প্রধানমন্ত্রী পদের দায়িত্ব নিয়ে ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযান শুরু করেছেন নরেন্দ্র মোদী। কিন্তু কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি) রিপোর্ট বলছে, মোদী দীর্ঘদিন যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, সেই গুজরাতের পরিস্থিতিই চূড়ান্ত অপরিচ্ছন্ন। স্বভাবতই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে কংগ্রেস।
সিএজি রিপোর্ট অনুযায়ী, এ ধরনের প্রকল্পের জন্য কেন্দ্রে তৎকালীন ইউপিএ সরকারের বরাদ্দ করা টাকার সিংহভাগই মোদীর রাজ্য সরকার খরচ করতে পারেনি। উপরন্তু প্রাথমিক স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শৌচাগার নির্মাণ-সহ বিভিন্ন সাফল্যের পরিসংখ্যান এতটাই বাড়িয়ে-চড়িয়ে দেখানো হয়েছে, বাস্তবের সঙ্গে যার কোনও মিল নেই।
গত পাঁচ বছর ধরে (২০০৮ থেকে ২০১৩) গুজরাতের বিভিন্ন পুরসভা ও জেলা পরিষদের কাজকর্ম খতিয়ে দেখে সম্প্রতি এই রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিএজি। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, পরিচ্ছন্নতা প্রকল্পের আওতায় ওই পাঁচ বছরে গুজরাত সরকারকে কেন্দ্র ৭০২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছিল। কিন্তু গুজরাতের মোদী সরকার মাত্র ২৭৮ কোটি টাকা খরচ করতে পেরেছে। এ ছাড়া ‘নির্মল গ্রাম’ পুরস্কারের আওতায় গুজরাতের কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতকে কেন্দ্র তিন বছর আগে প্রায় ৭ কোটি টাকা দিয়েছিল। সেই টাকাও পঞ্চায়েতগুলির হাতে এখনও তুলে দেয়নি রাজ্য সরকার। সিএজি রিপোর্ট বলছে, গুজরাতের ৫০৯৬টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের অধিকাংশেই কোনও শৌচাগার নেই। গুজরাত সরকারের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সিএজি-র টিম ৩০০টি স্কুলে যৌথ ভাবে সমীক্ষা চালিয়ে মাত্র ২৬টি স্কুলে শৌচাগার পেয়েছে। অথচ সরকারের খাতায় লেখা হয়েছে, সব স্কুলে শৌচাগার রয়েছে। তা ছাড়া বহু স্কুলে শৌচাগার থাকলেও ছাত্রছাত্রীরাই জানিয়েছে সেগুলি ব্যবহারযোগ্য নয়।
কেন্দ্রে মনমোহন জমানায় টু-জি স্পেকট্রাম বণ্টনে অনিয়ম নিয়ে সিএজি-র রিপোর্টকে এক সময় হাতিয়ার করেছিল বিজেপি। এখন গুজরাতে মোদী সরকারের কাজকর্ম নিয়ে কংগ্রেস সেই সিএজি রিপোর্টকেই অস্ত্র করল। গুজরাত বিধানসভার বিরোধী দলনেতা কংগ্রেস মুখপাত্র শক্তিসিন গোহিল বলেন, “নরেন্দ্র মোদীর বড় বড় ভাষণবাজির পুরোটাই যে ভাঁওতা, তা কংগ্রেস গোড়া থেকেই বলছে। সিএজি-র এই রিপোর্ট তার আরও একটা প্রমাণ।” গোহিল বলেন, দেশ জুড়ে মোদী যে পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করেছেন, তা গিমিক মাত্র। সরকার যে ব্যর্থ, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে অপারগ, তা ঢেকে রাখতেই এত ঢাকঢোল বাজিয়ে প্রচার।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে বিজেপি মুখপাত্র শাহনওয়াজ হুসেন বলেন, “সিএজি রিপোর্ট বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিতে আলোচনা হবে। সেখানেই গুজরাত সরকার তার বক্তব্য বলবে।”
যদিও সিএজি-র এই রিপোর্ট নিয়ে গুজরাত সরকার একেবারেই নীরব। কিন্তু কংগ্রেস মুখপাত্র শক্তিসিন আজ বলেন, “সরকার বেশি দিন চুপ করে থাকতে পারবে না। বিধানসভায় কংগ্রেস এ নিয়ে সরকারের কৈফিয়ত চাইবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy