স্বাগত: কলকাতায় পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখোমুখি অখিলেশ যাদব। রয়েছেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ
ব্রিগেড সমাবেশের আগের রাতেই বিজেপি-বিরোধী শক্তির কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠল কলকাতা। কলকাতায় পৌঁছে বিরোধী নেতারা সকলেই এক বাক্যে বললেন, এই সমাবেশ দেশে বদল আনার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিতে চলেছে। তবে প্রত্যাশিত ভাবেই জোটের মুখ হিসেবে কারও নাম স্পষ্ট করে বললেন না কেউ। শুধু ভূয়সী প্রশংসা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিজ্ঞতা, নেতৃত্বের।
শুক্রবার গভীর রাত পর্যন্ত দমদম বিমানবন্দরে আসতে থাকেন একের পর এক বিরোধী নেতা। সংখ্যাটা ইতিমধ্যেই ২০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় আজ, শনিবারের ব্রিগেড-মঞ্চ যে বিরোধীদের ঐক্যের সবচেয়ে ‘বড়’ ছবি তুলে ধরবে, এ ব্যাপারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও নিশ্চিত। পাশাপাশি তাঁর বাড়তি চিন্তা সমাবেশ সময়মতো শেষ করা নিয়ে, যাতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের বাড়ি ফিরে যেতে কোনও অসুবিধা না হয়।
সমাবেশে অতিথি-নেতারা বক্তৃতা করবেন, তেমনই পরিকল্পনা রয়েছে। সর্বশেষ বলার কথা তৃণমূল নেত্রীর। সে ক্ষেত্রে সমাবেশ শুরুর সময়টির দিকে নজর রাখতে চাইছেন তিনি। ঘোষণা অনুযায়ী, সভা শুরু বেলা ১২টায়। লোক তার অনেক আগে থেকে ব্রিগেডে ঢুকতে শুরু করে। তাই ভাবা হচ্ছে যাতে একটু আগেই বক্তৃতা-পর্ব শুরু করে দেওয়া যায়।
শুক্রবার দুপুর থেকেই এক এক করে শহরে এলেন বিজেপি বিরোধী জোটের নেতারা। রাত দশটার মধ্যে পৌঁছে যান এইচ ডি দেবগৌড়া, শরদ পওয়ার, অখিলেশ যাদব, ফারুক আবদুল্লা, শরদ যাদব, চন্দ্রবাবু নায়ডু, কুমারস্বামী, এম কে স্ট্যালিন, গেগং আপাং, হেমন্ত সোরেন, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী টি আর বালু প্রমুখ।
কলকাতায় আসা নেতাদের সঙ্গে এ দিন সন্ধ্যা থেকেই আলাদা আলাদা করে দেখা করে স্বাগত জানান মমতা। বেশি রাতে চন্দ্রবাবু এবং কুমারস্বামী পৌঁছলে তাঁদেরও হোটেলে স্বাগত জানিয়ে বাড়ি ফেরেন তৃণমূল নেত্রী। অভ্যাগতদের প্রত্যেককেই স্মারক উপহার দিয়েছেন তিনি। নেতারাও তাঁকে স্মারক উপহার দেন। মমতার কথায়, ‘‘যাঁরা সভায় যোগ দিতে এসেছেন, তাঁদের অনেকেই প্রবীণ। আমি তাঁদের সঙ্গে দেখা করেছি। তাঁরা এই সমাবেশ নিয়ে উচ্ছ্বসিত।’’
উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন বিভিন্ন দলের নেতারাও। অখিলেশ বলেন, ‘‘দেশ নতুন প্রধানমন্ত্রী চাইছে। সব নেতাকে এক মঞ্চে এনে একটি বার্তা দিতে চেয়েছেন মমতাদি। বাংলা থেকে পরিবর্তনের যে বার্তা তিনি দিতে চাইছেন, তাতে দেশের মানুষ খুশি।’’
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া বলেন, ‘‘মোদীকে হারাতে আমরা এক জায়গায় এসেছি। তাতে নেত্রী হিসেবে রয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই বিজেপি-বিরোধী সকলকে একত্রিত করেছেন।’’ তাঁর ছেলে কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামীর বক্তব্য, ‘‘অনেক নেতাই আছেন যাঁরা দূরদর্শী। একটু ধৈর্য ধরুন, বিরোধী শিবিরের নেতা পেয়ে যাবেন।’’ প্রায় একই সুরে ফারুক আবদুল্লা বলেন, ‘‘মমতার নেতৃত্বে আমরা এক জোট হয়েছি। ধৈর্য ধরুন, নেতা পেয়ে যাবেন।’’
অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবুর মতে, ‘‘কিছু সিদ্ধান্ত যেমন ভোটের আগে হয়। কিছু আবার নির্বাচনের ফল বেরনোর পরেও হয়। মহাজোটের নেতা হিসেবে মমতাদির অভিজ্ঞতা অনেক। ব্রিগেডের সভা ২০১৯-এর নতুন লক্ষ্য ঠিক করবে।’’
নেতাদের জন্য গ্র্যান্ড এবং তাজ— দু’টি হোটেলে ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শুধু শরদ পওয়ার নিজে রয়েছেন হায়াত-এ। সব হোটেলেই একাধিক বার ঘুরে ঘুরে অতিথিদের স্বাগত জানান মমতা। তারই ফাঁকে ব্রিগেডের চূড়ান্ত প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে এ দিন সন্ধ্যায় আরও এক বার সেখানে যান তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy