প্রতীকী ছবি।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে থাকা সত্ত্বেও স্বাস্থ্য পরিকাঠামোগত ক্ষেত্রে কেন্দ্রের পাঠানো অর্থের কুড়ি শতাংশ খরচ করতে পারেনি রাজ্যগুলি। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বরাদ্দ অর্থ দ্রুত রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে খরচ করার পরামর্শ দিলেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া।
দেশে ওমিক্রন আক্রান্তের সংখ্যা ফি দিন লাফ দিয়ে বাড়ছে। একাধিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, যে ভাবে গত তিন-চার দিনে সংক্রমিতে সংখ্যা আবার বাড়তে শুরু করেছে, তা থেকে একটি বিষয় স্পষ্ট যে দেশে করোনার তৃতীয় ঢেউ কার্যত আছড়ে পড়েছে। একাধিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের মতে, ওমিক্রনের কারণে দ্বিতীয় ঢেউয়ের চেয়ে অনেকে বেশি গুরুতর আকার নেবে এই সংক্রমণ। ইতিমধ্যেই তার নমুনা পেতে শুরু করেছে গোটা দেশ। এই আবহে আজ রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠকে বসে করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার প্রশ্নে পরিকাঠামো সংক্রান্ত আলোচনা করেন মাণ্ডবিয়া। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের মূল অভিযোগ হল, কোভিডের আপৎকালীন তহবিল খাতে পাঠানো কেন্দ্রীয় বরাদ্দ খরচ করতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্যগুলি। কেন্দ্রের মূল অভিযোগ, দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে রাজ্যের পরিকাঠামোগত দুর্বলতা সামনে আসায় সেগুলি মেরামতিতে অর্থ মঞ্জুর করার সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। মূলত অক্সিজেন প্ল্যান্ট নির্মাণ, অক্সিজেনযুক্ত শয্যা, সাধারণ শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধি, বিচ্ছিন্নবাস তৈরি রাখা, অ্যাম্বুলেন্স কেনা, কোভিড ব্লক তৈরির মতো খাতে সেই অর্থ ব্যবহার করার কথা ছিল। কিন্তু তৃতীয় ঢেউয়ের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে দেখা যাচ্ছে, কেন্দ্রের জরুরি ভিত্তিতে পাঠানো অর্থের মাত্র ১৭ শতাংশ খরচ করতে সক্ষম হয়েছে রাজ্যগুলি। সূত্রের মতে, ওই পরিসংখ্যান তুলে ধরে রাজ্যগুলির মনোভাব নিয়ে আজ প্রশ্ন তোলেন মনসুখ। তিনি রাজ্যগুলিকে দ্রুত আপৎকালীন খাতে বরাদ্দ করা অর্থ ব্যবহারের উপরে জোর দেন। যে হেতু ওমিক্রন সংক্রমিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই কম, তাই রাজ্যগুলিকে এ বার বেশি করে বিচ্ছিন্নবাস নির্মাণে জোর দেওয়ার সুপারিশ করেছে কেন্দ্র।
আগামী দিনে বিশ্বের অন্য দেশগুলির মতোই ভারতেও যে ওমিক্রনের কারণে সংক্রমণের ঢেউ আসতে পারে, সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন খোদ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাণ্ডবিয়া। তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে অতীতের ঢেউগুলিতে যে সংখ্যায় সংক্রমণ হয়েছিল, তার চেয়ে তিন-চার গুণ বেশি সংক্রমণ দেখা গিয়েছে ওমিক্রনের ক্ষেত্রে। সংক্রমণের প্রশ্নে এই প্রজাতি অতীব শক্তিশালী হওয়ায় এক ধাক্কায় অনেক ব্যক্তির এক সঙ্গে আক্রান্ত হওয়া চিকিৎসা ব্যবস্থায় সমস্যা তৈরি করতে সক্ষম। তাই রাজ্যগুলিকে আগামী দিনে দ্বিতীয় ঢেউয়ের চেয়ে অনেক বড় মাপের প্রস্তুতি নিয়ে রাখার জন্য তদ্বির করেছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যকর্তারা।
কাল থেকে দেশে শুরু হচ্ছে ১৫-১৮ বছর বয়সিদের টিকাকরণ। সেই টিকাকরণ যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয়, তা নিয়েও আজ রাজ্যগুলির সঙ্গে আলোচনা করেছেন মাণ্ডবিয়া। সূত্রের মতে, বৈঠকে প্রাপ্ত ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য আলাদা শিবির গড়ে প্রতিষেধক দেওয়ার প্রশ্নে বিশেষ ভাবে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। একান্তই তা সম্ভব না হলে টিকা কেন্দ্রে দু’দলের ক্ষেত্রে যথেষ্ট মাত্রায় ব্যবধান রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বড় ও ছোটদের প্রতিষেধক যাতে এক সঙ্গে মিশে না যায়, তার উপরে বিশেষ ভাবে নজর দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্যকর্মী ও ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারেরা যাতে সতর্কতামূলক ডোজ় পান, সে দিকেও খেয়াল রাখতে বলা হয়েছে।
আজ কেন্দ্র চিঠি দিয়ে জানিয়েছে, অতীতের মতো এ বারও করোনা মোকাবিলায় রাজ্যগুলির কী কী করা উচিত, তা নিয়ে একটি ভার্চুয়াল কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি রাজ্যকে ওই কর্মশালায় অংশ নিতে বলা হয়েছে। আগামী ৫ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত ওই কর্মশালা চালু থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy