জম্মু-কাশ্মীরের ত্রালের ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে ২০ কিলোমিটার হেঁটে পহেলগাঁও পৌঁছেছিল জঙ্গিরা, সূত্রের খবর অন্তত তেমনই। শুধু তা-ই নয়, ঘন জঙ্গলের ভিতর দিয়ে যাতে সহজে বৈসরনে পৌঁছোনো যায়, তার জন্য এক বিশেষ ধরনের মোবাইল অ্যাপের সাহায্য নিয়েছিল তারা। সেই অ্যাপ অনুসরণ করে পাইনের ঘন জঙ্গল পেরিয়ে বৈসরনে ঢুকে পর্যটকদের উপর হামলা চালায় পাঁচ জঙ্গি।
সূত্রের খবর, যে মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করেছিল জঙ্গিরা, সেটি হল ‘আল্পাইন কোয়েস্ট’। এর আগেও জম্মুর জঙ্গলে হামলায় জঙ্গিরা এই অ্যাপই ব্যবহার করেছিল বলে ওই সূত্রের দাবি। নিরাপত্তাবাহিনীর নজর যাতে সহজে এড়ানো যায়, তাই জঙ্গলের রাস্তা বেছে নিয়েছিল জঙ্গিরা। কিন্তু পহেলগাঁওয়ের ঘন জঙ্গলে যাতে রাস্তা হারিয়ে না ফেলে, তাই এই অ্যাপের দেখানো পথ অনুসরণ করে তারা।
সূত্রের খবর, জঙ্গিরা যাতে গোয়েন্দাদের নজরদারিতে না আসে, তার জন্য পাক সেনাও মদত দিয়েছিল। পাক সেনার মদতেই এই বিশেষ অ্যাপ বানানো হয়েছে বলে দাবি। শুধু তা-ই নয়, এই অ্যাপ কী ভাবে কাজে লাগাতে হবে, নিরাপত্তাবাহিনী বা গোয়েন্দারা যাতে কোনও ভাবেই জঙ্গিদের গতিবিধি চিহ্নিত করতে না পারেন, তার জন্যও বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল হামলাকারীদের। আর এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে পাকিস্তানেই, সে দেশের সেনার তত্ত্বাবধানে।
সূত্রের খবর, আগামী জুলাইয়ে শুরু হচ্ছে অমরনাথ যাত্রা। পাক জঙ্গিগোষ্ঠীগুলির লক্ষ্য ছিল তার আগে কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে পর্যটক এবং পুণ্যার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করা। আর সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই পহেলগাঁওয়ে হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি। এই হামলার দায় নিয়েছে লশকর জঙ্গিগোষ্ঠীর ছায়া সংগঠন ‘দ্য রেজ়িস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)। এই সংগঠনের ‘হিট স্কোয়াড’ এবং ‘ফ্যালকন স্কোয়াড’ এই ধরনের হামলার ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত বলে ওই সূত্রের খবর। নির্দিষ্ট লক্ষ্যে হামলা চালানোর পর ঘন জঙ্গল এবং পাহাড়ে লুকিয়ে পড়ারও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
সূত্রের খবর, টিআরএফ-এর ‘ফ্যালকন স্কোয়াড’ অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত। এই স্কোয়াড ‘হিট অ্যান্ড রান’ হামলায় দক্ষ। অর্থাৎ হামলা করেই পালিয়ে যাওয়ায় দক্ষ এরা। পহেলগাঁও হামলায় টিআরএফ-এর ‘ফ্যালকন স্কোয়াড’-এর সদস্যরা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। হামলার ঘটনার পর তিন দিন কেটে গেলেও এখনও জঙ্গিদের হদিস মেলেনি। ২২ এপ্রিল হামলা চালিয়েই জঙ্গিরা ঘন পাইনবনে পালিয়ে গিয়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি।
পহেলগাঁও হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২৫ জনই ভারতীয়, এক জন নেপালি নাগরিক।