Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
National News

হস্টেলে মহিলা আবাসিকদের বাথরুমে গোপন ক্যামেরা, পুলিশের জালে ইঞ্জিনিয়ার

কেউ কোনও দিন জানতেই পারতেন না বাথরুমের বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখা সেই গোপন ক্যামেরার খবরাখবর যদি না সে দিন আচমকা প্লাগের সকেট খুলে মেঝেয় এসে পড়ত একটি গোপন ক্যামেরা।

হস্টেল চালাতেন যিনি সেই সম্পত রাজ, সঙ্গে (বাঁ দিকে) স্পাই ক্যামেরা। ছবি- সংগৃহীত

হস্টেল চালাতেন যিনি সেই সম্পত রাজ, সঙ্গে (বাঁ দিকে) স্পাই ক্যামেরা। ছবি- সংগৃহীত

সংবাদ সংস্থা
চেন্নাই শেষ আপডেট: ০৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৩:৪৫
Share: Save:

মহিলাদের বাথরুমের দরজা খোলার শব্দ হলেই তা চালু হয়ে যেত। বাথরুমে কল থেকে যেই না জল পড়তে শুরু করত, সঙ্গে সঙ্গে চালু হয়ে যেত সেই গোপন ভিডিয়ো ক্যামেরা। ঝপাঝপ তুলে নিত স্নানরতা মহিলাদের ছবি। আর তার পর স্নানরতা মহিলাদের সেই সব ছবি পাঠিয়ে দেওয়া হত মোবাইল ফোন আর ল্যাপটপে।

কেউ কোনও দিন জানতেই পারতেন না বাথরুমের বিভিন্ন জায়গায় লুকিয়ে রাখা সেই গোপন ক্যামেরার খবরাখবর যদি না সে দিন আচমকা প্লাগের সকেট খুলে মেঝেয় এসে পড়ত একটি গোপন ক্যামেরা। সেই ক্যামেরা দেখে তো চক্ষু একেবারে ছানাবড়া হয়ে যায় হস্টেলে থাকা এক মহিলার! তা হলে বাথরুমে তাঁদের স্নানের ছবি এত দিন লুকিয়ে লুকিয়ে তোলা হচ্ছিল?

চেন্নাইয়ের আদামবাক্কামে একটি মহিলা হস্টেলের ঘটনা। হস্টেলটি যিনি চালান, ইঞ্জিনিয়ারিং-এর ডিগ্রিধারী সেই ৪৮ বছর বয়সী সম্পত রাজকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, হস্টেলের বাথরুমগুলিতে গোপন ভিডিয়ো ক্যামেরা রেখে মহিলাদের অশ্লীল ছবি তোলার জন্য।

পুলিশ ওই হস্টেলে গিয়ে দেখেছে, বাথরুমগুলির বিভিন্ন জায়গায় রাখা থাকত ওই গোপন ভিডিয়ো ক্যামেরাগুলি। কখনও তা প্লাগের সকেটে। কখনও তা বাল্‌বের মধ্যে, কখনও বা বাথরুমে জানাকাপড় রাখার হ্যাঙ্গারে। এমনকি, তাঁর লাল-কালো রংয়ের হাতঘড়িতেও গোপন ক্যাম‌েরা পুরে রেখেছিলেন সম্পত। ইঞ্জিনিয়ার বলে নিজেই সেগুলি লাগাতেন। ফলে, কাকপক্ষীও টের পেত না, হস্টেলের বাথরুমে গোপন ক্যামেরা লাগানো হয়েছে কি না।

আরও পড়ুন- নগ্ন ছবি পোস্টের হুমকি দিয়ে ফেসবুক বন্ধুকে ধর্ষণ পার্ক সার্কাসে​

আরও পড়ুন- মৃতার ডিম্বাশয়ে জন্ম নিল সন্তান, বিশ্বে এই প্রথম​

ওই হস্টেলের মহিলা আবাসিকদের জেরা করে পুলিশ জেনেছে, নানা অছিলায় প্রায়ই তাঁদের রুমে ঢুকে পড়তেন সম্পত। তার পর কথা বলার সময় সম্পত তাঁর হাতটা মহিলা আবাসিকদের সামনে এমন ভাবে নাড়াতেন যাতে হাতঘড়িতে রাখা গোপন ক্যামেরায় ঝপাঝপ তাঁদের ছবি তুলে নেওয়া যায়।

পুলিশ জানাচ্ছে, হস্তিনাপুরমে বাড়ি সম্পতের। সেখানে স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়েকে নিয়ে থাকেন সম্পত। কিন্তু পরিবার নিয়ে থাকবেন বলে তিনি আন্না নগরের এক বাসিন্দার কাছ থেকে দু’তলার ওই বাড়িটি ভাড়া নেন। পরে সেখানেই খুলে ফেলেন মহিলা আবাসিকদের হস্টেল। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ৬ জন মহিলা ওই হস্টেলের তিনটি রুম ভাড়া নেন। মাসে ৭ হাজার টাকায়।

ওই হস্টেলে সম্পতের একটি অফিসও রয়েছে। ত্রিচির কলেজ থেকে বিই করার পর সম্পত চেন্নাইয়ে এসেছিলেন রিয়েল এস্টেটের ব্যবসা করতে। কিন্তু ওই ব্যবসায় তাঁর প্রচুর লোকসান হয়। তার পরেই তিনি ওই হস্টেলটি খোলেন। যেখানে তিনি মহিলাদের আবাসিক হিসেবে রুম ভাড়া দিতেন।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ায় হস্টেলের বাথরুমগুলিতে নিজেই ওই গোপন ক্যামেরাগুলি বসিয়েছিলেন সম্পত। ক্যামেরাগুলি চালু হয় শব্দে। ওই ক্যামেরাগুলি টানা ৫০০ ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে স্ট্যান্ডবাই মোডে। বাথরুমরে দরজা খোলার বা কল থেকে জল পড়ার শব্দ হলেই চালু হয়ে যা ক্যামেরাগুলি। ক্যামেরাগুলি টানা ৪ ঘণ্টার ফুটেজ তুলে রাখতে পারে। হস্টেলে মহিলা আবাসিকদের বাথরুমে বসানোর জন্য আড়াই হাজার টাকা করে ওই ক্যামেরাগুলি কিনেছিলেন সম্পত।

আদামবাক্কামের পুলিশ ইনস্পেক্টর মুরলী বলেছেন, ‘‘হস্টেলের তিনটি বাথরুমে ওি গোপন ক্যামেরা বসিয়েছিলেন সম্পত। ওই ক্যামেরাগুলিতে তোলা ভিডিয়ো ছবি ল্যাপটপ ও মোবাইল ফোনে পাঠাতেন সম্পত।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE