ভারতের মশলা নিয়ে ঠিক কী মন্তব্য করা হয়েছে? —ফাইল চিত্র।
একটি ভিডিয়োতে বলে ফেলেছিলেন, ভারতীয় খাবারে অতি খারাপ মশলাপাতি ব্যবহার করা হয়। তার পরই কার্যত তুলোধনা করা হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার নেটপ্রভাবী সিডনি ওয়াটসনকে। সমাজমাধ্যমের পাতায় পাতায় সিডনিকে নিয়ে সমালোনচার ঝড় উঠেছে। ভারতীয় খাবারের স্বাদ ও ঐতিহ্য মনে করিয়ে দিয়ে, অনেকে তো সিডনির রুচিবোধকেও কাঠগড়ায় তুলেছেন। ভারতীয় মশলার ইতিহাসও স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন কেউ কেউ।
সমস্যার সূত্রপাত হয় জেফ নামের এক ব্যক্তির এক্স হ্যান্ডেলের পোস্ট ঘিরে। জেফ ফ্রায়েড রাইস, চিকেন টিক্কা, পনির বাটার মশলা-সহ নানা রকম ভারতীয় পদের ছবি পোস্ট করে তাঁর এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছিলেন, “ভারতীয় খাবার বিশ্বের সেরা। কারও আপত্তি থাকলে আমি তর্কে রাজি আছি।” জেফের এই পোস্টটি শেয়ার করে তার প্রত্যুত্তরে সিডনি লেখেন, “এটা একেবারেই সত্যি নয়। যদি খাবারকে সুস্বাদু করতে তাতে অতি খারাপ মশলাপাতি মেশাতে হয়, তা হলে সেই খাবার ভাল নয়।”
সিডনির এমন মন্তব্যের পরেই ঝড় বয়ে যায়। কয়েক মিনিটে আড়াই কোটির বেশি মানুষ পোস্টটি দেখে শেয়ার করে ফেলেন। সিডনিকে তুলোধনা করে এর জবাব দিতেও ছাড়েননি অনেকে। এক জন লিখেছেন, “ভারতের যে মশলাকে খারাপ বলছেন, তার উপর নিয়ন্ত্রণ পেতেই একসময় মরিয়া চেষ্টা করেছিল ব্রিটিশেরা।” অন্য এক জনের বক্তব্য, “এমন একটি গোষ্ঠী এই মন্তব্য করছে যাদের রন্ধনপ্রণালী ও মশলাপাতি নিয়ে বিশেষ কোনও জ্ঞানই নেই। চিকেন টিক্কা মশলা ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় একটি খাবার যা চাখতে বাইরে থেকেও লোকজন আসেন। ভারতের রন্ধন সংস্কৃতি নিয়ে খারাপ মন্তব্য করা রীতিমতো লজ্জার।” সমালোচনা অবশ্য এখানেই থামেনি। কেউ কেউ আবার বলেছেন, “সিডনির তো স্বাদকোরই নেই। দোষটা ওর জিভের, মশলাপাতির নয়।”
প্রাচীন ভারত, তারও আগে ভারত মহাসাগরের পারে যে অংশ জম্বুদ্বীপ নামে পরিচিত ছিল, সেই অংশকে ইউরোপের দেশগুলি চিনত একটাই কারণে। তা হল মশলা। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতের মশলার জগৎজোড়া খ্যাতি। পশ্চিমের দেশগুলি মশলার সূত্রেই ভারতের সঙ্গে একসময় বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। সমুদ্র পেরিয়ে মশলা কিনতে আসতেন বিদেশি বণিকেরা। জাহাজ বোঝাই হয়ে মশলা যেত বিদেশে। এখনও অধিকাংশ দেশের মশলাপাতি কেনার অন্যতম ঠিকানা ভারত। কিন্তু সম্প্রতি ভারতীয় নিজস্ব ব্র্যান্ডের কয়েকটি মশলাতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক রয়েছে দাবি করে তা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় বহু দেশেই। অস্ট্রেলিয়াতেও কয়েকটি ব্র্যান্ডের মশলা নিষিদ্ধ হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, সেখান থেকেই ভারতীয় মশলার প্রতি বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছে সিডনির। তাই ভারতের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির কথা ফের মনে করিয়ে দিয়ে সিডনির পোস্টের জবাবে এক জন লিখেছেন, “ভারতীয় খাবারের প্রতি ভালবাসা ও আবেগ রয়েছে বিশ্ব জুড়েই। এই সংস্কৃতিকে আপনি গ্রহণ করতে না পারলে, তা আপনারই ক্ষতি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy