Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

কালো টাকার বিষয়ে তথ্য চেয়ে ফের চিঠি নয়াদিল্লির

দু’দেশের মধ্যে চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম। এই দুই যুক্তিতে ভর করে সুইৎজারল্যান্ডের কাছে কালো টাকার মালিকদের বিষয়ে ফের তথ্য চাইল নয়াদিল্লি। এর আগে তথ্য চেয়েছিল মনমোহন সিংহের সরকার। এ বার চিঠি গেল নরেন্দ্র মোদী প্রশাসনের তরফে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ জুন ২০১৪ ০৩:২৮
Share: Save:

দু’দেশের মধ্যে চুক্তি এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম। এই দুই যুক্তিতে ভর করে সুইৎজারল্যান্ডের কাছে কালো টাকার মালিকদের বিষয়ে ফের তথ্য চাইল নয়াদিল্লি। এর আগে তথ্য চেয়েছিল মনমোহন সিংহের সরকার। এ বার চিঠি গেল নরেন্দ্র মোদী প্রশাসনের তরফে।

গত সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছিলেন যে, সুইস ব্যাঙ্কে টাকা জমা রাখা ভারতীয়দের তালিকা পেতে সে দেশের সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হবে। ইতিমধ্যেই সেই চিঠি পাঠানো হয়েছে। অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, চিঠিতে দু’দেশের মধ্যে কর ফাঁকি সংক্রান্ত চুক্তির উল্লেখ করা হয়েছে। ওই চুক্তি অনুযায়ী, ভারতে কর ফাঁকি দিয়ে সুইস ব্যাঙ্কে রাখা কালো টাকার মালিকদের সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হলে সুইৎজারল্যান্ড সে বিষয়ে ভারতকে সাহায্য করবে। পাশাপাশি, আর্থিক সহযোগিতা ও উন্নয়নের জন্য তৈরি আন্তর্জাতিক সংস্থা ‘ওসিইডি’-র নিয়ম অনুযায়ীও সুইস সরকারের যে ভারতকে সাহায্য করা উচিত, সে কথাও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইউপিএ জমানার অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম চার বার সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখে এই সংক্রান্ত তথ্য দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সুইস ব্যাঙ্কে কালো টাকার মালিকদের একটি তালিকা ব্যাঙ্কের এক কর্মচারী চুরি করেছিলেন। সেই তথ্য অন্যান্য দেশের মতো নয়াদিল্লির হাতেও এসে পৌঁছয়। কিন্তু বেআইনি ভাবে পাওয়া তথ্য বলে সুইস সরকার সে বিষয়ে কোনও রকম সাহায্যে রাজি হয়নি।

অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, সুইস ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট মালিকদের নামের তালিকার চেয়েও বড় বিষয় হল, সেখানে আসলে কাদের টাকা গচ্ছিত রয়েছে সেটা খুঁজে বের করা। কারণ অনেকেরই বেনামে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আবার কালো টাকা সাদা করে ভারতে নিয়ে আসারও নিত্যনতুন পথ বের করা হচ্ছে। যার মধ্যে প্রধান হল সোনা, হিরে ও অলঙ্কারের চালান। ঘুরপথে ওই কালো টাকা শেয়ার বাজারেও খাটানো হচ্ছে। চলতি বছরেই সুইৎজারল্যান্ড থেকে ভারতে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকার সোনা রফতানি হয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা মনে করছেন, এর একটা বড় অংশ আসলে কালো টাকায় কেনা সোনা।

সুইৎজারল্যান্ডের সরকারি তথ্য বলছে, সে দেশ থেকে ভারতে সোনা-রুপোর চালান জানুয়ারি থেকে প্রতি মাসে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে। শুধু মে মাসেই প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার রফতানি হয়েছে। সুইৎজারল্যান্ড থেকে যে পরিমাণ সোনা-রুপো রফতানি হয়, তার ৩২ শতাংশই এখন ভারতে আসছে। সুইৎজারল্যান্ড থেকে সবথেকে বেশি সোনা রফতানি হতো চিনে। এখন ভারত চিনকে ছাপিয়ে গিয়েছে।

সুইস ব্যাঙ্কগুলি বরাবরই গ্রাহকদের গোপনীয়তাকেই সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে এসেছে। কিন্তু এখন ভারতের মতো দেশগুলির চাপে তারা অ্যাকাউন্ট মালিকদের থেকে হলফনামা নিচ্ছে। যেখানে বলা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক চুক্তি অনুযায়ী কোনও দেশ কর ফাঁকি সংক্রান্ত তথ্য চাইলে অ্যাকাউন্ট মালিকদের তথ্য ব্যাঙ্ক সেই দেশের হাতে তুলে দিতে পারে। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা মনে করছেন, বেগতিক দেখে কালো টাকার মালিকরাও নানা ভাবে নিজেদের কালো টাকা সাদা করে দেশে ফিরিয়ে আনতে চাইছে।

অন্য বিষয়গুলি:

black money swiss bank letter to swiss bank
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE