Advertisement
E-Paper

লোকসভা ভোটে আসন সমঝোতা, না ভোপালে জনসভা? অগ্রাধিকারের প্রশ্নে মতবিরোধে ‘ইন্ডিয়া’

কংগ্রেস সূত্রের খবর, অক্টোবর মাসের প্রথমার্ধে ‘ইন্ডিয়া’-র শীর্ষনেতাদের বৈঠক ডাকা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। উল্টো দিকে, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বেশ কিছু বিরোধী দল দাবি তুলেছে, আগে আসন সমঝোতা হোক।

সংশয়ের মুখে ‘ইন্ডিয়া’-র ভবিষ্যৎ কর্মসূচি।

সংশয়ের মুখে ‘ইন্ডিয়া’-র ভবিষ্যৎ কর্মসূচি। —ফাইল চিত্র।

অগ্নি রায়, প্রেমাংশু চৌধুরী

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৫৯
Share
Save

ভোপাল-সমস্যার জেরে সংশয়ের মুখে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’-র ভবিষ্যৎ কর্মসূচি।

দু’সপ্তাহ আগে দিল্লিতে শরদ পওয়ারের বাড়িতে ‘ইন্ডিয়া’-র সমন্বয় কমিটির বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, জোটের প্রথম জনসভা হবে ভোটমুখী রাজ্য মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে। ওই বৈঠকে কংগ্রেসই ভোপালে জনসভা করার প্রস্তাব দিলেও পরে মধ্যপ্রদেশেরই কংগ্রেস নেতা কমলনাথ ভোপালে জনসভার প্রস্তাব খারিজ করে দেন।সনাতন ধর্ম নিয়ে বিতর্কে জড়ানো ডিএমকে নেতাদের সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে তিনি মধ্যপ্রদেশের রাজনীতিতে বিজেপিকে সুবিধা করে দিতে চাননি। কিন্তু ভোপালের জনসভা বাতিল হলেও তার বদলে জনসভা কোথায় হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি। একই ভাবে মুম্বইয়ের ‘ইন্ডিয়া’-র শীর্ষ নেতৃত্বের সম্মেলনের পরে এক মাস কেটে গেলেও বিরোধী দলগুলির পরবর্তী বৈঠক কোথায় হবে, তারও নিশ্চয়তা নেই।

কংগ্রেস সূত্রের খবর, অক্টোবর মাসের প্রথমার্ধে ‘ইন্ডিয়া’-র শীর্ষনেতাদের বৈঠক ডাকা নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। উল্টো দিকে, তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বেশ কিছু বিরোধী দল দাবি তুলেছে, আগে আসন সমঝোতা হোক। তারপরে জনসভা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা যাবে।

তৃণমূল কংগ্রেস আগেই চেয়েছিল, ১৫ অক্টোবরের মধ্যে আসন সমঝোতা সেরে ফেলা হোক। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গেই আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়নি। উল্টে অধীররঞ্জন চৌধুরী যে ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন, তাতে তৃণমূলে ফের ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের বক্তব্য, সমন্বয় কমিটির বৈঠকে অবিলম্বে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা শুরু করারও সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সেই সিদ্ধান্তকেও আমল দেওয়া হচ্ছে না।

এই প্রেক্ষিতে ইন্ডিয়া-র ২৬টি দলের ১৪ জন নেতাকে তৈরি সমন্বয় কমিটির কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, সমন্বয় কমিটির বৈঠকে আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া শুরু করার সিদ্ধান্তও কার্যকর হচ্ছে না। ওই বৈঠকে ভোপালে জনসভা করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সমন্বয় কমিটিতে কংগ্রেসের সাংগঠনিক সম্পাদক কে সি বেণুগোপাল সদস্য হিসেবে হাজির ছিলেন। কিন্তু বেণুগোপালের কথা কার্যত উড়িয়ে দেন কমলনাথ। তিনি বেণুগোপালকে প্রশ্ন করেন, কেন তাঁকে না জানিয়ে এই সিদ্ধান্ত হল? তারপরে তিনিনিজেই জনসভা হবে না বলে ঘোষণা করে দেন। কংগ্রেস হাই কমান্ডেরও তা জানা ছিল না। বিরোধী জোটের সবথেকে বড় দলের মধ্যে এই সমন্বয়ের অভাব জোটের সমন্বয় কমিটিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

সমন্বয় কমিটিতে সব দলের শীর্ষ নেতারা না থাকলেও ন্যাশনাল কনফারেন্সের ওমর আবদুল্লা, পিডিপি-র মেহবুবা মুফতি রয়েছেন। ওমর ঘরোয়া আলোচনায় বলেছেন, তাঁদের কমিটির সিদ্ধান্ত বড় দল কংগ্রেসই না মানলে শ্রীনগর থেকে দিল্লিতে এসে বৈঠক করে কী লাভ! জেডিইউ শিবিরে নীতীশকুমারকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে নাক্ষোভ তৈরি হয়েছে।

সোমবার হরিয়ানায় আইএনএলডি-র ডাকা জনসভায় জেডিইউ নেতা কে সি ত্যাগী কার্যত কংগ্রেসকেই বার্তা দিয়ে বলেছেন, ‘‘বড় কাজ করতে হলে সঙ্কীর্ণ মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে।’’

‘ইন্ডিয়া’-র জনসভা নিয়ে তৃণমূল সূত্রের খবর, ভোপালের বদলে কংগ্রেস, এনসিপি, উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনার তরফ থেকে নাগপুরে জনসভা করার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু মহারাষ্ট্রের মুম্বইয়ে এক বার বৈঠক হয়ে যাওয়ার পরে ফের সেই রাজ্যেরই নাগপুরে জনসভা নিয়ে অনেক দলের আপত্তি রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের দাবি, আগে আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা হোক। জনসভার জন্য অনেক সময় পড়ে রয়েছে। কিন্তু কংগ্রেসের দাবি, বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র রাস্তায় নামতে এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। অন্য বিরোধী দলগুলি আবার মনে করছে, কংগ্রেস মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, রাজস্থান, তেলঙ্গানার ভোটে ভাল ফল করবে আশা করে তারপরে আসন সমঝোতায় যেতে চাইছে। যাতে কংগ্রেসের পক্ষে দর কষাকষি করা সহজ হয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Anti BJP Alliance Congress TMC

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}