ভেজে নিতে পারেন। শাক হিসাবে ভাত, রুটির সঙ্গে খেতে পারেন। স্যুপেও তা যোগ করা যায়। উপকারিতার কথা ভেবেই এটি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ। স্বাদে তেতো লাগবে জেনেও স্মুদিতে মিশিয়ে নিতে পারেন।
অনেকেই পলতাপাতা, ধনেপাতার বড়া খান। করলাপাতা দিয়েও তেমনটা করা যায়। তবে উচ্চ তাপমাত্রায় ছাঁকা তেলে ভাজা খাবারে পুষ্টিগুণ তেমন বজায় থাকে না।