চেন্নাইয়ে এক ম্যানেজমেন্ট কলেজের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বেঙ্কাইয়া নায়ডু। পিটিআই
সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে খর্ব করার বিরুদ্ধে সরব হলেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু। সেইসঙ্গে জানালেন, কেবল ভারতমাতার ছবির সামনে মাথা নত করলে বা স্লোগান দিলেই দেশপ্রেমী হওয়া যায় না।
নরেন্দ্র মোদী জমানায় বারবার সরকারের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের অধিকার খর্ব করার অভিযোগ তুলেছেন বিরোধীরা। সেই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন নির্বাচন কমিশন। সেই পরিস্থিতিতে ভোটের ফল প্রকাশের ঠিক আগে উপরাষ্ট্রপতির এই মন্তব্য তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছেন রাজনীতিকেরা।
আজ চেন্নাইয়ের এক ম্যানেজমেন্ট কলেজের সমাবর্তনে বেঙ্কাইয়া বলেন, ‘‘বিচার বিভাগ, ভিজিল্যান্স কমিশন, সিএজি, সংসদ, বিধানসভা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের অধিকার খর্ব করা উচিত নয়। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানে সমস্যা থাকলে তা সমাধানের জন্য অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন। বাইরে থেকে প্রতিষ্ঠানকে আঘাত না করে উপযুক্ত মঞ্চে আলোচনা করে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করতে হবে। এই পরিস্থিতিতে সকলের তা মনে রাখা উচিত।’’
মোদী জমানায় সকলের উপরে নিজেদের জাতীয়তাবাদের ধারণা চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগও উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে। আজ জাতীয়তাবাদ নিয়েও মুখ খুলেছেন বেঙ্কাইয়া। তাঁর কথায়, ‘‘জাতীয়তাবাদ নিয়ে নানা স্তরে আলোচনা চলছে। বন্দে মাতরম বা জয় হিন্দ বললেই জাতীয়তাবাদী হওয়া যায় না। ভারতমাতার ছবির সামনে মাথা নত করলেও দেশপ্রেমের পরিচয় দেওয়া যায় না।’’ তাঁর বক্তব্য, ‘‘জাতীয়তাবাদের অর্থ কন্যাকুমারীতে কোনও ঘটনা ঘটলে কাশ্মীর প্রতিক্রিয়া জানাবে। আবার কাশ্মীরের ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাবে কেরল। জাত, মতবাদ, লিঙ্গ, ধর্ম, অঞ্চল নির্বিশেষে সব নাগরিকের কল্যাণই প্রকৃত দেশভক্তির পরিচয়।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
এই পরিস্থিতিতে উপরাষ্ট্রপতি বিদায়ী সরকার তথা বিজেপিকে কোনও বার্তা দিতে চাইছেন কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু বিজেপি নেতারা জানাচ্ছেন, আজ এনডিএ-র বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবেও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের উপরে হামলা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। বিরোধীরা যে ভাবে নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, সিএজি, পুলিশ, সামরিক বাহিনীকে নিয়ে প্রশ্ন তুলছে তার সমালোচনা করেছে এনডিএ। ফলে উপরাষ্ট্রপতি সরকারের বক্তব্যই তুলে ধরেছেন।
দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে আফজল গুরুর ফাঁসির বিরুদ্ধে অনুষ্ঠান ও তার জেরে গোলমাল নিয়ে উত্তাল হয়েছিল সারা দেশ। আবার বিজেপির গোহত্যা-বিরোধী অবস্থান ও ‘গোরক্ষকদের’ তাণ্ডবের বিরুদ্ধে দেশের নানা প্রান্তে কয়েকটি ক্যাম্পাসে গোমাংস খাওয়ার ‘উৎসব’ ঘিরেও উত্তেজনা ছড়িয়েছিল। বেঙ্কাইয়ার বার্তা, ‘‘কেউ কিছু খেতে চাইলে খেতেই পারেন। কিন্তু তা নিয়ে উৎসব করার কী প্রয়োজন? তাতে কারও ভাবাবেগে আঘাত লাগতে পারে। কয়েকটি জায়গায় চুম্বন প্রতিযোগিতাও হয়েছে। দু’জনে ব্যক্তিগত পরিসরে চুম্বন করতেই পারেন। সে জন্য প্রতিযোগিতার প্রয়োজন কী?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy