শিবসাগরে মনমোহন সিংহ। ছবি: পিটিআই
যত অভিযোগই থাক, খাতায়-কলমে তো তিনি অসমবাসীর কাছে ‘আমাদেরই লোক’ ছিলেন। আজ গুয়াহাটির ‘ভাড়াঘরের বাসিন্দা’ তথা অসমের সাংসদ, প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের শেষ জনসভা হয়ে গেল রাজ্যে। রাজনীতির চেয়েও এ দিন শিবসাগরের সভা শেষ পর্যন্ত হয়ে দাঁড়ায় মনমোহনের বিদায় সম্বর্ধনা। ২৩ বছর অসমের প্রতিনিধিত্বের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মনমোহনের ভাষণও ছিল বিদায়ী বক্তৃতা। তাঁর কথায়, “যখন যে ভূমিকায় কাজ করেছি, চেষ্টা করেছি দেশের সেবা করার। আজ রাহুল গাঁধী, সনিয়া গাঁধীর হয়ে ভোট চাইতে এসেছি।”
‘স্থানীয় প্রধানমন্ত্রী’-ই রাজ্যে বিরোধীদের প্রচারের অন্যতম প্রধান হাতিয়ার। নরেন্দ্র মোদী থেকে প্রফুল্ল মহন্ত---সকলেরই অভিযোগ, মনমোহনের কাছ থেকে অসম সে ভাবে কিছু পায়নি। তবু এরপর ফের কবে ‘অসমের সাংসদ’ প্রধানমন্ত্রী হবেন, আদৌ হবেন কিনা আজ সে প্রশ্নই বড় হয়ে ফিরে এসেছে। কংগ্রেস বিরোধীরাও একমত, ব্যক্তিত্ব বা বাগ্মিতায় লেটার নম্বর তাঁকে দিতে না পারলেও সততা ও ভদ্রতায় মনমোহন অভিযোগের সুযোগ দেননি। শেষ সভার শুরুতে মনমোহন যখন দর্শকদের উদ্দেশে পুলিশি কেতায় স্যালুট ঠুকলেন তখন জনতা উদ্বেল হয়ে ওঠে। ওঠে জিন্দাবাদ ধ্বনি। ফুলাম গামোসা, জাপি, সরাই ও মানপত্র তুলে দেওয়া হয় মনমোহন সিংহের হাতে।
আজ বেলা সওয়া ১১টা নাগাদ মোহনবাড়ি বিমানবন্দরে নেমে হেলিকপ্টারে খুমটাই চা বাগানের উদ্দেশে রওনা হন প্রধানমন্ত্রী। তবে রাহুলের ডিব্রুগড়ের সভার মতোই, মনমোহনের সভাতেও আশানুরূপ ভিড় হয়নি। যোরহাটের প্রার্থী বিজয়কৃষ্ণ সন্দিকৈ, মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈ, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ভুবনেশ্বর কলিতা, উত্তর-পূর্ব উন্নয়নমন্ত্রী তথা ডিব্রুগড়ের প্রার্থী পবন সিংহ ঘাটোয়ার মনমোহনকে অভিবাদন জানান।
প্রধানমন্ত্রীর আধঘণ্টার হিন্দি বক্তৃতার শুরুতেই ছিল বিদায়ী আবেগ। তিনি বলেন, “চার দশক ধরে বিভিন্ন স্তরে মানুষের সেবা করছি। দুই দশকের বেশি অসমের প্রতিনিধি আমি। শেষ দশ বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছি। যখন যে পদেই থেকেছি, মানুষের সেবা করার চেষ্টা করেছি।” তাঁর কথায়, “আপনাদের দাবি ছিল: দেশের আর্থিক বিকাশ, সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা, সমানাধিকার। আমি ও ইউপিএ সরকার সেই চেষ্টাই করেছি। তবে অনেক কাজ বাকি থেকে গিয়েছে। তা পূরণ করতেই ফের ইউপিএকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনুন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy