ধৃত রাকেশ ও তাঁর প্রেমিকা।
বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন স্ত্রী। কাঁটা সরাতেই স্ত্রী ও দুই সন্তানকে খুন করে বাড়ির উঠোনেই পুঁতে সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে দিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। শুধু তাই নয়, সমাজ এবং পুলিশের চোখে ধুলো দিতে নিজেকে ‘মৃত’ বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিলেন।
২০১৮ সালের সেই খুনের ঘটনার সম্প্রতি কিনারা করল পুলিশ। অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং তাঁর প্রেমিকাকে গ্রেফতার করেছে তারা। ধৃতের নাম রাকেশ। বয়স ৩৪। উত্তরপ্রদেশের কাসগড়ের বাসিন্দা রাকেশ পেশায় এক জন প্যাথোলজিস্ট।
পুলিশ জানিয়েছে, উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এক কর্মীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে ওঠে রাকেশের। কিন্তু তাঁদের এই সম্পর্কে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছিলেন স্ত্রী। ফলে স্ত্রীকে সরাতে গিয়ে ১৮ মাস এবং তিন বছরের দুই সন্তানকেও খুন করেন রাকেশ, তাঁর প্রেমিকা। দেহ লোপাট করতে বাড়িরই উঠোনে গর্ত খুঁড়ে সেখানে দেহগুলি ফেলে সিমেন্ট দিয়ে বাঁধিয়ে দেন যাতে কারও কোনও রকম সন্দেহ না হয়।
এর পরই শুরু হয় গল্প সাজানোর পালা। খুনের দিন কয়েক বাদেই কাসগঞ্জে নিখোঁজ ডায়েরি করেন রাকেশ। পুলিশের কাছে দাবি করেন, দুই সন্তানকে নিয়ে স্ত্রী তাঁদের অলক্ষেই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। এক দিকে রাকেশ যখন পুলিশে নিখোঁজ ডায়েরি করছেন, অন্য দিকে তাঁর বার আবার নয়ডা থানায় অপহরণ এবং পণের জন্য হেনস্থার অভিযোগে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। এর পরই নয়ডা পুলিশ তদন্তে নামে। কিন্তু কোনও সূত্র খুঁজে পায়নি তারা।
কাসগঞ্জ পুলিশ প্রধান রোহন প্রমোদ বোতরে বলেন, “পুলিশকে বিভ্রান্ত করতে আরও একটি নতুন পরিকল্পনা করেন রাকেশ ও তাঁর প্রেমিকা। রাকেশের মতো হুবহু দেখতে কাসগঞ্জের এক ব্যক্তিকে অপহরণ করেন দু’জনে। তার পর তাঁকে খুন করে,হাত এবং মাথা কেটে তা পুড়িয়ে দেন। এর পর ওই ব্যক্তির গায়ে নিজের জামা জড়িয়ে দেন, পকেটে নিজের আইডি কার্ডটাও ঢুকিয়ে দেন রাকেশ। যাতে পুলিশের মনে হয়, দেহটি রাকেশেরই।”
বোতরে জানান, দেহটি উদ্ধার হওয়ার পর ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। গত মাসেই কাসগঞ্জ পুলিশকে জানানো হয়, দেহটি রাকেশের নয়। এখান থেকেই গল্পের মোড় ঘুরে যায়। তা হলে ওই দেহ কার? রাকেশই বা কোথায়? এই তদন্তে নেমে পুলিশ আসল রাকেশের খোঁজ পায় হরিয়ানায়। সেখানে দিলীপ শর্মা নামে নিজেকে পরিচয় দিয়ে এক সংস্থায় কাজ করছিলেন। নিজেকে উত্তরপ্রদেশের কুশীনগরের বাসিন্দা বলেও পরিচয় দেন সংস্থার মালিকের কাছে।
সন্দেহের বশে রাকেশকে পাকড়াও করে নিয়ে আসে পুলিশ। তাঁকে জেরা করতেই পুরো ঘটনাটা সামনে আসে। পুলিশ জানিয়েছে, রাকেশ প্যাথোলজিস্ট হওয়ার সুবাদে জানতেন প্রমাণ কী ভাবে লোপাট করা যায়। খুব সুচারু ভাবেই তা করেছিলেন। রাকেশকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বাড়িতে যায় পুলিশ। উঠোনের সিমেন্ট বাঁধানো জায়গাটা দেখিয়ে জানান, ওখানেই দেহগুলি আছে। এর পরই জায়গাটা খুঁড়ে হাড়গোড় উদ্ধার করে পুলিশ। বাচ্চার চটি এবং একটি কোদালও উদ্ধার হয় গর্ত থেকে। এর পরই রাকেশ এবং তাঁর পরিবারের তিন সদস্য এবং রাকেশের প্রেমিকাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy