Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Samosa Controversy in Himachal

মুখ্যমন্ত্রীর শিঙাড়া ‘চুরি’! সিআইডি তদন্তের নির্দেশ, ‘বিচিত্র’ বিতর্কে জমজমাট হিমাচলের রাজনীতি

ঘটনার সূত্রপাত গত ২১ অক্টোবর। হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু গিয়েছিলেন সিআইডির সদর দফতরে। সেখানে সাইবার শাখার উদ্বোধন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য জলখাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

হিমাচলে শিঙাড়া বিতর্ক! (ইনসেটে বাঁ দিকে) হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

হিমাচলে শিঙাড়া বিতর্ক! (ইনসেটে বাঁ দিকে) হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪ ১১:৫৮
Share: Save:

হিমাচল প্রদেশের শিঙাড়া বিতর্কে সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হল। শিঙাড়া কোথায় গেল, কী ভাবেই বা নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছল না, তা নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত। আর সেই জল এত দূর গড়িয়েছে যে, শেষমেশ রাজ্য সরকার সিআইডি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। শুধু তা-ই নয়, এই ঘটনাকে ‘সরকার-বিরোধী’ বলেও দাবি করা হয়েছে। ফলে হিমাচলের রাজনীতি এখন ‘শিঙাড়াময়’ হয়ে উঠেছে।

ঘটনার সূত্রপাত গত ২১ অক্টোবর। হিমাচলের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু গিয়েছিলেন সিআইডির সদর দফতরে। সেখানে সাইবার শাখার উদ্বোধন করেন। মুখ্যমন্ত্রীর জন্য কিছু জলখাবারের ব্যবস্থাও করা হয়। তাই তাঁর জন্য শিঙাড়া এবং কেকের আয়োজন করা হয়েছিল। একটি বিলাসবহুল হোটেল থেকে সেই জলখাবার আনানোর ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সেই জলখাবার মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তো পৌঁছয়ইনি, বরং তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের মধ্যে সেই জলখাবার ভাগ করে দেওয়া হয়। কী ভাবে এই ভুল হল? কোথায় গাফিলতি ছিল? মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আনা শিঙাড়া আর কেক কেনই বা প্রোটোকল মেনে তাঁর হাতে পৌঁছল না— এ সব নানাবিধ প্রশ্ন উঠতেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়।

সিআইডি দফতরের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আনানো জলখাবার কী ভাবে তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের হাতে পৌঁছে গেল, সেই তদন্তের দায় বর্তেছে সিআইডিরই উপর। ফলে উপরমহল থেকে নির্দেশ আসতেই তদন্ত শুরু করে সিআইডি। ডেপুটি পুলিশ সুপার পদমর্যাদার এক আধিকারিককে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাঁর দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সমন্বয়ের অভাবেই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে।

রিপোর্টে এটাও বলা হয়েছে যে, আইজি পদমর্যাদার এক পুলিশ আধিকারিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক সাব ইনস্পেক্টরকে (এসআই) সেই জলখাবার আনার নির্দেশ দেন। এসআই আবার অ্যাসিসট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টরকে (এএসআই) সেই নির্দেশ দেন। সেই এএসআই এবং এক হেড কনস্টেবল লক্কড় বাজারের ওই বিলাসবহুল হোটেল থেকে তিন বাক্স জলখাবার নিয়ে আসেন। তার পর এসআইকে বিষয়টি জানান। সেই পুলিশ আধিকারিকরা তার পর পর্যটন দফতরের কর্মীদের কাছে জানতে চান, এই তিন বাক্স জলখাবার কি মুখ্যমন্ত্রীর জন্য? তখন তাঁরা জানিয়ে দেন, এ বিষয়ে কিছু জানেন না। রিপোর্টে বলা হয়েছে, এসএআই কোনও শীর্ষ আধিকারিককে না জিজ্ঞাসা করেই পরিবহণ দফতরে সেই খাবার পাঠিয়ে দেন। ওই দফতরই এই বিষয়টি মূলত দেখাশোনা করে। কিন্তু সেখান থেকে সেই জলখাবার চলে যায় মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের কাছে। ফলে এক হাত থেকে অন্য হাতে ঘুরে বেড়ায় সেই জলখাবার। আর এই বিষয়টি নিয়েই বিতর্ক শুরু হয়েছে। কী ভাবে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আনানো জলখাবার তাঁর কাছে পৌঁছলই না, বরং তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীদের হাতে পৌঁছল? সমন্বয়ের অভাবকে রিপোর্টে উল্লেখ করার পাশাপাশি সিআইডি এই ঘটনাকে ‘সরকার-বিরোধী’ বলেও উল্লেখ করেছে।

সুখুর শিঙাড়া খেল কে? এই ঘটনা নিয়েও রাজনৈতিক রসিকতার পাশাপাশি কটাক্ষও শুরু হয়েছে গিয়েছে হিমাচলে। মুখ্যমন্ত্রী সুখুর ‘অপূর্ণ রসনাতৃপ্তি’ নিয়ে কটাক্ষ করে বিজেপি বলেছে, এই সরকার রাজ্যের উন্নয়নের কথা না ভেবে শিঙাড়ায় মজে রয়েছে। রাজ্যের বিজেপি বিধায়ক এবং দলের মিডিয়া সেলের প্রধান রণধীর শর্মার টিপ্পনী, ‘‘হিমাচলের মানুষ সমস্যায় জর্জরিত, আর সরকার শিঙাড়ার খোঁজে তদন্ত করছে!’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE