Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
pen

শিক্ষিকার কলমের খোঁচায় অন্ধ, ১৬ বছরের ‘নষ্ট জীবন’ সামলাতে সরকারি চাকরি চান ছাত্র

সরকারি স্কুলের ছাত্র ছিলেন। স্কুলে তাঁর সঙ্গে হওয়া ঘটনাটি নিয়ে মামলাও হয়েছিল। এলাকায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন অভিভাবকেরা।

তিরুঅনন্তপুরমের আল আামিন।

তিরুঅনন্তপুরমের আল আামিন।

সংবাদ সংস্থা
তিরুঅনন্তপুরম শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২১ ১৭:৩৪
Share: Save:

বিনা দোষেই শাস্তি পেয়েছিলেন তিরুঅনন্তপুরমের আল আামিন। তখন তাঁর বয়স ন’বছর। ফার্স্ট বেঞ্চে বসা ছাত্র। ক্লাস চলাকালীন পিঠে বন্ধুর খোঁচা খেয়ে মুখ ঘুরিয়েছিলেন। ফার্স্ট বেঞ্চারের অমনোযোগ শিক্ষিকার পছন্দ হয়নি। ‘শাস্তি’ দিতে তিনি হাতের পেনটিকেই সজোরে ছুড়ে মেরেছিলেন আমিনের দিকে। পেনের নিব সোজা এসে গেঁথে যায় আমিনের বাঁ চোখে।

আমিন তখন থেকেই এক চোখে অন্ধ। সরকারি স্কুলের ছাত্র ছিলেন। স্কুলে তাঁর সঙ্গে হওয়া ঘটনাটি নিয়ে মামলাও হয়েছিল। এলাকায় প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন অভিভাবকেরা। অবশেষে ১৬ বছর পর মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে। ২০০৫ সালের ১৮ ডিসেম্বরের ঘটনাটির রায় গত ৩০ সেপ্টেম্বর দিয়েছে আদালত। শিক্ষিকাকে দোষী সাব্যস্ত করার পাশাপাশি তাঁকে তিন লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতেও বলা হয়েছে আমিনের পরিবারকে। যদিও আমিন এই রায়ে সন্তুষ্ট নন। তাঁর কথায়, কোনও ক্ষতিপূরণই আর তাঁর কাজে লাগবে না। কারণ ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়েই গিয়েছে।

১৬ বছর এক চোখের দৃষ্টিতেই পড়াশোনা করেছেন আমিন। যে স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছিল, সেই গভর্নমেন্ট হাইস্কুল অফ কান্ডালা থেকেই দশম উত্তীর্ণ হন। আমিন জানিয়েছেন, ওই ঘটনার প্রভাব শুধু শরীরে নয়, তাঁর মনের উপরও পড়েছিল। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল ৯ বছরের আমিন। পড়াশোনা করতে অসুবিধা হয়েছিল তাঁর। ফলে এক সময়ের মেধাবী ছাত্র ক্রমে পরীক্ষায় খারাপ নম্বর আনতে শুরু করেন। দশম শ্রেণির পর পলিটেকনিক কলেজে ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত কলেজ শেষ করতে পারেননি।

ওই স্কুল।

ওই স্কুল।

আমিনের বয়স এখন ২৫। তিনি জানিয়েছেন, এই বয়সে তাঁরই পরিবারের খেয়াল রাখার কথা। বদলে পরিবারকে তাঁর খেয়াল রাখতে হচ্ছে। তাই ক্ষতিপূরণ নয়, তিনি চাকরি চান। সরকারি স্কুলের শিক্ষিকার অপরিণামদর্শিতায় গত ১৬ বছর নষ্ট হয়েছে। আমিন মনে করেন, এখন একটি সরকারি চাকরিই তাঁর জীবন কিছুটা শুধরে দিতে পারে।

রায় প্রসঙ্গে আমিনের বক্তব্য, ‘‘ওঁর বাড়ি আমার বাড়ির ৫০০ মিটারের মধ্যে। তবু গত ১৬ বছরে একবারও আমার খবর নেননি। শিক্ষিকা দোষ করেছিলেন। তাই দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এতে আলাদা করে আনন্দ পাওয়ার কিছু নেই। আমার বরং এটা ভেবে অবাক লাগছে যে, দোষীর বিচার হতে ১৬ বছর লেগে গেল!’’

রায়ে দেরি প্রসঙ্গে সরকারি আইনজীবী অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং অন্য শিক্ষিকাদের অসহযোগিতার কারণেই এত সময় লাগল। ওঁরা বরাবরই বিষয়টিকে হালকা ভাবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। হাজিরার নিয়েও টালবাহানা করতেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

pen Accident Teacher school blind
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy