জমি বিল নিয়ে ফের অধ্যাদেশ আনা হবে কি না, তা জানতে ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে বললেন অরুণ জেটলি। রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতায় ১৩টি ক্ষেত্রে পুনর্বাসন-নীতি বদলাতে কেবল সরকারি নির্দেশ জারি করেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কিন্তু তা নিয়েও সরকারের বিরোধিতায় নেমেছে কংগ্রেস। তাদের দাবি, সরকার সংসদকে এড়িয়ে ১৩টি ক্ষেত্রে জমি আইন সংশোধন করতে চাইছে। কেবল মাত্র সরকারি নির্দেশের মাধ্যমে জাতীয় সড়ক, রেল-সহ ১৩টি ক্ষেত্রে পুনর্বাসনের নিয়ম বদল করা হয়েছে। কংগ্রেসের মতে, এই পদক্ষেপ সংবিধান বিরোধী। তা ছাড়া জমি বিল নিয়ে সরকারের ‘মিথ্যে বয়ান’ ফাঁস করে দিতেও চাইছে প্রধান বিরোধী দল।
কী ভাবে? দু’বছর আগে ইউপিএ জমানায় পাশ হওয়া জমি আইনেই বলা ছিল,- রেল, জাতীয় সড়ক, বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণ-সহ ১৩টি ক্ষেত্রের জন্য পৃথক জমি আইন রয়েছে। কিন্তু সেই সব ক্ষেত্রেও ২০১৫ সালের ১ জানুয়ারি
থেকে নতুন জমি আইন অনুযায়ীই পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণের শর্ত প্রযোজ্য হবে। ওই ১৩টি ক্ষেত্রে বর্ধিত হারে পুনর্বাসনের শর্ত চালু করতে হবে বলেই অধ্যাদেশ জারি করতে হয়েছে বলে ডিসেম্বর মাসে জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি। সেই সুযোগে অবশ্য মূল জমি আইনেও অনেক সংশোধনের প্রস্তাব দেয় কেন্দ্র।
কেন্দ্রের সেই বক্তব্যের তখনই বিরোধিতা করেছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘সরকার মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। ১৩টি ক্ষেত্রে পুনর্বাসনের শর্ত বদলের জন্য কেবল একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করাই যথেষ্ট ছিল। আসলে সরকার ওই ১৩টি আইন সংশোধনের আড়ালে মূল জমি আইনে কৃষক স্বার্থ বিরোধী সংশোধন করল।’’ আইন মন্ত্রকের তরফে পাল্টা বলা হয়েছিল, জয়রামের যুক্তি ভুল। ১৩টি আইনে সংশোধনও সংসদের মাধ্যমেই করতে হবে। যেহেতু এখন সংসদ চলছে না, তাই অধ্যাদেশ জারি করা হল।
রাজনৈতিক বিরোধিতায় মূল জমি আইন সংশোধনের মুখ্য সব প্রস্তাব থেকেই মোদী সরকার এখন পিছিয়ে এসেছে। আর সেই কারণে জমি অধ্যাদেশ তিন বার জারি করেও সংসদে পাশ না হওয়ায় সেটি চুপচাপ বাতিল হতেও দিয়েছে কেন্দ্র। শুধু ওই ১৩টি ক্ষেত্রে বর্ধিত হারে পুনর্বাসন নীতি প্রয়োগ করার জন্য কাল সরকারি আদেশ জারি করা হয়েছে।
আর এখানেই সরকারকে চেপে ধরেছেন জয়রাম রমেশরা। প্রাক্তন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকই বলেছিল ওই ১৩টি ক্ষেত্রের জন্যও সংসদে যেতে হবে। কিন্তু তা হলে সংসদ এড়ালো কেন সরকার?’’
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, এই প্রশ্ন যে উঠবে তা অরুণ জেটলিরাও জানতেন। কিন্তু এই ১৩টি আইন সংশোধনের জন্য কৌশলেই নতুন করে অধ্যাদেশ আর জারি করতে চাননি তাঁরা। কারণ, বিজেপি জানে মানুষ আইনের খুঁটিনাটি বুঝবে না। ফের জমি অধ্যাদেশ জারি হয়েছে এই খবর চাউর হলেই বিহার ভোটে রাজনৈতিক ক্ষতি হতে পারে। জেটলি ৪৮ ঘণ্টা অপেক্ষা করার কথা বললেও অধ্যাদেশ জারির সম্ভাবনা বিশেষ নেই বলেই দাবি বিজেপির একাংশের। কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর কথায়, ‘‘অধ্যাদেশ জারি করার প্রয়োজনীয়তা কমে গিয়েছে। আমরা এ বার রাজ্যগুলিকে নিজেদের জমি আইন তৈরি করতে বলব। কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলিও নিজেদের জমি আইন তৈরি করবে বলেই আমাদের আশা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy