প্রতীকী ছবি।
উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমান যখন আকাশের লড়াইয়ে পাকিস্তানি এফ-১৬ বিমানকে ভূপাতিত করেছিলেন, তাঁর গাইডের দায়িত্বে ছিলেন ফ্লাইট কন্ট্রোলার মিন্টি আগরওয়াল। কাবুলে হামলাকারী তালিবান জঙ্গিদের সঙ্গে সরাসরি লড়াই করে কাবুলে ভারতীয় দূতাবাসকে রক্ষা করেছিলেন মিতালী মধুমিতা। বীরত্বের জন্য সেবা পদক পেয়েছেন তিনি। অসমসাহসিকতার জন্য যুদ্ধ সেবা পদক পেয়েছেন মিন্টিও। কোনও বিষয়ে যে তাঁরা পুরুষ সেনাদের চেয়ে পিছিয়ে নেই, একের পর এক ঘটনায় দেখিয়েছেন বায়ুসেনা ও স্থলসেনার নারী সদস্যরা। কিন্তু তার পরেও কমান্ডারের পদে মহিলাদের নিয়োগ করা ‘সম্ভব নয়’ বলে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় সরকারের আইনজীবীরা।
কেন সম্ভব নয়, তার কারণ হিসেবে কেন্দ্র আদালতকে যা বলেছে, আধুনিক সমাজে সে সব যুক্তি ধোপে টেঁকে না বলে মন্তব্য করেছেন কমান্ডিং অফিসার পদ চেয়ে মামলা করা মহিলা সেনা অফিসারদের আইনজীবীরা। কেন্দ্রের আইনজীবী আর বালসুব্রহ্মন্যন ও নীলা গোখলে আদালতকে জানান, সেনা অফিসারদের কাজ খুবই কঠোর ও নিয়মানুবর্তী। অন্তঃসত্ত্বা অবস্থা, মাতৃত্ব ও বাড়ির কাজে মেয়েদের যে ভাবে ছুটিছাটা নিতে হয়, অফিসার পদে সে সব চলে না। অফিসারেরা দেশের যে কোনও প্রান্তে বদলি হতে পারেন, মহিলা পদাধিকারীদের পক্ষে যা অসুবিধার। তার পরে মহিলা অফিসারেরা যুদ্ধবন্দি হলে সরকারের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে। কিন্তু সব চেয়ে বড় যে অসুবিধার কথা কেন্দ্র জানিয়েছে, তা হল— পুরুষ সেনারা মহিলা কমান্ডিং অফিসারদের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করতে পারেন। অধিকাংশ সেনাই গ্রাম থেকে আসেন। সামাজিক দিক দিয়ে শহরের মতো ‘মুক্ত হাওয়া’ গ্রামে বয় না। সেই সামাজিক অবস্থান থেকে উঠে আসা জওয়ানরা মহিলা অফিসারের নির্দেশ মানতে অস্বীকার করলে বাহিনী শৃঙ্খলার সমস্যায় পড়বে।
মহিলা অফিসারদের আইনজীবী মীনাক্ষী লেখি ও ঐশ্বর্যা ভাট্টি বলেন, ২০২০-তে সমাজের সর্ব ক্ষেত্রে মেয়েরা পুরুষের সমান দায়িত্ব ও গুরুত্ব নিয়ে কাজ করছেন। তাঁরা এভারেস্টে চড়ছেন, চাঁদে পা রাখছেন, জঙ্গিবিমান চালিয়ে লড়াই করছেন, রোবট তৈরি করছেন। পুরুষতন্ত্রের নির্মাণ করা কাচের দেওয়াল চুরমার করে সর্ব ক্ষেত্রে নিজের দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছেন। সেখানে এই যুক্তি চলে না।
বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় ও বিচারপতি অজয় রাস্তোগীর ডিভিশন বেঞ্চও কেন্দ্রের এই সব যুক্তি শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন। বিচারপতিদের মন্তব্য, সরকারের উচিত এই মনোভাব বদলানো। মহিলা অফিসারদেরও সুযোগ দেওয়া উচিত। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠার পরে বুধবার কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা পরিস্থিতি সামলাতে মাঠে নামেন। সুপ্রিম কোর্টে তিনি বলেন, ‘‘এমন কিছু বলিনি, যাতে মনে হয় পুরুষ সেনারা মহিলা অফিসারদের নির্দেশ মানবেন না।’’ মন্তব্য করেন— ‘‘পুরুষের সমকক্ষ হতে মেয়েদের কেন লড়াই করতে হবে? মেয়েদের অবস্থান তো পুরুষদের চেয়ে অনেক ওপরে!’’ বিষয়টি নিয়ে এ দিনও শুনানি হয়। বিচারপতিরা জানান, আগামী সপ্তাহে তাঁরা এই মামলার রায় দেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy