রাজনৈতিক নেতা এবং তাঁর পুত্রকে ফাঁসাতে গণধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছিলেন তরুণী। আদ্যোপান্ত গল্প সাজিয়েছিলেন। এমনকি, অস্ত্রোপচার করে নিজের শরীরে একটি গুলি ভরে নিয়েছিলেন, যাতে তদন্তকারীরা বিশ্বাস করেন, নির্যাতনের পর তাঁকে গুলি করে খুনের চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। অভিযোগ দায়েরের ১০ দিনের মাথায় ধরা পড়ে গেলেন তরুণী। সত্যিটা প্রকাশ্যে চলে এল।
উত্তরপ্রদেশের বরেলীর ঘটনা। গত ৩০ মার্চ সেখানে গণধর্ষণের অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। পুলিশকে তরুণী জানিয়েছিলেন, তাঁকে অপহরণ করে নিরিবিলিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে অনেকে মিলে তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। এই ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা, তাঁর পুত্র এবং তাঁদের সহযোগীদের দিকে আঙুল তুলেছিলেন অভিযোগকারী।
আরও পড়ুন:
তরুণীর অভিযোগের উপর ভিত্তি করে এফআইআর করেছিল পুলিশ। নেতা, তাঁর পুত্র এবং বাকিদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ, খুনের চেষ্টা, অপহরণ, ডাকাতি-সহ ভারতীয় ন্যায় সংহিতার বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছিল। কিন্তু তদন্তে নেমে সন্দেহ হয় পুলিশের। তরুণীর দেহে গুলি পাওয়া গেলেও সেই ক্ষতে যে বারুদ থাকা উচিত ছিল, তার কোনও চিহ্ন পাওয়া যায়নি। এর পরেই তরুণীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জেরার মুখে মিথ্যা মামলার কথা তিনি স্বীকার করে নেন।
বরেলীর এএসপি মানুস পারেখ জানিয়েছেন, শরীরে গুলি ভরার জন্য প্রথমে তরুণী সরকারি হাসপাতালের এক ডাক্তারের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। কিন্তু তিনি এই কাজ করতে চাননি। এর পর গ্রামের হাতুড়ে ডাক্তারের সাহায্য নেন তরুণী। তিনিই গুলি ভরে অস্ত্রোপচার করে দিয়েছিলেন। গুলিবিদ্ধ কোনও ব্যক্তি যদি আদালতে বয়ান দেন, তবে বিচারকও তা নাকচ করতে পারেন না। সেই সুযোগই নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন তরুণী। কিন্তু উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবে তাঁর কীর্তি ফাঁস হয়ে গিয়েছে। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ থেকেও এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা গিয়েছে বলে জানিয়েছেন এএসপি।
তরুণীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই কাজে তাঁকে সহযোগিতা করেছেন, এমন দু’জনকেও হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, এই প্রথম নয়। নেতা এবং তাঁর পুত্রকে ফাঁসাতে ২০২২ সালেও এক বার ধর্ষণের ভুয়ো অভিযোগ করেছিলেন এই তরুণী। সে বার চলন্ত গাড়িতে ধর্ষণের গল্প সাজিয়েছিলেন তিনি। পরে ধরা পড়ে যান।