Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪

জঙ্গিপনায় ভটকলের ডানহাত ছিল জাহিদ

জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের ‘অপারেশনাল চিফ’ ইয়াসিন ভটকল গত অগস্টে ধরা পড়ার পর থেকেই তার ডানহাত জাহিদ হুসেনের খোঁজ চলছিল। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) বুধবার রাতে সেই জাহিদকে গ্রেফতার করল কলকাতা স্টেশনে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, ইয়াসিনের যে-জঙ্গি নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ, নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গকে এক সূত্রে গেঁথেছিল, সেই নেটওয়ার্ক মূলত চালাত এই জাহিদই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৩ জুলাই ২০১৪ ০৩:৩৮
Share: Save:

জঙ্গি সংগঠন ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের ‘অপারেশনাল চিফ’ ইয়াসিন ভটকল গত অগস্টে ধরা পড়ার পর থেকেই তার ডানহাত জাহিদ হুসেনের খোঁজ চলছিল। কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) বুধবার রাতে সেই জাহিদকে গ্রেফতার করল কলকাতা স্টেশনে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, ইয়াসিনের যে-জঙ্গি নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ, নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গকে এক সূত্রে গেঁথেছিল, সেই নেটওয়ার্ক মূলত চালাত এই জাহিদই।

এসটিএফের খবর, ২০১০ সালে পুণের জার্মান বেকারিতে বিস্ফোরণের আগে বাংলাদেশ থেকে নদিয়া সীমান্ত পেরিয়ে ঢোকা বিস্ফোরক কলকাতায় এসে নিয়ে গিয়েছিল ইয়াসিন ভটকল নিজেই। তিলজলায় ভটকলের হাতে সেই বিস্ফোরক তুলে দিয়েছিল আনোয়ার হুসেন মল্লিক। আর বাংলাদেশের চুয়াডাঙা জেলায় জাহিদই সেই বিস্ফোরক দিয়েছিল আনোয়ারকে। এসটিএফ গত বছর জুলাইয়ে আনোয়ারকে ধরে।

কে এই জাহিদ?

বাঙালি তো নয়ই। জাহিদ আদৌ ভারতীয় কি না, গোয়েন্দারা সেই ব্যাপারেও সন্দিহান। সে কথা বলে হিন্দি-উর্দু মিশিয়ে। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহ এবং জাল নোটের কারবারের জন্য জাহিদ নিয়মিত নেপাল, বিহার ও পশ্চিমবঙ্গে যাতায়াত করত। গত বছর ৬ জুলাই বি বা দী বাগ চত্বরে এসটিএফের হাতে বিস্ফোরক ও জাল নোট-সহ ধরা পড়ে ইয়াসিনের ‘ক্যুরিয়র’, নদিয়া জেলার চাপড়ার রানিবন্ধের বাসিন্দা আনোয়ার। ২০১০-এর ফেব্রুয়ারিতে পুণের জার্মান বেকারিতে বিস্ফোরণ হয়। তার কয়েক মাস আগে কলকাতায় এসে আনোয়ারের কাছ থেকে আট কিলোগ্রাম আরডিএক্স নিয়ে গিয়েছিল ইয়াসিন। বাংলাদেশে গিয়ে ওই বিস্ফোরক এনেছিল আনোয়ার। জেরায় আনোয়ার জানায়, নদিয়ার গোংরা সীমান্তের ও-পারে, বাংলাদেশের চুয়াডাঙা জেলার কুতুবপুর-মুন্সিপুর গ্রামের কাছে তাকে ওই বিস্ফোরক দিয়েছিল জাহিদ।

আনোয়ারকে জেরা করে জাহিদের কথা জানার পর থেকে গত এক বছর ধরে তাঁরা ভটকলের ওই শাগরেদকে কার্যত গরু খোঁজার মতো খুঁজছিলেন বলে গোয়েন্দারা জানান। তাঁদের ধারণা, জাহিদকে জেরা করে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গের বিস্ফোরক সরবরাহের কাজে জড়িত আরও অনেকের নাম জানা যাবে। আজ, বৃহস্পতিবার জাহিদকে আদালতে তোলার কথা। আনোয়ারকে গ্রেফতার করার পরেই গোয়েন্দারা ভেবেছিলেন, পুণের জার্মান বেকারির বিস্ফোরণে তার সরবরাহ করা বিস্ফোরক কাজে লাগানো হয়েছিল। তবে ধরা পড়ার পরে ইয়াসিন এবং তার কয়েক জন সঙ্গী জানায়, বাংলাদেশ থেকে নদিয়া হয়ে আসা ওই বিস্ফোরক কোনও জঙ্গি হামলায় ব্যবহার করা হয়নি। জাল নোটের কারবারি হিসেবে ইয়াসিন গোয়েন্দাদের হাতে ধরা পড়ে যায়। তার পরেই সেই বিস্ফোরক নষ্ট করে ফেলা হয়েছিল, জেরায় জানায় ওই জঙ্গি নেতা।

জাহিদকে জেরা করে গোয়েন্দারা জানতে চাইবেন, বাংলাদেশের কোথা থেকে, কী ভাবে, কোন ধরনের কত বিস্ফোরক সরবরাহ করেছে সে। ভারতে কোন কোন জঙ্গি হামলায় সেই সব বিস্ফোরকের কতটুকু ব্যবহার করা হয়েছিল। ইন্ডিয়ান মুজাহিদিনের কোন কোন হামলায় তার দেওয়া বিস্ফোরক ব্যবহৃত হয়েছিল, বিশেষ ভাবে তা জানার চেষ্টা করবে এসটিএফ।

অন্য বিষয়গুলি:

indian mujahidin yasin bhatkal zahid hussain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE