Advertisement
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪
Vijay Kumar Singh

কমছে আয়, কলকাতা বাদে দেশের অন্য ২৫টি বিমানবন্দর যাচ্ছে বেসরকারি হাতে

২০২০ সালে আমদাবাদ, লখনউ, মেঙ্গালুরু এবং ২০২১ সালে জয়পুর, গুয়াহাটি ও তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দর চলে গিয়েছে বেসরকারি হাতে।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২২ ০৬:১৩
Share: Save:

সারা দেশেই বিমানবন্দর থেকে সরকারের আয় কমে চলেছে। এই অবস্থায় আগামী তিন বছরের মধ্যে দেশের আরও ২৫টি বিমানবন্দরকে তুলে দেওয়া হবে বেসরকারি হাতে। সোমবার রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ জহর সরকারের একটি প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান বিমান প্রতিমন্ত্রী ভিকে সিংহ। তবে ওই ২৫ বিমানবন্দরের তালিকায় কলকাতার নাম নেই বলেও স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি।

বিমানবন্দরের বেসরকারিকরণ শুরুটা হয়েছিল দিল্লি ও মুম্বই দিয়ে। সেটা ২০০৬ সাল। সে-বারেই ঠিক হয়, দিল্লি-মুম্বইয়ের সঙ্গে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হবে কলকাতা আর চেন্নাই বিমানবন্দরকেও। কিন্তু তখন বিমানবন্দরের কর্মীদের প্রবল প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয় কেন্দ্রকে। মূলত বাম সমর্থিত কর্মীদের আন্দোলনে তিন দিন কলকাতা বিমানবন্দরে উড়ান ওঠানামা বন্ধ ছিল। পিছিয়ে যেতে বাধ্য হয় কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরে বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ বিমানবন্দর বেসরকারি হাতে চলে গেলেও কলকাতা ও চেন্নাই রয়ে গিয়েছে কেন্দ্রের অধীনে।

২০২০ সালে আমদাবাদ, লখনউ, মেঙ্গালুরু এবং ২০২১ সালে জয়পুর, গুয়াহাটি ও তিরুঅনন্তপুরম বিমানবন্দর চলে গিয়েছে বেসরকারি হাতে। কলকাতা বিমানবন্দরের বেসরকারিকরণ নিয়ে আলোচনা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। আপত্তি জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, শেষের এই ছ’টি বিমানবন্দর পরিচালনার ভার বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে ১৮৮৮ কোটি টাকা এসেছে সরকারের হাতে। তা ছাড়াও ওই ছয় বিমানবন্দরে যাত্রীদের কাছ থেকে তোলা ফি থেকে গত জানুয়ারি পর্যন্ত কেন্দ্রকে দেওয়া হয়েছে আরও ৩৩১ কোটি টাকা।

জহরবাবুর প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, যে-সব বিমানবন্দরের পরিচালনার ভার ২০২৫ সালের মধ্যে একই ভাবে বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে পটনা, অমৃতসর, রায়পুর, নাগপুর, রাঁচী, ইম্ফল, আগরতলা ইত্যাদি। এবং সেই তালিকায় রয়েছে চেন্নাই বিমানবন্দরও, ১৬ বছর আগে যেখানকার কর্মীরা বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিলেন।

সারা দেশে বিমানবন্দর কর্মীদের প্রধান সংগঠন এয়ারপোর্ট অথরিটি এমপ্লয়িজ় ইউনিয়নের সর্বভারতীয় অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ঘোষ বলেন, ‘‘বাম শাসনে আমরা আন্দোলনে সমর্থন পেয়েছিলাম। এখন তৃণমূল সরকারও চায় না, কলকাতা বিমানবন্দর বেসরকারি হাতে যাক। এই সমর্থনটা আমাদের কাছে খুব বড় শক্তি। অন্য রাজ্যে যদি এই সমর্থন না-মেলে, সেখানে বেসরকারিকরণ আটকানো মুশকিল। কেন্দ্রের এই বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত আমরা মানি না। অন্য শহরেও করতে গেলে প্রতিবাদ তো হবেই।’’

কেন্দ্রের যুক্তি, গত দু’বছরে দেশের বিমানবন্দর থেকে আয় অনেকটাই কমেছে। এই অবস্থায় সেগুলি ধীরে ধীরে বেসরকারি হাতে সঁপে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। উদাহরণ দিয়ে প্রতিমন্ত্রী সিংহ রাজ্যসভায় জানান, ২০১৮-১৯ সালে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে ১৬৬৯ কোটি টাকা আয় হয়েছিল। ২১-২২ সালে সেখানে আয়ের পরিমাণ প্রায় ৭০৩ কোটি। চেন্নাইয়ের আয় ১০৬৮ কোটি থেকে কমে হয়েছে ৩৭৩ কোটি। কর্মীদের বক্তব্য, গত দু’বছরে করোনার প্রকোপে উড়ান চলাচলে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তারই প্রতিফলন ঘটছে আয়ের হিসেবে। করোনা প্রশমিত হওয়ায় আগামী দিনে বিমানবন্দর থেকে আয় আবার বাড়বে নিশ্চয়ই।

অন্য বিষয়গুলি:

Vijay Kumar Singh airport Netaji Subhas Chandra Bose International Airport
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy