বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা। ফাইল চিত্র
চলতি সপ্তাহেই ১০০ কোটি ডোজ টিকাকরণ ছুঁয়ে ফেলতে চলেছে কেন্দ্র। লক্ষ্যমাত্রা ছুঁলেই সেই সাফল্যগাথাকে দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে বিরাট প্রচারে নামার পরিকল্পনা নিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। মূলত করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় সরকারের ভাবমূর্তি যে টোল খেয়েছিল, পাঁচ রাজ্যে ভোটের আগে তা উজ্জ্বল করতে আজ দলীয় পদাধিকারীদের বৈঠকে স্পষ্ট নির্দেশ দিলেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নড্ডা।
আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন রয়েছে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে। সেই নির্বাচনের রণকৌশল ঠিক করতে আগামী ৭ নভেম্বর দিল্লিতে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ডেকেছে বিজেপি। তার আগে আজ দলীয় পদাধিকারীদের বৈঠক ডেকেছিলেন জে পি নড্ডা। বৈঠকে মূলত কেন্দ্রের সাফল্যের দিকগুলি তুলে ধরে ধারাবাহিক প্রচারের নির্দেশ দেন নড্ডা। আগামী তিন মাসে প্রচারের যে রণকৌশল ঠিক হয়েছে তাতে প্রাথমিক ভাবে দু’টি বিষয়ে প্রচারের উপরে জোর দিয়েছে দল। প্রথমত, একশো কোটি টিকাকরণের লক্ষ্য চলতি সপ্তাহেই ছুঁয়ে ফেলতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। করোনা মোকাবিলার প্রশ্নে সরকারের ওই সাফল্য তুলে ধরার প্রশ্নে বিশেষ ভাবে জোর দিয়েছে দল। আজ বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি বৈজয়ন্ত পণ্ডা বলেন, “টিকাকরণের প্রশ্নে অভূতপূর্ব সাফল্য পেয়েছে দেশ। বিশ্বের বহু উন্নত দেশ টিকাকরণের প্রশ্নে ভারতের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে। যে গতিতে টিকাকরণ হয়েছে সেটা রেকর্ড।”
বৈঠকে উপস্থিত বিজেপির এক নেতার কথায়, “নরেন্দ্র মোদী সরকারের ভারত যে টিকাকরণে রেকর্ড গড়েছে, সেই বিষয়টি আগামী দিনে আমাদের প্রচারের প্রধান হাতিয়ার হতে চলেছে।” সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে একশো কোটি টিকাকরণের দিনে দেশের সব ট্রেনে, বিমানে ওই সাফল্যের কাহিনী তুলে ধরা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। একশো কোটির লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়ার দিন স্পাইস জেট সংস্থা তাদের বিমানগুলি পোস্টার দিয়ে মুড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বাস্থ্য কর্মীদের ওই টিকাকরণের জন্য ধন্যবাদ জানাবার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
করোনা কালে দেশের সব মানুষকে বিনামূল্যে রেশন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদী সরকার। দ্বিতীয় বিষয় হিসাবে দেশবাসীকে যে মোদী সরকার অভুক্ত থাকতে দেয়নি, সেটিকেই প্রচারে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে দল। ইতিমধ্যেই বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে রেশন দোকানে মোদীর ছবি দেওয়া থলে বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে দল। বিজেপির এক নেতার কথায়, “করোনা কালে রোজগার না থাকলেও মোদী সরকারের নীতির কারণে মানুষকে না খেয়ে থাকতে হয়নি। এটাও এই সরকারের বড় সাফল্য।” বিজেপি সূত্রের মতে, করোনার দ্বিতীয় ধাক্কায় কার্যত বেআব্রু হয়ে গিয়েছিল দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। প্রশ্নের মুখে পড়ে যায় নরেন্দ্র মোদীর ভাবমূর্তি। সেই কালি মুছতেই করোনা সংক্রান্ত ওই দুই সাফল্যকে হাতিয়ার করার পরিকল্পনা নিয়ে এগোনোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে দল। আজ বৈঠকে নড্ডা জানান, সরকারের কাজের সুফল সংক্রান্ত প্রচার মানুষের কাছে পৌঁছচ্ছে না। যার সুযোগ নিয়ে বিরোধীরা মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে।
উত্তরপ্রদেশের জাতপাতের রাজনীতির কথা মাথায় রেখে দলের ওবিসি মোর্চা, তফসিলি জাতি ও জনজাতি মোর্চাকে আরও বেশি করে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান, চিন্তন বৈঠক করার উপরে জোর দিয়েছেন নড্ডা। মূলত সংশ্লিষ্ট সমাজের মানুষের মধ্যে বিজেপির প্রতি যে ক্ষোভ রয়েছে, তা দূর করতেই আরও বেশি করে মানুষের কাছে পৌঁছনোর জন্য দলীয় কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন নড্ডা। কৃষক অসন্তোষের কথা মাথায় রেখে আগামী তিন মাসে একেবারে তৃণমূল স্তরে গিয়ে মানুষকে কৃষি বিলের ফায়দা জানানোর জন্য কিসান মোর্চার নেতাদের আজ নির্দেশ দেয় দল।
সম্প্রতি লখিমপুর খেরির ঘটনায় বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র ও তাঁর ছেলে আশিসের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে প্রকাশ্যে সরব হয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ বরুণ গাঁধী। ওই ঘটনার জেরে দলীয় কর্মসমিতির তালিকা থেকে বাদ পড়েন তিনি। আজ জে পি নড্ডা বৈঠকে বলেন, যারা দলের পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারবেন না, তাঁদের বসে যেতে হবে। নড্ডা এ প্রসঙ্গে কারও নাম না-করলেও, অনেকের মতে বরুণ গাঁধীকে উদ্দেশ্য করে বাকি বিক্ষুব্ধদের পরোক্ষে সতর্ক করে দিলেন নড্ডা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy