জিগ্নেশ মেবাণী
অসমে আইনি ঝামেলা আপাতত কাটছে না গুজরাতের বিধায়ক জিগ্নেশ মেবাণীর। বরপেটা দায়রা আদালত মহিলা এসআইয়ের শ্লীলতাহানির চেষ্টার মামলায় গুজরাতের বিধায়ক জিগ্নেশকে জামিন দিয়ে অসম পুলিশের তীব্র সমালোচনা করলেও দমছে না পুলিশ।
এ বার অভিযোগকারিণী এসআই হাই কোর্টে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতিমধ্যেই তিনি অনুমতি চেয়েছেন স্বরাষ্ট্র দফতরের কাছে। স্বরাষ্ট্র দফতর রয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মার হাতেই। হিমন্ত দিল্লিতে বলেন, “আমি এই মামলার বিষয়ে বেশি কিছু জানি না। বরপেটা দায়রা আদালত ওই মহিলার সঙ্গে অভব্যতা করার মামলায় জিগ্নেশকে জামিন দিয়েছিল।
অভিযোগকারিণী রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হতে চাইছেন। এ নিয়ে অনুমতি চেয়ে আমার কাছে ফাইল পাঠানো হয়েছে। আমি অনুমতি দিলেই তিনি নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাই কোর্টে আবেদন জানাবেন।” জিগ্নেশ জামিন পেয়ে গুজরাত ফেরার আগে বলে গিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নির্দেশেই তাঁকে গ্রেফতার করা ও আটকে রাখার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় অসম সরকার। অভিযোগকারিণী এসআইয়ের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে তিনি বলেছেন, “আমায় আটকে রাখতে হলে যে কোনও অন্য ভুয়ো মামলা সাজাতে পারত পুলিশ। কিন্তু এক মহিলা সহকর্মীকে চাপ দিয়ে এমন একটি মামলা রুজু করানো লজ্জাজনক।”
প্রশ্ন উঠছে, দায়রা আদালতে যেখানে জিগ্নেশের বিরুদ্ধে প্রমাণ দিতে পারেনি পুলিশ, সেখানে হাই কোর্টে তারা কী ভাবে অভিযোগ প্রমাণ করবে? যে মহিলা এসআই জিগ্নেশের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছিলেন আদালতে তিনি জানান, জিগ্নেশ তাঁকে স্পর্শ করেননি। গাড়িতে পাশে বসায় ধাক্কা লেগেছে। গুজরাতি ভাষায় জিগ্নেশ তাঁকে অশ্লীল কথা বলেছেন বলে ওই মহিলা অফিসার জানান। অথচ তিনি এও বলেন, যে গুজরাতি জানেন না। বিভিন্ন অসঙ্গতির জন্য জিগ্নেশের বিরুদ্ধে আনা মামলাকে ‘সাজানো’ বলে মন্তব্য করে বিচারক অপরেশ চক্রবর্তী রায়ে বলেছেন, রাজ্য পুলিশের মর্যাদা ও দায়বদ্ধতা নিয়েই প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। আদালত কটাক্ষ করে বলে, পুলিশ তাদের হেফাজতে থাকা অভিযুক্তকে চাপ দিয়ে দোষ স্বীকার করায় তা জানা আছে। কিন্তু এমন মামলা প্রথম দেখা গেল, যেখানে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এমন অপরাধের বিচার চলছে যা তিনি পুলিশের হেফাজতে থেকেই করেছেন অথচ অন্য কেউ তা দেখতেই পাননি!
বিচারপর্বে অভিযোগকারী মহিলা জানান, তিনি অভিযুক্তের পাশে বসে আসছিলেন। সেখানে আরও দুই অফিসার ছিলেন। জিগ্নেশের ছোঁয়া তাঁর অশোভন মনে হয়েছে। বিচারক রায়ে লেখেন, অভিযোগ সত্য হলে মানতে হয়, দুই অফিসারের সামনেই গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তি এক মহিলা অফিসারের সঙ্গে অশ্লীল বাক্য প্রয়োগ, অভদ্র ব্যবহার ও হেনস্থা করে চলেছেন! আইনপ্রণেতারা আজ পর্যন্ত এমন ঘটনা শোনেননি তাই এই প্রসঙ্গে কোনও ধারাও তৈরি হয়নি! বিচারক চক্রবর্তী স্পষ্ট বলেছেন, ‘‘বিভিন্ন অযৌক্তিক ব্যাখ্যা ও অসঙ্গতি থেকে বোঝাই যাচ্ছে, পুলিশের অভিযোগ বানানো। তাদের মূল উদ্দেশ্য ধৃতকে দীর্ঘদিন আটকে রাখা।’’ এখনই রাশ না টানলে অসম ‘পুলিশ রাষ্ট্রে’ পরিণত হবে বলেও মন্তব্য করেছেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy