নির্বাচন কমিশনের দফতর থেকে বেরিয়ে ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিরা। ছবি: এক্স।
ভোটের ময়দান সমান এবং সমতল রাখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তাই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির পর সেই কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করলেন বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধিরা। বৈঠকের পর বেরিয়ে তাঁরা জানালেন, এই ঘটনায় কমিশনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তাঁরা। কারণ, ভোটের আগে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করে আসলে বিরোধীদের কোণঠাসা করতে চাইছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকার।
শুক্রবার কেজরীর গ্রেফতারি এবং বিরোধীদের হেনস্থা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনে যায় ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিনিধি দল। বাংলার শাসকদল তৃণমূলের দু’জন প্রতিনিধিও ছিলেন সেই দলে। বৈঠকের পর বেরিয়ে কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘‘এখানে প্রায় সব ক’টি বিরোধী দলের প্রতিনিধি রয়েছেন। গত রাতে যা হয়েছে (কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি), তা নিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। এটি কোনও ব্যক্তি বা দলের বিষয় নয়, সংবিধানের সাধারণ কাঠামোর বিষয়। নির্বাচনের জন্য সমান, সমতল মাঠ প্রয়োজন। কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দল এজেন্সির অপব্যবহার করে সেই সমতল মাঠটির ক্ষতি করছে। এতে অবাধ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন, সর্বোপরি গণতন্ত্রের উপর প্রভাব পড়ছে।’’
সিঙ্ঘভি আরও বলেন, ‘‘ভোটের আগে মাঠ সমতল করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিশনকে। তাই এই ব্যাপারে আমরা কমিশনের হস্তক্ষেপ চেয়েছি। স্বাধীন ভারতের ৭৫ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও জনগণ-নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে পদে থাকাকালীন গ্রেফতার করা হল। সংসদে সবচেয়ে বড় বিরোধী দলের অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ় করে দেওয়া হয়েছে। বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে কী ভাবে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে, আমরা তার প্রমাণও দিয়েছি কমিশনকে।’’
উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে আবগারি ‘দুর্নীতি’ মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে ইডি। ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এর আগে তাঁকে আট বার সমন পাঠানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার ছিল নবম সমনের দিন। কিন্তু কেন্দ্রীয় সংস্থার কাছে হাজিরা না দিয়ে কেজরী পৌঁছে গিয়েছিলেন দিল্লি হাই কোর্টে। সেখানে রক্ষাকবচের আবেদন জানিয়েছিলেন। তা খারিজ হওয়ার পর রাতেই কেজরীর বাড়িতে পৌঁছে যায় ইডি। ঘণ্টা দুয়েক তল্লাশির পর কেজরীকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁর দল আম আদমি পার্টি (আপ) জানিয়ে দিয়েছে, কেজরী পদত্যাগ করছেন না। দেশের ইতিহাসে তিনিই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হলেন।
কেজরীর গ্রেফতারির পর থেকেই বিরোধী দলগুলি একে একে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছিল। শুক্রবার সকালে এক্স (সাবেক টুইটার) হ্যান্ডলে পোস্ট করেন মমতাও। কেজরীর গ্রেফতারির নিন্দা করে তিনি মোদী সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। ওই পোস্টেই মমতা দাবি করেন, আদর্শ আচরণবিধি চলাকালীন বিরোধী দলের মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করিয়ে জনমানসে প্রভাব ফেলতে চাইছে বিজেপি। তাই ‘ইন্ডিয়া’ কমিশনের দ্বারস্থ হবে। তৃণমূলের তরফে জোটের প্রতিনিধি দলে ডেরেক ও’ব্রায়েন এবং নাদিমুল হককে পাঠানোর কথাও জানিয়েছিলেন দলনেত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy