পোস্টমাস্টার এস ক্রিসথুরাজা ছবি সৌজন্য টুইটার
এক অন্য রানারের গল্প। প্রতি মাসের প্রথম রবিবার তামিলনাড়ুর কালাক্কাদ মুণ্ডানথুরাই টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টের মধ্যে দিয়ে পাহাড় চড়তে হয় ৫৫ বছরের পোস্টমাস্টার এস ক্রিসথুরাজাকে। পাঁচ মাস আগে ১১০ বছরের এক বৃদ্ধাকে দেওয়া প্রশাসনের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই প্রতি মাসে এই পরিশ্রম। কিন্তু কী এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল সেই বৃদ্ধাকে, যার জন্য প্রতি মাসে পাহাড় চড়তে হচ্ছে ক্রিসথুরাজাকে।
পাহাড়ের উপরে ইঞ্জিকুঝি নামের এক আদিবাসী জনগোষ্ঠী বাস করে। সেখানেই থাকেন কুট্টিয়াম্মাল নামের এক বৃদ্ধা। পাঁচ মাস আগে তাঁকে স্থানীয় জেলাশাসক ভি বিষ্ণু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তাঁর বার্ধক্য ভাতার হাজার টাকা প্রতি মাসে তাঁর বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হবে। পাপানাসাম আপার ড্যাম ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস থেকে সেই ভাতা পান বৃদ্ধা। সেই পোস্ট অফিসেরই পোস্টমাস্টার ক্রিসথুরাজা। তিনি ছাড়া ওই পোস্ট অফিসে আর কোনও কর্মচারীও নেই। তাই তাঁকেই গিয়ে ভাতার টাকা দিয়ে আসতে হয়।
নিজের যাত্রার বিবরণও দিয়েছেন ক্রিসথুরাজা। তিনি বলেন, “প্রথমে আমাকে চার কিলোমিটার নৌকো করে যেতে হয়। তার পরে ১০ কিলোমিটার পাহাড় চড়া। কিন্তু অনেক সময় ড্যামের জল এতটাই কম থাকে যে নৌকা চড়ে যাওয়া যায় না। তখন ২৫ কিলোমিটার পাহাড় চড়তে হয়।” সারা দিন চলে যায় এই যাত্রায়। ক্রিসথুরাজা আরও বলেন, “আমি সে জন্যই রবিবার যাই। সকাল ৭টা নাগাদ বেরোই। দুপুরের স্নান, খাওয়া জঙ্গলেই হয়ে যায়। তার পরে দুপুরে কুট্টিয়াম্মালের বাড়ি পৌঁছই। ওঁকে টাকা দিয়ে ফিরে আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়।”
পোস্টমাস্টারের এই দায়িত্বজ্ঞান দেখে অবশ্য অভিভূত প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রতি মাসে যে ভাবে তিনি বৃদ্ধাকে ভাতার টাকা দিয়ে আসেন, তাকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন সবাই। প্রশাসনের তরফেই ক্রিসথুরাজার এই কাজের প্রশংসা করা হয়েছে। যদিও সে সব নিয়ে ভাবতে রাজি নন তিনি। ক্রিসথুরাজা বলেন, “আমি আমার কাজ করছি। বৃদ্ধার জায়গায় অন্য কেউ হলেও সেই একই পরিশ্রম করতাম।”
রানার চলেছে রানার…।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy