সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
কলকাতার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখা গ্রাহকের অজ্ঞাতে ভেঙেছিল লকার। সেই ঘটনার জেরে দায়ের করা মামলায় ঐতিহাসিক রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট। গ্রাহকদের স্বার্থে আগামী ৬ মাসের মধ্যে লকার সংক্রান্ত নীতি বদলের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। সেই সঙ্গে আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ, গ্রাহকের লকারে কী রয়েছে, সে বিষয়ে কোনও অবস্থাতেই দায় এড়াতে পারেন না ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ।
বিচারপতি এসএস স্বান্তনাগৌড়া এবং বিচারপতি বিনীত সারনের বেঞ্চ জানিয়েছে, গ্রাহকের অজ্ঞাতে কোনও ব্যাঙ্ক লকার ভাঙলে ভিতরে থাকা জিনিস নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকেই দায়িত্ব নিতে হবে। তা ছাড়া বিভিন্ন ব্যাঙ্কের লকার সংক্রান্ত নীতির মধ্যে কেন ফারাক রয়েছে, সে প্রশ্নও তুলেছেন দুই বিচারপতি। এ বিষয়ে অভিন্ন বিধি তৈরির জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে ৮ দফা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গ্রাহকের কিছু না জানিয়ে লকার ভাঙার দায়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিয়েছে, অভিযুক্ত আধিকারিকরা এখনও চাকরিতে থাকলে, তাঁদের কাছ থেকে জরিমানার অর্থ আদায় করা যেতে পারে। পাশাপাশি, আবেদনকারী অমিতাভ দাশগুপ্তকে মামলার খরচ হিসেবে আরও এক লক্ষ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
লকার ভাড়ার বকেয়া থাকার অজুহাতে অমিতাভের লকার ভেঙে ওই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখার আধিকারিকরা গয়না বার করেছিলেন। অমিতাভের অভিযোগ, মোট ৭টি গয়না বার করা হলেও পরে তাঁকে মাত্র দু’টি ফেরত দেওয়া হয়েছিল। ক্রেতা সুরক্ষা মঞ্চের স্থানীয় শাখায় আবেদন জানানোর পরে প্রথমে অমিতাভকে ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ রাজ্য স্তরে আবেদন জানানোর পরে তা কমে হয় ৩০ হাজার টাকা। জাতীয় ক্রেতা সুরক্ষা মঞ্চও সেই রায়ই বহাল রাখে।
এর পরেই সর্বোচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন অমিতাভ। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, লকার ভাঙার আগে অবশ্যই গ্রাহককে অবহিত করতে হবে। নিরপেক্ষ সাক্ষী এবং দায়িত্বশীল অফিসারের উপস্থিতি ছাড়া কোনও অবস্থাতেই লকার ভাঙা যাবে না। স্থায়ী লকার-নীতি প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত আগামী ৬ মাস অস্থায়ী ভাবে এই নির্দেশ মেনে চলতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy