আবার বিতর্কে জড়ালেন তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল আরএন রবি। মাদুরাইয়ের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি। সেখানেই বক্তৃতা করতে গিয়ে রবি আচমকাই পড়ুয়াদের ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বলেন! ‘কম্বা রামায়ণ’-এর রচয়িতাকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়েই তিনি এই আহ্বান করেন। এই ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। রাজ্যের শাসকদল ডিএমকে থেকে কংগ্রেস একযোগে তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিয়োতে তামিলনাড়ুর রাজ্যপালকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘আসুন, আমরা আজকে শ্রী রামের এক জন মহান ভক্তকে শ্রদ্ধা জানাই। আমিও বলব, তোমরাও সকলে জয় শ্রীরাম বলো!’’ তিনি যখন এই বক্তৃতা করছেন, তখন সভাঘর ঠাসা পড়ুয়াদের ভিড়ে। অনেকের প্রশ্ন, পড়ুয়াদের অনুষ্ঠানে গিয়ে তিনি কেন এমন ভাবে সকলকে জয় শ্রীরাম বলার জন্য আহ্বান করলেন? সাংবিধানিক পদে থেকে রবির এই ধরনের মন্তব্যকে সমালোচনা করেছেন অনেকে।
তামিলনাড়ুর ক্ষমতাসীন ডিএমকে ভাল ভাবে নেয়নি রাজ্যপালের এমন আচরণ। তাঁকে ‘আরএসএসের মুখপাত্র’ বলেও অভিহিত করেছে তারা। ডিএমকের মুখপাত্র ধরণীধরনের মতে, ‘‘এটা দেশের ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধের পরিপন্থী।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘রাজ্যপাল কেন বারবার সংবিধান লঙ্ঘন করতে চান? তিনি কেন এখনও পদত্যাগ করলেন না? উনি এক জন আরএসএসের মুখপাত্র। আমরা জানি কী ভাবে সুপ্রিম কোর্ট তাঁকে তাঁর অবস্থান দেখিয়ে দিয়েছে।’’
কংগ্রেসও সমালোচনা করেছে রবির। কংগ্রেস বিধায়ক আসান মৌলানার বক্তব্য, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল এক জন ধর্মীয় নেতার মতো কথা বলছেন। ধর্মীয় মতাদর্শ প্রচার করার চেষ্টা করছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তিনি (আরএন রবি) রাজ্যের সর্বোচ্চ পদে রয়েছেন। কিন্তু ওই পদে থেকে তিনি এক জন ধর্মীয় নেতার মতো কথা বলছেন, যা সমস্যা তৈরি করতে পারে। ভারতে বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন ভাষা এবং বিভিন্ন সম্প্রদায় রয়েছে। সেখানে রাজ্যপালের এই ধরনের আচরণ বৈষম্যকে উৎসাহিত করে।’’ কংগ্রেসের অভিযোগ, তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল বিজেপি এবং আরএসএসের প্রচারক হয়ে কাজ করছেন।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খান রবি। তাঁর ভূমিকা এবং কার্যকলাপের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ু সরকারের করা মামলার শুনানিতে গত মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানায়, রাজ্য বিধানসভায় পাশ হওয়া বিল ঝুলিয়ে রাখা বৈধ কাজ নয়। তামিলনাড়ু সরকারের পাশ করানো ১০টি বিলে রাজ্যপাল সম্মতি না-দেওয়ায় সেগুলি দিনের আলো দেখেনি। তার পর এমকে স্ট্যালিনের সরকার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং বিচারপতি আর মহাদেবনের বেঞ্চ জানায়, বিলের কোনও আইনি বিষয়ে আপত্তি থাকলে তা পুনর্বিবেচনার জন্য ফেরত পাঠাতে পারেন রাজ্যপাল। তবে বিলটি পুরনো আকারেই আবার বিধানসভায় পাশ করানো হলে, তাতে রাজ্যপাল সম্মতি দিতে বাধ্য।