প্রতীকী চিত্র।
একের পর এক অপ্রীতিকর ঘটনায় আগেই নগ্ন হয়ে পড়েছিল দিল্লির আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা। এ বার দিল্লির উপকন্ঠেই গুরুগ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে ছুরির ঘায়ে মরতে হল ২২ বছরের এক তরুণীকে।
সোমবার সকাল সাড়ে ন’টা। গুরুগ্রামের এম জি রোড মেট্রো স্টেশন। ট্রেন ধরার জন্য অপেক্ষার ফাঁকে ফোনে স্বামীর সঙ্গে কথা বলছিলেন বছর বাইশের পিঙ্কি। হঠাৎই পিছন থেকে ছুরি নিয়ে হামলা করে জিতেন্দ্র নামে এক ব্যক্তি। বারবার মেয়েটিকে কোপাতে থাকে সে। পিঙ্কির চিৎকারে লোকজন ছুটে এসে ধরে ফেলেন ওই ব্যক্তিকে। বেধড়ক মারধরের পর তাকে সিআইএসএফের হাতে তুলে দেওয়া হয়। অভিযুক্ত জিতেন্দ্রকে গ্রেফতার করে হাসপাতালে ভর্তি করে পুলিশ।
রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় পিঙ্কিকেও। ছুরির আঘাতে পেট ও গলা মারাত্মক রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল পিঙ্কির। কেটে গিয়েছিল বেশ কয়েকটি শিরাও। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই রক্তক্ষরণে মৃত্যু হয় পিঙ্কির।
উত্তর-পূর্বের তরুণী পিঙ্কি আদতে শিলঙের বাসিন্দা। দিল্লির রোহিণী এলাকায় একটি বিউটি পার্লারে কাজ করতেন তিনি। পিঙ্কির স্বামী মান সিংহ জানাচ্ছেন, ‘‘ফোনে কথা বলতে বলতে হঠাৎই চিৎকার শুনতে পাই। তার পরেই ফোন কেটে যায়। এর পর বারবার চেষ্টা করলেও কেউ ফোন ধরেনি। প্রায় আধ ঘণ্টা বাদে এক জন ফোন করে ঘটনাটি আমায় জানান।’’ এ দিন ফোনে পিঙ্কি তাঁর স্বামীকে জানান, জিতেন্দ্র ফের তাঁকে উত্যক্ত করা শুরু করেছে। ঠিক সে সময়ই পিঙ্কির উপর হামলা করে জিতেন্দ্র।
আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা অভিযুক্ত জিতেন্দ্র গুরুগ্রাম এলাকায় রিকশা চালাত। বেশ কিছু দিন ধরেই বিবাহিতা পিঙ্কিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্যক্ত করছিল সে। পিঙ্কির কাছ থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়েই জিতেন্দ্র এই কাজ করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। ঘটনার দিন মেট্রো স্টেশনের কাছেই একটি দোকানে অপেক্ষা করছিল জিতেন্দ্র। সেখান থেকেই একটি ছুরি তুলে নিয়ে এসে ওই তরুণীকে কোপায় সে।
এক মাস আগে দিল্লিতেই প্রকাশ্য রাস্তায় কাঁচি দিয়ে তিরিশ বার কুপিয়ে খুন করা হয় করুণা নামে ২১ বছরের এক তরুণীকে। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ভারী পাথর দিয়ে থেঁতলে দেওয়া হয় তাঁর মাথা। চুপচাপ সে দৃশ্য হজম করেছিল রাজধানী। সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি এক জনও। উদাসীন পুলিশও। এর আগেও একাধিক বার নারী নির্যাতনের মতো অপ্রীতিকর ঘটনার সাক্ষী থেকেছে শহর। নির্ভয়া হোক বা হালের করুণা, নিরাপত্তা ব্যবস্থার নিষ্ক্রিয়তাকেই বারবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে রাজধানী ও তার আশপাশের এলাকা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy