জাতি হিংসায় প্রশ্রয় দিয়ে বিতর্কে এয়ারটেল। —সংগৃহীত
‘মুসলিম’ নয়, ‘হিন্দু’ প্রতিনিধি পাঠাতে হবে ডিশ টিভির পরিষেবা ঠিক করতে! ভারতী এয়ারটেলের কাছে এক গ্রাহকের এ রকম চূড়ান্ত জাতি বিদ্বেষমূলক দাবি ঘিরে নিন্দার ঝড় বইছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
আবার এয়ারটেলও ওই গ্রাহকের দাবি মেনে ‘হিন্দু’ প্রতিনিধি পাঠানোয় বিতর্ক আরও চরমে উঠেছে। এয়ারটেল এবং ওই গ্রাহক—দু’জনকেই জাতি হিংসার অভিযোগে কাঠগড়ায় তুলে নিন্দার ঢেউ আছড়ে পড়ছে সোশ্যাল ওয়ালে। তোলপা়ড় ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ ইনস্টাগ্রামের মতো সাইটগুলি।
যদিও এয়ারটেলের পক্ষ থেকে পরে বিবৃতি দিয়ে জানানো হয়েছে, ভারতী এয়ারটেল এই ধরনের জাতি বিদ্বেষমূলক ধারণার সম্পূর্ণ বিরোধী। কিন্তু তত ক্ষণে সংস্থার ভাবমূর্তির যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গিয়েছে। পোস্ট, টুইটে সংস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন নেটিজেনরা।
আরও পড়ুন: স্ত্রীর দাড়ি, আদালতে ডির্ভোসের আবেদন স্বামীর
ঘটনার সূত্রপাত কয়েক দিন আগে। উত্তর প্রদেশের লখনউয়ের বাসিন্দা পূজা সিংহ নামে এক গ্রাহক তাঁর বাড়ির এয়ারটেল ডিটিএইচ-এ কিছু সমস্যা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। তিনি বিষয়টি নিয়ে সংস্থায় অভিযোগ জানানোর পর এক প্রতিনিধি তাঁর বাড়িতে যান। কাকতালীয় ভাবে তিনি মুসলিম। পূজার অভিযোগ, সংস্থার ওই সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। এর পর ফের সমস্যা দেখা দেওয়ার পর তিনি অভিযোগ জানালে অন্য এক সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করে এয়ারটেল। কিন্তু তিনিও কাকতালীয় ভাবে মুসলিম।
এর পরেই পূজা ওই প্রতিনিধির মাধ্যমে সংস্থার পরিষেবা নিতে অস্বীকার করেন এবং কোনও ‘হিন্দু’ প্রতিনিধি পাঠানোর দাবি করেন। বিষয়টি নিয়ে টুইটও করেন পূজা। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে ভারতী এয়ারটেলও পূজার দাবি মেনে ‘হিন্দু’ প্রতিনিধি পাঠায়।
আরও পড়ুন: এবার বন্যার সতর্কতা তিন দিন আগে, গুগলের সঙ্গে চুক্তি কেন্দ্রের
আর তার পরেই এয়ারটেল এবং পূজা দু’জনের বিরুদ্ধেই তীব্র ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আছড়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অধিকাংশেরই বক্তব্য, পূজা যদি জাতি হিংসায় অভিযুক্ত হয়, তা হলে সেটা সমর্থন করায় সমান অপরাধী এয়ারটেলও। অনেকে ওই টেলিকম সংস্থার সমস্ত পরিষেবা ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দেন। সরব হন বিদ্বজ্জনদের একটা বড় অংশও। তবে এর মধ্যেই পূজা এবং এয়ারটেলের পক্ষেও মত প্রকাশ করেছেন কিছু লোকজন।
ঘটনা নিয়ে সংস্থার মুখ পোড়ার পরে অবশ্য একটি বিবৃতি জারি করে ড্যামেজ কন্ট্রোলের চেষ্টা করে ভারতী এয়ারটেল। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গ্রাহক, কর্মী বা সহযোগী সংস্থা, কারও মধ্যেই এয়ারটেল জাতি-ধর্মের ভিত্তিতে ভেদাভেদ করে না। কোনও গ্রাহক অভিযোগ জানালে সেই সময় যে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে যে কর্মী ফাঁকা থাকেন তাঁকেই পাঠানো হয়। এই ঘটনাকে এ ভাবে ধর্মীয় রং চড়ানো উচিত নয়।
ফেসবুক-টুইটারে এত কাণ্ডের পরও অবশ্য নিজের অবস্থান থেকে সরেননি। এর পরও টুইটারে তিনি লিখেছেন, ‘‘আগের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমি শুধু হিন্দু প্রতিনিধি পাঠাতে বলেছিলাম। তার জন্য যে ভাবে আমাকে অপদস্থ করা হচ্ছে, তা কল্পনাতীত। এর থেকেই বোঝা যাচ্ছে, আমি ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছিলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy