Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
aditya tiwari

ডাউন সিন্ড্রোম আক্রান্ত সন্তানের দেখভাল, তথ্যপ্রযু্ক্তি স‌ংস্থার চাকরি ছাড়া এই তরুণই ‘সেরা মা’

ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত অবনীশকে ঘিরেই গত চার বছর আবর্তিত হচ্ছে আদিত্যর পৃথিবী। অবনীশের চোখ দিয়েই এই পৃথিবীকে দেখছেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২০ ১৬:২৪
Share: Save:
০১ ১২
আদর্শ মা বা বাবা নয়। তিনি হতে চেয়েছিলেন একজন ভাল অভিভাবক। হতে পেরেছেন কি না জানেন না। তবে চেষ্টা করেছেন পুণের আদিত্য তিওয়ারি। প্রচেষ্টার কুর্নিশস্বরূপ পেয়েছেন ‘বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মা’ হওয়ার স্বীকৃতি।

আদর্শ মা বা বাবা নয়। তিনি হতে চেয়েছিলেন একজন ভাল অভিভাবক। হতে পেরেছেন কি না জানেন না। তবে চেষ্টা করেছেন পুণের আদিত্য তিওয়ারি। প্রচেষ্টার কুর্নিশস্বরূপ পেয়েছেন ‘বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মা’ হওয়ার স্বীকৃতি।

০২ ১২
আদিত্যর একমাত্র ছেলের নাম অবনীশ। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে দেড় বছরের চেষ্টায় ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি অবনীশের আইনি অভিভাবকত্ব বা লিগাল কাস্টডি পেয়েছেন আদিত্য।

আদিত্যর একমাত্র ছেলের নাম অবনীশ। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে দেড় বছরের চেষ্টায় ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি অবনীশের আইনি অভিভাবকত্ব বা লিগাল কাস্টডি পেয়েছেন আদিত্য।

০৩ ১২
অবনীশকে প্রথম বার আদিত্য দেখেছিলেন ২০১৪ সালে। সে বছর তিনি বাবার জন্মদিনে গিয়েছিলেন অনাথাশ্রমে। সেখানে তিনি জানতে পারেন, পাঁচ-ছ মাস বয়সি একটি শিশুকে কেউ দত্তক নিতে চাইছেন না। কারণ সে ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। এই কারণেই নাকি তাকে ব্রাত্য় করে দিয়েছেন জন্মদাতা বাবা-মা’ও।

অবনীশকে প্রথম বার আদিত্য দেখেছিলেন ২০১৪ সালে। সে বছর তিনি বাবার জন্মদিনে গিয়েছিলেন অনাথাশ্রমে। সেখানে তিনি জানতে পারেন, পাঁচ-ছ মাস বয়সি একটি শিশুকে কেউ দত্তক নিতে চাইছেন না। কারণ সে ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত। এই কারণেই নাকি তাকে ব্রাত্য় করে দিয়েছেন জন্মদাতা বাবা-মা’ও।

০৪ ১২
শুনেই রোখ চেপে যায় আদিত্যর। তিনি ঠিক করেন, ওই শিশুকেই দত্তক নেবেন। কিন্তু তখন আদিত্যর বয়স ২৭ বছর। আইন অনুযাযী, সে সময় ৩০ বছর বয়স না হলে সিঙ্গল পেরেন্ট হওয়ার অনুমতি মিলত না। এর পর বেশ কয়েক মাস অপেক্ষা ও আইনি যুদ্ধের পরে অবশেষে সেই শিশুটিকে দত্তক নেন আদিত্য। নাম দেন ‘অবনীশ’। বাইশ মাস বয়সি অবনীশকে বাড়িতে আনেন আদিত্য।

শুনেই রোখ চেপে যায় আদিত্যর। তিনি ঠিক করেন, ওই শিশুকেই দত্তক নেবেন। কিন্তু তখন আদিত্যর বয়স ২৭ বছর। আইন অনুযাযী, সে সময় ৩০ বছর বয়স না হলে সিঙ্গল পেরেন্ট হওয়ার অনুমতি মিলত না। এর পর বেশ কয়েক মাস অপেক্ষা ও আইনি যুদ্ধের পরে অবশেষে সেই শিশুটিকে দত্তক নেন আদিত্য। নাম দেন ‘অবনীশ’। বাইশ মাস বয়সি অবনীশকে বাড়িতে আনেন আদিত্য।

০৫ ১২
ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত অবনীশকে ঘিরেই গত চার বছর আবর্তিত হচ্ছে আদিত্যর পৃথিবী। অবনীশের চোখ দিয়েই এই পৃথিবীকে দেখছেন তিনি।

ডাউন সিন্ড্রোমে আক্রান্ত অবনীশকে ঘিরেই গত চার বছর আবর্তিত হচ্ছে আদিত্যর পৃথিবী। অবনীশের চোখ দিয়েই এই পৃথিবীকে দেখছেন তিনি।

০৬ ১২
প্রথম থেকেই চলার পথ বন্ধুর। কিন্তু হার মানেননি আদিত্য। জানিয়েছেন, যখন তিনি সিঙ্গল ফাদার হিসেবে অবনীশকে মানুষ করতে চেয়ে আবেদন করেন, তখন তাঁকে সহজে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। আসলে কোনও এক মা সন্তানকে বড় করছেন সেটা যতটা সহজে মানুষ গ্রহণ করেন, এক জন পুরুষ একা সেই কাজটা করবেন, এটা সহজে কেউ বিশ্বাস করতে চান না।

প্রথম থেকেই চলার পথ বন্ধুর। কিন্তু হার মানেননি আদিত্য। জানিয়েছেন, যখন তিনি সিঙ্গল ফাদার হিসেবে অবনীশকে মানুষ করতে চেয়ে আবেদন করেন, তখন তাঁকে সহজে সেই সুযোগ দেওয়া হয়নি। আসলে কোনও এক মা সন্তানকে বড় করছেন সেটা যতটা সহজে মানুষ গ্রহণ করেন, এক জন পুরুষ একা সেই কাজটা করবেন, এটা সহজে কেউ বিশ্বাস করতে চান না।

০৭ ১২
কিন্তু যখন থেকে অবনীশকে কাছে পেয়েছেন, তখন থেকে তাঁদের জীবনটাই বদলে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন আদিত্য। এটা একটা অদ্ভুত অনুভূতি। অবনীশ তাঁকে মেনে নিয়েছে, শিখিয়েছে কী ভাবে অভিভাবক হয়ে উঠতে হয়।

কিন্তু যখন থেকে অবনীশকে কাছে পেয়েছেন, তখন থেকে তাঁদের জীবনটাই বদলে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন আদিত্য। এটা একটা অদ্ভুত অনুভূতি। অবনীশ তাঁকে মেনে নিয়েছে, শিখিয়েছে কী ভাবে অভিভাবক হয়ে উঠতে হয়।

০৮ ১২
পরিবারের লোক প্রথমে আদিত্যর পাশে দাঁড়াননি। তাঁদের বিরুদ্ধে গিয়েই দত্তক নিয়েছিলেন তিনি। আজ, তাঁর বাড়ির সবার চোখের মণি একরত্তি অবনীশ। আদিত্য বিশ্বাস করেন, মাতৃত্ব শুধু মহিলাদের কুক্ষিগত বিষয় নয়। ইচ্ছে থাকলে একজন পুরুষও সফল মা হয়ে উঠতে পারেন।

পরিবারের লোক প্রথমে আদিত্যর পাশে দাঁড়াননি। তাঁদের বিরুদ্ধে গিয়েই দত্তক নিয়েছিলেন তিনি। আজ, তাঁর বাড়ির সবার চোখের মণি একরত্তি অবনীশ। আদিত্য বিশ্বাস করেন, মাতৃত্ব শুধু মহিলাদের কুক্ষিগত বিষয় নয়। ইচ্ছে থাকলে একজন পুরুষও সফল মা হয়ে উঠতে পারেন।

০৯ ১২
সন্তান অবনীশ-ই তাঁর জীবনে ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠ উপহার। সে কথা বিশ্বাস করেন সিঙ্গল পেরেন্ট আদিত্য তিওয়ারি।

সন্তান অবনীশ-ই তাঁর জীবনে ঈশ্বরের শ্রেষ্ঠ উপহার। সে কথা বিশ্বাস করেন সিঙ্গল পেরেন্ট আদিত্য তিওয়ারি।

১০ ১২
আগে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন আদিত্য। অবনীশকে দত্তক নেওযার পরে ছেড়ে দিয়েছেন চাকরি। এখন নিজের একটি অফিস খুলেছেন।

আগে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কাজ করতেন আদিত্য। অবনীশকে দত্তক নেওযার পরে ছেড়ে দিয়েছেন চাকরি। এখন নিজের একটি অফিস খুলেছেন।

১১ ১২
আদিত্য এখন বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের বাবা-মায়েদের পরামর্শ দেওয়ার কাজ করেন। সারা পৃথিবীর পাঁচ হাজারের বেশি এমন বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে, যাঁদের ঘরে ডাউন সিন্ড্রোম আক্রান্ত শিশু আছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনেও আমন্ত্রিত ছিলেন আদিত্য। যেখানে এই ধরনের বিশেষ শিশুদের সযত্নে বড় করে তোলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল।

আদিত্য এখন বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের বাবা-মায়েদের পরামর্শ দেওয়ার কাজ করেন। সারা পৃথিবীর পাঁচ হাজারের বেশি এমন বাবা-মায়ের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ আছে, যাঁদের ঘরে ডাউন সিন্ড্রোম আক্রান্ত শিশু আছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্মেলনেও আমন্ত্রিত ছিলেন আদিত্য। যেখানে এই ধরনের বিশেষ শিশুদের সযত্নে বড় করে তোলার বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল।

১২ ১২
‘ওয়েমপাওয়ার’ নামে এক সংস্থা আদিত্যকে মনোনীত করেছে ‘বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মা’ হিসেবে। ছক ভাঙা এই তরুণ বলতে চান, মাতৃত্বের কোনও নির্দিষ্ট লিঙ্গ হয় না। প্রচেষ্টা ও ইচ্ছে থাকলে এক জন পুরুষের কাছেও সফল মাতৃত্ব সোনার পাথরবাটি নয়।
(ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

‘ওয়েমপাওয়ার’ নামে এক সংস্থা আদিত্যকে মনোনীত করেছে ‘বিশ্বের শ্রেষ্ঠ মা’ হিসেবে। ছক ভাঙা এই তরুণ বলতে চান, মাতৃত্বের কোনও নির্দিষ্ট লিঙ্গ হয় না। প্রচেষ্টা ও ইচ্ছে থাকলে এক জন পুরুষের কাছেও সফল মাতৃত্ব সোনার পাথরবাটি নয়। (ছবি: সোশ্যাল মিডিয়া)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement

Share this article

CLOSE