The Journey of Vasundhara Raje Scindia from as a Princess to the First CM of Rajasthan dgtl
BJP
বিয়ের এক বছরের মধ্যেই বিচ্ছিন্ন, রাজসংসার-রাজনীতি কী ভাবে সামলেছেন রাজবধূ বসুন্ধরা
১৯৭২ সালে বসুন্ধরার বিয়ে হয় ঢোলপুরের রাজ পরিবারের মহারাজ রানা হেমন্ত সিংহের সঙ্গে। তবে বিয়ের এক বছর পরেই তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন।
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২০ ১৩:০৯
Share:Save:
এই খবরটি সেভ করে রাখার জন্য পাশের আইকনটি ক্লিক করুন।
০১১৫
মায়ের দেখানো পথেই রাজনীতিতে প্রবেশ। তারপর রাজস্থানের ত্রয়োদশ তথা প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। একবার নয়। দু’দফায় তিনি রাজপুতভূমির মুখ্যমন্ত্রিত্বের দায়িত্ব সামলেছেন। পারিবারিক ধারা মেনেই আভিজাত্য আর রাজার নীতিকে নিজের জীবনে অঙ্গ করে নিয়েছেন বসুন্ধরারাজে সিন্ধিয়া।
০২১৫
অতীতের মরাঠা সাম্রাজ্যের অংশ সিন্ধিয়া রাজবংশে বসুন্ধরার জন্ম ১৯৫৩ সালের ৮ মার্চ। তিনি গ্বালিয়র এস্টেটের শেষ রাজা জিবাজিরাও সিন্ধিয়া এবং বিজয়ারাজে সিন্ধিয়ার সেজো মেয়ে তথা চতুর্থ সন্তান।
০৩১৫
তাঁর প্রাথমিক পড়াশোনা কোদাইকানালের এক কনভেন্ট স্কুলে। এর পর সোফিয়া কলেজ থেকে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক হন।
০৪১৫
আশির দশকে রাজনীতিতে হাতেখড়ি বসুন্ধরার। তাঁর মা বিজয়ারাজে সিন্ধিয়া তখন প্রথমসারির বিজেপি নেত্রী। ১৯৮৪ সালে তাঁর মেয়ে বসুন্ধরাও যোগ দিলেন বিজেপিতে।
০৫১৫
১৯৮৫ থেকে ১৯৯০, টানা পাঁচ বছর তিনি রাজস্থানের ঢোলপুরের বিজেপি বিধায়ক ছিলেন। এর পর ২০০৩ থেকে এখনও অবধি দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে বসুন্ধরা রাজে ঝালরাপাটন থেকে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন।
০৬১৫
দু’দফায় মোট দশ বছর ধরে বসুন্ধরা ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী। প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী পদে তিনি শপথ নেন ২০০৩ সালের ডিসেম্বরে। দ্বিতীয় বার তিনি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন ২০১৩ সালে।
০৭১৫
রাজ্য রাজনীতিতে আসার আগে বসুন্ধরা ছিলেন রাজস্থানের ঝালাওয়াড়ের দুঁদে সাংসদ। ১৯৮৯ থেকে ২০০৩ অবধি, ১৪ বছর ধরে তিনি লোকসভার সদস্য ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিজেপির জাতীয় সহ সভাপতি।
০৮১৫
গ্বালিয়ারের রাজকুমারী বিবাহসূত্রে হয়ে ওঠেন রাজস্থানের রাজবধূ। ১৯৭২ সালে বসুন্ধরার বিয়ে হয় ঢোলপুরের রাজ পরিবারের মহারাজ রানা হেমন্ত সিংহের সঙ্গে। তবে বিয়ের এক বছর পরেই তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করেন। বর্তমানে বসুন্ধরার একমাত্র ছেলে দুষ্মন্ত সিংহ ঝালাওয়াড় কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ।
০৯১৫
বসুন্ধরা রাজের মতো তাঁর ছোট বোন বিজেপি নেত্রী যশোধরা রাজের দাম্পত্যও দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। তাঁদের বড় বোন তথা জিবাজিরাও-বিজয়ারাজের প্রথম সন্তান পদ্মাবতীরাজের বিয়ে হয়েছিল ত্রিপুরার শেষ ক্ষমতাসীন রাজা কিরীট দেববর্মনের সঙ্গে। ১৯৬৪ সালে মাত্র ২২ বছর বয়সে প্রয়াত হন পদ্মাবতী।
১০১৫
মেজো বোন মেজো মেয়ে ঊষারাজের বিয়ে হয়েছে নেপালের রানা পরিবারে। দূর সম্পর্কের আত্মীয়, পশুপতি সামশের জং বাহাদুর রানার সঙ্গে। তাঁদের একমাত্র ভাই প্রয়াত মাধবরাও সিন্ধিয়া ছিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ নেতা মাধবরাও বিভিন্ন সময়ে একাধিক মন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেছেন। মাধবরাওয়ের ছেলে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া সম্প্রতি কংগ্রেস ছেড়ে যোগ দিলেন বিজেপিতে।
১১১৫
অন্যান্য রাজপরিবারের মতো সিন্ধিয়া বংশও ক্ষত বিক্ষত সম্পত্তি সংক্রান্ত বিবাদে। গত তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে ৪০ হাজার কোটি টাকারও বেশি সম্পত্তি ঘিরে চরমে পৌঁছেছে দ্বন্দ্ব। বর্তমানে বিবাদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া ও তাঁর তিন পিসি। তবে সব বিবাদ সরিয়ে রেখে ভাইপোর দলবদলের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বসুন্ধরা ও যশোধরা, দু’জনেই।
১২১৫
বার বার বিতর্ক আবর্তিত হয়েছে বসুন্ধরারাজেকে ঘিরে। স্বজনপোষণের অভিযোগের পাশাপাশি জমি-কেলেঙ্কারিতে তাঁর নাম উঠে এসেছে। জমি বিতর্কে ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্ট নোটিস জারি করে বসুন্ধরা ও তাঁর পুত্র দুষ্মন্তের নামে।
১৩১৫
২০১৮ সালে রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচনের আগে নিজের যে সম্পত্তির খতিয়ান দেন বসুন্ধরা, সেখানে বলা হয়েছে তাঁর স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ৪ কোটি ৪৫ লক্ষ টাকার। ২০১৩ সালের ঘোষিত সম্পত্তির তুলনায় সেই পরিমাণ বেড়েছিল প্রায় ১২ শতাংশ।
১৪১৫
তাঁর একমাত্র স্থাবর সম্পত্তি হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছিলেন জয়পুরের বসতবাড়ির কথা। ৩৫৩০ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত বাড়িটির তৎকালীন মূল্য ছিল ৪৫ লাখ টাকা। ২০১৩ সালে আট লাখ টাকা মূল্যের কৃষিজমির কথাও বলেছিলেন তিনি। পাঁচ বছর পরে সেই জমির কথা উল্লেখ করেননি।
১৫১৫
২০১৩ থেকে ২০১৮, এই পাঁচ বছরে বসুন্ধরার অস্থাবর সম্পত্তি বেড়েছিল মোট ৪৩ লাখ টাকার। ২০১৩ সালে তাঁর অস্থাবর সম্পত্তির মূল্য ছিল ৩ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকার। পাঁচ বছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪ কোটি ৯ লক্ষ টাকায়। তাঁর ঘোষিত সম্পত্তির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল এক কোটি ৯ লাখ টাকার বহুমূল্য অলঙ্কার। (ছবি: আর্কাইভ)