ঐতিহাসিক: সংবিধানে সই করছেন জওহরলাল নেহরু। ২৪ জানুয়ারি ১৯৫০।
বিকেলের ফ্লাইট ধরব বলে সুটকেস গুছিয়ে নিচ্ছি, কিন্তু চোখ টিভির পর্দায়। ১১ ডিসেম্বর ২০১৯, মঙ্গলবার। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তীসগঢ়, তেলঙ্গানায় নির্বাচন উত্তর গণনা চলছে। রওনা হওয়ার আগেই মোটের উপর ফলাফল জানা হয়ে গেল। বিমানবন্দর লাউঞ্জে বেশ ক’জন দিল্লি-যাত্রীসাংসদের দেখা পেলাম। সকলের চোখ টেলিভিশনে, তখনও ফলাফল ঘোষণা হয়নি, ছবি অবশ্য পরিষ্কার। জনগণ বদল চাইছেন।
সিটে বসে চোখ বন্ধ করলাম। বন্ধ চোখের সামনে স্বাধীনতা পরবর্তী প্রধানমন্ত্রীদের এক সুদীর্ঘ প্যানোরামা ফুটে উঠল। তাঁদের অনেককে কাছ থেকে দেখেছি, কাউকে বা কিছু দূরত্বে।
প্রথমে জওহরলাল নেহরু। পরাধীন দেশের জেল-খাটা স্বাধীনতা সংগ্রামী আজ প্রধানমন্ত্রী— দেশে ও বিদেশে মানুষ ভাল ভাবেই গ্রহণ করল। স্বাধীনতা লাভের মাত্র দু’বছর আগে হারিয়েছি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে, স্বাধীনতার অল্প দিনের মধ্যে মহাত্মা গাঁধীকে। এই সময়ে জওহরলাল নেহরুহাল ধরলেন। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে যে মহান ভারতের স্বপ্ন গাঁধীজি, নেতাজি দেখিয়েছিলেন, সেই পথেই দেশ চলবে।
আরও পড়ুন: ভোটের মুখে প্রণব ভারতরত্ন
নেহরুকে দেখেছি কলকাতায়, ইন্সটিটিউট অব চাইল্ড হেলথ উদ্বোধন করছেন। শিশুদের জন্য যার প্রতিষ্ঠা করেছেন ডা. কে সি চৌধুরী, তরুণ ডাক্তার শিশিরকুমার বসু ও তাঁর সঙ্গীরা কাজ করছেন মনেপ্রাণে। নেহরু প্রতিটি ঘর দেখলেন, ডাক্তারদের সঙ্গে আলাপ করলেন। তাঁকে দেখেছিনেতাজি ভবনেও। মিউজিয়মের এক-একটি ছবির সামনে ধ্যানমগ্ন দাঁড়িয়ে আছেন, আমলারা তাড়া দিতে সাহস পাচ্ছেন না। নীচে নেমে এসে বসুবাড়ির পরিজন, দেশবন্ধুর পরিবারের লোকজন দেখতে পেয়ে জড়িয়ে ধরছেন। সিকিয়োরিটির চিন্তা ছিল না সেই সব দিনে। নতুন ভারত গড়ারস্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। বলেছিলেন, চারিদিকে যে নির্মাণকার্য চলেছে তা হল আমাদের প্রকৃত উপাসনাগৃহ, আমাদের মন্দির-মসজিদ।
লালবাহাদুর শাস্ত্রী মানুষটি ছোটখাটো কিন্তু দেশের সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। কলকাতায় ময়দানে জনসভার মধ্যে তাঁর পাশে দাঁড়িয়ে আছি, তিনি নেতাজির মূর্তির আবরণ উন্মোচন করবেন। পর্দা খসে পড়তে দেখা গেল, নেতাজির বিশাল মূর্তি ‘দিল্লি চলো’ ভঙ্গিতে হাত তুলে দাঁড়ানো।লালবাহাদুর শাস্ত্রী মুখ তুলে উপর দিকে চেয়ে বলে উঠলেন, ‘‘বহুত তেজি হ্যায়!’’ আমাদের দুর্ভাগ্য, লালবাহাদুরজি বেশি দিন দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলেন না। অকালমৃত্যু তাঁকে ছিনিয়ে নিল।
চোখে ভাসছে, ইন্দিরা গাঁধী নেতাজি ভবনে প্রবেশ করছেন। জিপের উপর সোজা দাঁড়িয়ে আছেন, জিপের চালক, বাংলার তদানীন্তন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়। ইন্দিরার সঙ্গে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলছে, এ পার বাংলায় আমরা অনুপ্রাণিত। ইন্দিরা আপ্রাণ সহায়তাকরছেন মুক্তিযুদ্ধে, ভারতের সেনাবাহিনী সাহায্য করছে মুক্তিযোদ্ধাদের। যুদ্ধে জয়ী হলেন, অটলবিহারী বাজপেয়ী তাঁকে দুর্গার সঙ্গে তুলনা করলেন। ইন্দিরাকে দেখেছি কলকাতার রাজভবনে, সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ইন্দিরা আন্তরিকতার সঙ্গে দেখাশোনা করছেন অতিথিবঙ্গবন্ধু এবং তাঁর দুই পুত্রকে। সেই সময়ে সারা দেশের গর্বের পাত্রী। সেই গর্ব তিনি নিজের ভুলে হারালেন জরুরি অবস্থা জারি করে। ওই কারণে তাঁর অনেক ভাল কাজ ম্লান হয়ে গেল। নিজের ডাকা পরবর্তী নির্বাচনে পরাজিত হলেন। এর পর এল অল্প দিনের মোরারজি দেশাই এবং জনতাদলের রাজ্যকাল। ইন্দিরাকে আবার ফিরিয়ে আনলেন জনগণ।
আরও পড়ুন:পদ্ম সম্মান পাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের তিন কৃতী
নিজে অ্যাম্বাসাডর গাড়ি চালিয়ে রাজীব গাঁধী এসেছিলেন নেতাজি ভবনে, পাশের সিটে শিশিরকুমার বসু। রাজীব অত্যন্ত অমায়িক ও নিরভিমান ব্যক্তিত্ব, মিউজিয়ম দেখার পাশাপাশি হাসিখুশি আলাপচারিতা চলছে। আমার পুত্রকন্যার সঙ্গে তাঁর পরিচয় করিয়ে দিয়ে বললাম, এক জনকেমব্রিজ ইংল্যান্ডে পড়াশোনা করছে, আর এক জন কেমব্রিজ আমেরিকায়। কোন কেমব্রিজ বেশি ভাল, তাই নিয়ে দুজনের তর্ক বেধে যায়। রাজীব বলে উঠলেন, অবশ্যই ইংল্যান্ডের কেমব্রিজ, কারণ সেটা তাঁর নিজেরও বিশ্ববিদ্যালয়। তরুণ রাজীব কিছু নীতিগত ভুলভ্রান্তি করেছিলেন, যেমন শ্রীলঙ্কার ব্যাপারে নাক গলানো। কিন্তু তাঁর কাজকর্মে, ব্যবহারে আন্তরিকতার অভাব ছিল না, আর ছিল দেশকে আধুনিকতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা।
নরসিমা রাও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে যখন অর্থমন্ত্রী বা বিদেশমন্ত্রী ছিলেন, তখনও শিশিরকুমার বসুর নেতাজি- স্মৃতিরক্ষার প্রচেষ্টাকে শ্রদ্ধা করতেন ও সহায়তার চেষ্টা করতেন। যখনই খবর পেতেন আমরা দিল্লি গিয়েছি, বাড়িতে ডেকে পাঠিয়ে দেখা করতেন। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেওসেই ধারা বজায় ছিল। আমাকে বলেছিলেন, পড়াশোনায় ভাল ছিলাম, রাজনীতিতে আসা ঘটে গেল নেতাজির কারণে। হরিপুরায় কংগ্রেস অধিবেশনে সুভাষচন্দ্রকে দেখব বলে হোস্টেল থেকে পালিয়েছিলাম। নয়তো আজ আমি পড়াশোনার জগতেই থাকতাম।
প্রধানমন্ত্রী থাকার সময়ে তিনি এক বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, টোকিয়োর রেনকোজি মন্দিরে রক্ষিত নেতাজির দেহাবশেষ দেশে ফিরিয়ে আনবেন। তাঁর ধারণা হয়েছিল, সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতবাসীর মনের তাই বাসনা, তাঁরা খুশি হবেন। অল্প কিছু রাজনীতিেকর বাধায় এই মহৎ কাজ করাযায়নি। তিনি তিন জনের সমর্থন চেয়েছিলেন— নেতাজির স্ত্রী, কন্যা, এবং নেতাজির কর্মময় জীবনের স্মৃতিরক্ষায় আজীবন লিপ্ত (পরিবারের সদস্য হিসেবে নয়) শিশিরকুমার বসু। নেতাজি-কন্যা অনিতা ও শিশিরকুমার বসুর মত সকলেরই জানা ছিল। বিদেশমন্ত্রী প্রণববাবুকে নরসিমা রাওজার্মানি পাঠালেন নেতাজি-পত্নী এমিলিয়ের সঙ্গে মুখোমুখি কথা বলতে। এই সাক্ষাতের পর আমি কাকিমা এমিলিয়ের চিঠি পেয়েছিলাম। লিখেছেন, ‘আজ বিদেশমন্ত্রী এবং তাঁর সঙ্গে আমাদের রাষ্ট্রদূত লাম্বা এলেন, সকলে লাঞ্চ খেলাম। কথাবার্তা যা হল এতক্ষণে টেলিফোনে অনিতার কাছেজেনে গিয়েছ।’ প্রণববাবু অনিতা, এমিলিয়ে ও পরিবারের সকলের আতিথ্যে মুগ্ধ হয়েছিলেন। অবশ্য কাজটি নরসিমা রাও করে যেতে পারেননি। ১৯৯৬-এর এপ্রিল, প্রণববাবু দিল্লিতে আমাকে ও শিশিরকুমার বসুকে বললেন, সামনের অগস্টে দেহাবশেষ ফিরিয়ে আনা হবে। আমি বললাম, মেমাসে পার্লামেন্টের নির্বাচন, এ বার তো আপনারা হেরে যাবেন। আমার মন্তব্যে সচকিত প্রণববাবু এবং শিশিরকুমার দুজনেই বললেন, পরাজয় নয়, তবে কম মেজরিটি অর্থাৎ ‘রিডিউসড মেজরিটি’তে কংগ্রেস ফিরবে। কিন্তু আমার কথা সত্য হল। ইতিহাস নরসিমা রাওয়ের রাজত্বকালকেমনে রাখবে অর্থনৈতিক সংস্কারের কারণে। অর্থনীতিকে তিনি মুক্ত করে দিলেন। তাঁর লিবারালাইজেশন পলিসির জন্য দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছিল।
১৯৯৬ সালের মে মাসে নির্বাচনে বৃহত্তর কলকাতার যাদবপুর কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে আমি লোকসভায় এলাম। এ বার দেবগৌড়া, ইন্দ্রকুমার গুজরাল এবং অটলবিহারী বাজপেয়ী, তিন জন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ভাবে কাজ করার সুযোগ পেলাম। প্রথমে এলেন দেবগৌড়া, নিতান্তভালমানুষ। কোনও কিছু চাইতে গেলে বলতেন, ‘‘সিস্টার, নিশ্চয়ই তোমার কাজটা করে দেব।’’ রাজনীতিতে অপরিচিত ব্যক্তিত্ব ছিলেন, কিন্তু সবার সঙ্গে মানিয়ে চলতে চেষ্টা করেছেন। কংগ্রেস সমর্থন তুলে নেওয়ায় অকস্মাৎ তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্ব চলে গেল। আস্থা প্রস্তাবে পরাজিত হয়ে ম্লানমুখে তখনও প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে আছেন, আমার খুব কষ্ট হল, বিরোধী পক্ষের আসন থেকে উঠে গিয়ে তাঁর সঙ্গে হ্যান্ডশেক করলাম। বুঝতে পারিনি, টিভি ক্যামেরা তখনও চলছে, সারা দেশ হ্যান্ডশেকের দৃশ্য দেখে ফেলেছে। সে বার পার্লামেন্ট ফেলে দেওয়া হয়নি, নতুন প্রধানমন্ত্রীরখোঁজ চলছিল। প্লেনে দিল্লি যাচ্ছি, পাইলট কী যেন ঘোষণা করছিলেন, হঠাৎ মাঝপথে থেমে গিয়ে বললেন, ‘‘একটি জরুরি ঘোষণা, ইন্দ্রকুমার গুজরাল ভারতের প্রধানমন্ত্রী হলেন।’’ আমি খুব আনন্দিত হলাম— এক জন সঠিক লোক মনোনীত হয়েছেন।
বিদেশনীতিতে অভিজ্ঞ গুজরাল প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গে সুসম্পর্ক চেয়েছিলেন, পাকিস্তানের প্রতি উদারনীতি নিয়েছিলেন। দেশের ভিতরে কাশ্মীরের জন্য শান্তির আবহাওয়া ফিরিয়ে আনতে সচেষ্ট হয়েছিলেন। যখন স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হওয়া উপলক্ষে আমরা মধ্যরাতে অধিবেশনকরলাম, তখন আমি জওহরলাল নেহরু ও গাঁধীজির সঙ্গে নেতাজির কণ্ঠস্বরও বাজানো হোক, দাবি তুলেছিলাম। প্রধানমন্ত্রী গুজরাল আমাকে পূর্ণ সমর্থন করেছিলেন বলে আমার দাবি মেনে নেওয়া হয়েছিল। এক দিন ওঁর চেম্বারে গিয়ে মহিলা বিল নিয়ে তৎপর হতে অনুরোধ করলাম, উনিউঠে দাঁড়িয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন, ‘‘মাই ডিয়ার, তুমি এক জন কনভার্টেড ব্যক্তিকে আবার কনভার্ট করার চেষ্টা করছ।’’
১৯৯৯ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত অটলবিহারী বাজপেয়ীর প্রধানমন্ত্রিত্ব কাল। আমার সৌভাগ্য যে আমি তাঁর মতো দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞ রাজনীতিক এবং উদার মনের ব্যক্তির সঙ্গে কাজ করতে পেরেছি। তিনি প্রতিবেশী পাকিস্তানের সঙ্গে ভাল সম্পর্ক চেয়েছিলেন, সে জন্য নিজের দলেও সমালোচিতহয়েছিলেন। কাশ্মীরে শান্তি ফেরাবার চেষ্টা করেছিলেন, সফল হননি। আমি তখন তৃণমূলের সাংসদ এবং তৃণমূল এনডিএ-র শরিক। ব্যক্তিগত জীবনে এবং দলগতভাবে বিজেপি-র আদর্শের সঙ্গে আমার দুস্তর ফারাক। যখনই পার্লামেন্টে বলতে উঠতাম, তীব্র ভাষায় বিজেপির শিক্ষাকেগেরুয়াকরণ এবং অন্যান্য নীতির সমালোচনা করতাম। বিরোধী পক্ষ সরব হয়ে বলে উঠত, আমরা বলছি না, আপনাদের নিজেদের শরিক কী বলছে শুনুন। এমন বক্তৃতার পরেও প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ী আমার সঙ্গে করমর্দন করেছেন। তিনি যেমন উদার ছিলেন, তেমনই জানতেন, কী ভাবেকোয়ালিশন সরকার পরিচালনা করতে হয়। বাজপেয়ীজি এবং আমি কিছু দিন মুম্বইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে কাটিয়েছিলাম। দুজনেরই হাঁটু প্রতিস্থাপন সার্জারি হল। সার্জারির আগে আমাকে সাহস দিতেন, ‘‘গো অ্যাহেড। ডোন্ট বি অ্যাফরেড।’’
আরও পড়ুন: মোদীকে ট্যাবলো-বার্তা মমতা ও কেজরীবালের
দুজনে একটু সুস্থ হওয়ার পর উনি আমাকে ওঁর ঘরে ডেকে পাঠাতেন। সেই সময়ে পাকিস্তান নিয়ে ওঁর সঙ্গে অনেক আলোচনা হয়েছে। অল্প দিন পরেই আগরা সামিট, পারভেজ মুশাররফ আসছেন, কী ভাবে কথাবার্তা চালানো যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করতেন। আমি ছিলাম পার্লামেন্টেরবিদেশ মন্ত্রক কমিটির চেয়ারম্যান। হুইলচেয়ার-বাহিত আমি ওঁর কেবিনে, আর প্রধানমন্ত্রী অর্ধশায়িত। দেখেছিলাম, তিনি আন্তরিক ভাবে চাইছেন আগরা সামিট সফল হোক, আশা করেছিলেন কাশ্মীর সমস্যার একটা গ্রহণযোগ্য সূত্র পাওয়া যাবে। আগরা সামিট দিল্লিতে চলার সময়ে সুস্থহলেও আমাদেরও দুজনেরই হাঁটাচলার সমস্যা ছিল। উনি সব সময় লক্ষ রাখতেন, যাতে আমার কোনও অসুবিধে না হয়। মুশাররফের জন্য ব্যাংকোয়েট, সেখানে প্রধানমন্ত্রীর টেবিল ‘গঙ্গা’র পাশের টেবিল ‘যমুনা’তে আমার স্থান, সোনিয়া গাঁধী এবং পাকিস্তানের আর্দেশির কাওয়াসজিরসঙ্গে। দুর্ভাগ্য, বাজপেয়ীজির ঐকান্তিক চেষ্টা সত্ত্বেও আগরা সামিট ব্যর্থ হয়ে গেল।
আমার দিল্লিগামী বিমান অবশষে ইন্দিরা গাঁধী বিমানবন্দরে অবতরণ করল। চোখের সামনে কেন এত ক্ষণ ধরে জওহরলাল নেহরু থেকে অটলবিহারী বাজপেয়ী পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর মিছিল ভেসে চলেছিল, তা চিন্তা করে নিজেই বিস্মিত হয়েছিলাম। আসলে মনে হয়েছিল, এ বার আফটারমোদী, হু? নতুনের সন্ধানে যেতে হতে পারে। স্বাধীনতা-উত্তর ভারতে এত জন প্রধানমন্ত্রী এলেন-গেলেন, প্রত্যক্ষ করলাম। গণতন্ত্রের নিয়ম মেনে বারবার মানুষ শাসক দল এবং প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করেছেন, মনে ছিল গভীর প্রত্যাশা। কিন্তু আজকের ভারতে মস্ত বড় প্রশ্ন, জনগণের সাধ কিমিটিল, আশা কি পূর্ণ হল?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy