মৃত স্বামীর শুক্রাণু পেলেন বৃদ্ধা। ছবি: সংগৃহীত।
ছ’বছরের ব্যবধানে দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় মৃত দুই সন্তান। সেই শোক ভুলতে মৃত স্বামীর সংরক্ষিত শুক্রাণু ব্যবহার করে ফের মা হতে চেয়েছিলেন বছর ৬২-এর বৃদ্ধা। বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা একেবারেই সন্তানধারণের উপযুক্ত ছিল না। তাই সারোগেসির মাধ্যমে সন্তানের সুখ পেতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে তাঁর মাতৃসুখে বাধ সেধেছিল আইন। আইনি জটিলতার দীর্ঘ পথ পেরিয়ে গত বছর ডিসেম্বরে আদালত বৃদ্ধার সপক্ষেই রায় দেয়। ঘটনা অস্ট্রেলিয়ার।
২০১৩ সালে জলে ডুবে ২৭ বছর বয়সি কন্যা এবং ২০১৯ সালে গাড়ি দুর্ঘটনায় ৩১ বছর বয়সি পুত্রের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছিলেন ওই বৃদ্ধা। ২০২৩ সালের জুন মাসে বয়সজনিত কারণেই ওই বৃদ্ধার স্বামীর মৃত্যু হয়। সেই সময়েই তাঁর স্বামীর শুক্রাণু সংগ্রহ করার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন তিনি। তবে আইনি অনুমতিপত্র না থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাত গুটিয়ে নেন। সেই সময়েই পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন বছর ৬২-র ওই বৃদ্ধা। তাঁর আর্জি শুনে একদিনের মধ্যে বিশেষ আদালত মৃত ব্যক্তির শরীর থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করার অনুমতি দেয়। তবে বিচারপতি জানিয়েছেন, শুক্রাণু সংগ্রহ করার অনুমতি দিলেও সেই শুক্রাণু কারও শরীরে ব্যবহার করতে চাইলে তখন কিন্তু আলাদা অনুমতিপত্র প্রয়োজন হবে। শেষমেশ গত ডিসেম্বরে সেই অনুমতিপত্রেও সই করে দেন বিচারপতি। সুতরাং, আইনি গেরোয় আটকে থাকা মা ডাক শোনার সাধ আর অপূর্ণ থাকবে না বৃদ্ধার।
তবে এই প্রথম নয়, ভারতেও এমন ঘটনার নজির রয়েছে। কিছু দিন আগে পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার মুরারই এলাকায় এমন ঘটনা ঘটেছিল গত ডিসেম্বরেই। কোভিডে মৃত স্বামীর শুক্রাণু সংরক্ষণ করে ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজ়েশন বা ‘আইভিএফ’ পদ্ধতিতে সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এক মহিলা। রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে তেমনই খবর পাওয়া গিয়েছিল। দীর্ঘ আইনি লড়াই পেরিয়ে জয়ী হয়েছিলেন তিনিও। মহিলার আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ওই মহিলার স্বামী বেঁচে থাকাকালীনই সন্তানধারণ নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল তাঁর। দীর্ঘ দিন আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তান লাভের চেষ্টাও করেন তাঁরা। সেই সময়েই কলকাতার একটি পরীক্ষাগারে ওই মহিলার স্বামীর শুক্রাণু সংরক্ষণ করা হয়। এর মধ্যে কোভিডে ওই ব্যক্তি মারা যান। সন্তানকামনায় মৃত স্বামীর শুক্রাণু ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেন ওই মহিলা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy