বছর বাহান্নর তাপস সামন্ত আগে থেকে কিছুই বুঝতে পারেননি। ব্যথাবেদনা নেই। জ্বালা নেই। জ্বর নেই। শুধু প্রস্টেট সামান্য বেড়েছিল আর কয়েক সপ্তাহ মূত্রত্যাগের সময় অস্বস্তি হচ্ছিল। গিন্নির চাপাচাপিতে চিকিৎসকের কাছে যান। পরীক্ষার পরে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার জোগাড়! প্রস্টেট ক্যানসার! তবে প্রথম স্টেজ বলে কিছুটা আশার আলো রয়েছে।
এ দেশে প্রস্টেট ক্যানসার সম্পর্কে সচেতনতা সীমিত এবং প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিতে বেশির ভাগ মানুষ উদাসীন বলে ইউরোলজিস্টেরা আফসোস করেন। শুক্রবার অ্যাপোলো গ্লেনেগলস হাসপাতালে প্রস্টেট ক্যানসার ও রোবোটিক সার্জারি নিয়ে এক সংবাদিক বৈঠকে চিকিৎসকেরা জানান, পশ্চিমী দেশে প্রস্টেট ক্যানসারের হার কিছুটা বেশি। কিন্তু পশ্চিমী খাদ্যাভাস, জীবনশৈলী দ্রুত জায়গা নিচ্ছে এ দেশেও।
ফলে এখন এখানেও প্রস্টেট ক্যানসারের ‘এনভায়রনমেন্টাল ফ্যাক্টর’ যথেষ্ট। আগের থেকে বেশি কেসও মিলছে। কিন্তু সচেতনতা নেই। নেই তথ্যব্যাঙ্ক। ইউরোলজিস্ট প্রখর দাশগুপ্ত জানালেন, কলকাতা, দিল্লি, তিরুঅনন্তপুরমের মতো শহর ক্রমশ প্রস্টেট ক্যানসারের ‘হটস্পট’ হয়ে উঠছে। প্রচুর রোগী আসছেন। তাঁর কথায়, ‘‘মোটামুটি ৫০ বছর পেরোলেই যে পুরুষদের বছরে অন্তত এক বার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে ‘পিএসএ’ টেস্ট করতে হয়, সেটা অনেকেই জানেন না বা জানলেও গুরুত্ব দেন না।’’
পিএসএ পরীক্ষা আসলে কী?
ইউরোলজিস্টরা ব্যাখ্যা দিলেন, পিএসএ এক রকম রাসায়নিক। শরীরে এই রাসায়নিকের ক্ষরণ বেড়ে গেলে প্রস্টেট ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে। কিন্তু অনেকেই রক্তে পিএসএ বেড়েছে কি না, তা দেখার জন্য বছরে অন্তত এক বার সেই টেস্ট করান না। ইউরোলজিস্ট তথা ‘ইউরোলজিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়া’র অন্যতম কর্তা অমিত ঘোষের কথায়, ‘‘অনেকে পিএসএ করান। কিন্তু খারাপ কিছু মিললেও আর বায়োপসি করাতে চান না। আবার অনেকে বায়োপসি পর্যন্ত করিয়েও অপারেশন করাতে পিছিয়ে যান। ভাবেন, এই বয়সে আর কাটাকাটির মধ্যে যাবেন না।’’
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, এখন প্রস্টেট ক্যানসারের অস্ত্রোপচারের অনেক উন্নত উপায় বেরিয়েছে। যেমন, ক্যানসার প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলে এখন রোবোটিক সার্জারির মাধ্যমে সহজেই পুরো প্রস্টেট গ্ল্যান্ড বাদ দেওয়া যায়। এতে রক্তক্ষরণও কম হয় এবং রোগী খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে কাজে ফিরতে পারেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy