—ফাইল চিত্র।
ভিভিআইপি-দের জন্য হেলিকপ্টার কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছিল অটলবিহারী বাজপেয়ীর জমানায়। মনমোহন সিংহ সরকারের আমলে ২০১০-এ অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ডকে ১২টি কপ্টারের বরাত দেওয়া হয়। কিন্তু তিন বছর পরে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় মনমোহন সরকার চুক্তি বাতিল করে দেয়। সিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ড ও তার মালিক সংস্থা ফিনমেকানিকাকেও কালো তালিকাভুক্ত করে কেন্দ্র। চুক্তি বাতিল হলেও যে তিনটি কপ্টার ভারতে এসে গিয়েছিল, তা ফেরত না দিয়ে বাজেয়াপ্ত করা হয়।
পুরোটাই সরকারি তথ্য। সেই তথ্য দেখিয়েই আজ কংগ্রেস অভিযোগ তুলল, মনমোহন সরকারই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল। মোদী জমানাতে সনিয়া বা রাহুল গাঁধী তো দূরের কথা, কংগ্রেসের কোনও নেতার বিরুদ্ধেই কোনও প্রমাণ মেলেনি। প্রাক্তন বায়ুসেনা প্রধান এস পি ত্যাগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এখন লোকসভা ভোটের আগে রাফাল-চুক্তিতে দুর্নীতির জবাব না দিতে পেরেই পুরনো চপার মামলাকে ঢাল করতে চাইছে বিজেপি।
অগুস্তা কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত দালাল ক্রিশ্চিয়ান মিশেলকে দুবাই থেকে দিল্লিতে নিয়ে আসার পরেই বুধবার নরেন্দ্র মোদী গাঁধী পরিবারকে ইঙ্গিত করে বলেছিলেন, গোটা পরিবার ভয়ে কাঁপছে। এই ব্রিটিশ নাগরিক তাঁদের বন্ধুদের ঘুষ দিয়েছিলেন। নাম বার হলে জানি না কোথায় পৌঁছবে!
কংগ্রেসের অভিযোগ, মিশেল দুবাইয়ে আটক হওয়ার পরেই তাঁর আইনজীবী রোজমেরি পাট্রিজি ডোস অ্যাঞ্জোস বলে দিয়েছিলেন, মোদী সরকার মিশেলকে চাপ দিচ্ছে যাতে তিনি সনিয়া গাঁধীর দিকে আঙুল তুলে মিথ্যে বিবৃতিতে সই করেন। বিনিময়ে তাঁকে রেহাই দেওয়ারও প্রস্তাব দেওয়া হয়। এখন প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য থেকেই সরকারের সেই ছক স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়বীর শেরগিল বলেন, ‘‘সাড়ে চার বছরে মোদীজি, তাঁর সিবিআই বা ইডি-র কেউই কংগ্রেস নেতাদের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ পাননি। তাই এখন মরিয়া হয়ে মনগড়া গল্প বলছেন।’’
মনমোহন সরকার অগুস্তা ওয়েস্টল্যান্ডকে কালো তালিকাভুক্ত করেছিল আর মোদী সরকারই তাদের ছাড় দেয় বলেও কংগ্রেসের অভিযোগ। টাটা-র সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে অগুস্তাকে নজরদারি কপ্টার তৈরির ছাড়পত্র দিয়েছে মোদী সরকারই। নৌসেনার বরাত পাওয়ার দৌড়ে নামতেও ছাড়পত্র দিয়েছে। কংগ্রেসের প্রশ্ন, এখন সিবিআই কি বিজেপি-র সঙ্গে অগুস্তার আঁতাঁত, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-তে অগুস্তার যোগদানের তদন্ত করবে?
যুব কংগ্রেসের আইনি বিভাগের প্রধান আলজো কে জোসেফ বুধবার আদালতে মিশেলের আইনজীবী হওয়ায় বিজেপি প্রশ্ন তুলেছিল। আলজোকে পত্রপাঠ দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। কিন্তু তার পরেও বিজেপির অভিযোগ, মিশেলের তিন আইনজীবীই কংগ্রেসের সঙ্গে জড়িত।
কংগ্রেসের পাল্টা প্রশ্ন, অরুণ জেটলির কন্যা ও জামাই তো নীরব মোদীর হয়ে ওকালতি করেছিলেন। জেটলি নিজে শেয়ার কেলেঙ্কারিতে জড়িত কেতন পারেখ, ভোপাল গ্যাস দুর্ঘটনায় ইউনিয়ন কার্বাইডের হয়ে ওকালতি করেছিলেন। আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ চিট ফান্ড কেলেঙ্কারিতে জড়িত সহারা সুব্রত রায়ের আইনজীবী ছিলেন। এখন একজন তরুণ আইনজীবীকে টেনে কংগ্রেসের সঙ্গে যোগসূত্র বার করার চেষ্টা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy