উদাহরণ আনুন! সিবিআই, ইডির ‘অপব্যবহার’ নিয়ে ১৪ দলের আর্জি খারিজ করে বলল সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
ইডি এবং সিবিআইয়ের মতো কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহার নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকারে বিরুদ্ধে ১৪টি বিরোধী দলের আবেদন খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ বলেছে, কোনও নির্দিষ্ট উদাহরণ নিয়ে শুনানি চলতে পারে। কিন্তু সার্বিক ভাবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহার নিয়ে মামলার শুনানি এবং রায়দান সম্ভব নয়। আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিকে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় বলেন, ‘‘যখন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অপব্যবহার নিয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনতে পারবেন, তখন আবার আসবেন।’’
রাজনৈতিক লাভের জন্য কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি এবং সিবিআইকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার অভিযোগে গত ২৪ মার্চ সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছিল দেশের ১৪টি বিরোধী দল। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে তাতে কংগ্রেসের পাশাপাশি তৃণমূল, আপ, বাম, সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি, বিআরএস-ও ছিল। কংগ্রেসের নেতা এবং আইনজীবী সিঙ্ঘভি তাঁর আবেদনে দেশের প্রধান বিচারপতিকে জানিয়েছিলেন, বর্তমানে সিবিআই এবং ইডির তদন্তাধীন ৯৫ শতাংশ মামলাই বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে। এই আবহে সিবিআই এবং ইডির অপব্যবহার রুখতে গ্রেফতারির আগে এবং পরে নির্দেশিকা খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছিলেন তিনি।
প্রাথমিক ভাবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ বুধবার (৫ এপ্রিল) মামলাটি নথিভুক্ত করতে নির্দেশ দেয়। সেই মতো প্রথম শুনানি হয় বুধবার। শীর্ষ আদালত জানান, মামলার আবেদনে লেখা হয়েছে, “কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে কাজে লাগিয়ে সামগ্রিক রাজনৈতিক বিরোধিতা এবং অন্যান্য সরব কণ্ঠস্বরকে ধ্বংস করা, দীর্ঘ দিনের জন্য তাদের জেলে বন্দি করার একটি স্পষ্ট নকশা দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি, মাঝেমধ্যেই ভয়াবহ আইন তৈরি করা হচ্ছে যাতে জামিন পাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে যায়।” কিন্তু সিবিআই-ইডির ‘অপব্যবহার’ সংক্রান্ত সুনির্দিষ্ট উদাহরণ ছাড়া মামলা গ্রহণ করা সম্ভব নয় বলে জানায় শীর্ষ আদালত।
প্রসঙ্গত, এর আগে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অতিসক্রিয়তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রী এবং মোট ৮টি বিরোধী দলের নেতারা। সেই চিঠিতে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিআরএস প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের মতো নেতার স্বাক্ষর ছিল। কিন্তু ছিল না কংগ্রেসের। অভিযোগ করা হয়েছিল, দল বদলে বিজেপিতে ঢোকা অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা, পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায় এবং মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী নারায়ণ রাণের বিরুদ্ধে সিবিআই-ইডি তদন্ত থমকে আছে। অথচ বিরোধী দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তা দেখাচ্ছে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি।
পরিসংখ্যান জানাচ্ছে, মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গত ৯ বছরে রাজনীতিকদের বিরুদ্ধে ইডির মামলার সংখ্যা ৪ গুণেরও বেশি বেড়েছে। সিঙ্ঘভির দায়ের করা মামলার আবেদনে পরিসংখ্যান দিয়ে দেখানো হয়েছে, ২০০৪ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে (ইউপিএ জমানায়) ৭২ জন রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে সিবিআই-ইডি। যার মধ্যে ৪৩ জন বিরোধী দলের। আর ২০১৪ সালের পর ১১৮ জন তদন্তের আওতায় রয়েছেন, যার মধ্যে ৯৫ শতাংশ বিরোধী দলের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy