— প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গেই রাজ্যগুলির বিধানসভা নির্বাচন বা ‘এক দেশ, এক ভোট’ চালু হলে কি বিজেপি একাই লাভবান হবে? না কি বিজেপি-বিরোধী শিবিরে একমাত্র জাতীয় দল হিসেবে কংগ্রেসও তার ফায়দা তুলতে পারে?
কংগ্রেস মোদী সরকারের প্রস্তাবিত ‘এক দেশ, এক ভোট’-এর বিরোধিতা করছে ঠিকই। কিন্তু কংগ্রেসের মধ্যেই একটা বড় অংশ মনে করছে, এর ফলে বিজেপির মতো কংগ্রেসও লাভবান হতে পারে। লোকসভা, বিধানসভা ভোটে আঞ্চলিক দলগুলির প্রাধান্য কমে গিয়ে তা ক্রমশ বিজেপি বনাম কংগ্রেসের দ্বিমেরুর রাজনীতি হয়ে উঠতে পারে।
কী ভাবে? কংগ্রেসের একাধিক নেতার মতে, গত কয়েক দশকে বহু রাজ্যে সমাজবাদী পার্টি, এনসিপি, তৃণমূল কংগ্রেস, ডিএমকে, আরজেডি, জেএমএম-এর মতো দলগুলি কংগ্রেসের জমি দখল করেই ফুলে-ফেঁপে উঠেছে। এই দলগুলি রাজ্যের রাজনৈতিক ইস্যুকেই সামনে রেখে ভোটে লড়ছে। ফলে জাতীয় দল হিসেবে কংগ্রেস কল্কে পাচ্ছে না। লোকসভার সঙ্গে বিধানসভা ভোট হলে রাজ্যের রাজনৈতিক বিষয়ের থেকেও জাতীয় বিষয়গুলি বড় হয়ে উঠবে। তার ফলে বিজেপির মতো কংগ্রেসও লাভবান হতে পারে।
নীতিগত ভাবে কংগ্রেস আগেই ‘এক দেশ, এক ভোট’ নিয়ে নিজেদের আপত্তির কথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কমিটিকে জানিয়েছিল। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এ নিয়ে কোবিন্দ কমিটিকে চিঠিও লিখেছিলেন। মঙ্গলবার লোকসভায় ‘এক দেশ, এক ভোট’ সংক্রান্ত বিল পেশের সময়েও কংগ্রেস একে সংবিধান ও যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী বলে বিরোধিতা করেছে। কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশের বক্তব্য, ‘‘মোদী সরকার প্রথমে এক দেশ, এক ভোট চালু করতে চাইছে, তার পরে নতুন সংবিধান আনতে চায়।’’
এআইসিসি-র অন্য এক সাধারণ সম্পাদকের যুক্তি, ‘‘বিজেপি কেন লোকসভার সঙ্গে বিধানসভার ভোট করাতে চাইছে? যাতে তারা জাতীয় রাজনীতির ধুয়ো তুলে সিংহভাগ রাজ্যে জিততে পারে। কংগ্রেসের যখন অধিকাংশ রাজ্যেই সংগঠন দুর্বল, তখন আমাদেরও জাতীয় রাজনীতির ধুয়ো তুলে রাজ্য জয়ের চেষ্টা করা উচিত।’’
কংগ্রেসের একটি অংশ অবশ্য এই যুক্তি মানছেন না। তাঁদের বক্তব্য, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশের মতো অনেক রাজ্যে বার বার দেখা গিয়েছে, লোকসভার সঙ্গে বিধানসভার ভোট হলেও একই ভোটার লোকসভায় এক দলকে ভোট দিচ্ছেন, বিধানসভায় অন্য দলকে। দিল্লিতেও সাম্প্রতিক অতীতে দেখা যাচ্ছে, ভোটাররা লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে ভোট দিলেও এক বছরের কম সময়ের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টিকে ভোট দিচ্ছেন।
কিন্তু অন্য শিবির এই যুক্তি খারিজ করে দিয়ে বলছে, খুব কম রাজ্যেই ভোটারদের মধ্যে লোকসভা ও বিধানসভায় আলাদা আলাদা দলকে ভোট দেওয়ার মতো রাজনৈতিক বিচক্ষণতা দেখা যায়। উত্তরপ্রদেশ, বিহার, গুজরাত, উত্তরাখণ্ডের মতো রাজ্যে ভোটাররা লোকসভায় যাকে ভোট দেন, তাকেই বিধানসভায় ভোট দেন। কংগ্রেসের অন্য অংশ বলছে, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, কর্নাটক, হিমাচল প্রদেশ, গুজরাতের মতো রাজ্যে কোনও আঞ্চলিক দল নেই। সেখানে বিজেপির সঙ্গে লড়তে গেলে কংগ্রেসকে নিজের শক্তিতেই লড়তে হবে। তা সে জাতীয় ইস্যু হোক বা রাজ্যের সমস্যা। আগামী ২৬-২৭ ডিসেম্বর বেলগাভিতে কংগ্রেসের বর্ধিত ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। কংগ্রেস নেতারা মনে করছেন, সেখানে এই প্রসঙ্গ উঠতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy