আফতাব আমিন পুণাওয়ালা। ফাইল চিত্র।
‘দৃশ্যম’ ছবিটা দেখেছ? পলিগ্রাফ টেস্টে বসা আফতাব আমিন পুণাওয়ালাকে হালকা চালেই প্রশ্নটা করেছিলেন এক পুলিশকর্মী। আফতাব নাকি শুধু হেসেছিল। অন্য এক সূত্রের আবার দাবি, আফতাব বলেছিল, সে ওই ছবিটা তো দেখেইছে, এমনকি ‘দৃশ্যম-২’ যে এসে গিয়েছে, সেই খবরও রাখে।
খুনের পরে দেহ লোপাট দেখানো হয়েছিল অজয় দেবগণ-তব্বু অভিনীত ওই থ্রিলার ছবিতে। আফতাব তার একত্র-বাসের সঙ্গী শ্রদ্ধা ওয়ালকরকে খুনের পরে ৩৫ টুকরো করে তাঁর দেহ লোপাট করেছে। সূত্রের মতে, পুলিশ হয়তো বুঝতে চাইছে, সিনেমা দেখে কোনও কৌশল আফতাবের মাথায় এসেছিল কি না এবং সেইসূত্র ধরে শ্রদ্ধার মাথার খুলি এবং আরও কিছু দেহাংশ উদ্ধার করা যায় কি না। দেহ টুকরো করতে পাঁচটি ছুরির পাশাপাশি একটি করাতও আফতাব ব্যবহার করেছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। মেলেনি সেটিও।
ভিডিয়ো লিঙ্কের মাধ্যমে আফতাবকে আজ দিল্লির সাকেত আদালতে হাজির করানো হলে তার ১৩ দিনের জেল হেফাজত হয়েছে। পুলিশ জানাচ্ছে, শ্রদ্ধার খণ্ডিত দেহ যখন ছতরপুরের ফ্ল্যাটের ফ্রিজে রাখা ছিল, তখন ওই ফ্ল্যাটেই এক মহিলাকে এনেছিল আফতাব। পেশায় মনোবিদ সেই মহিলার সঙ্গে দিল্লি পুলিশ যোগাযোগ করেছে। ‘বাম্বল’ নামে যে ডেটিং অ্যাপে শ্রদ্ধার সঙ্গে তার আলাপ, এই মহিলার সঙ্গেও সেই অ্যাপের মাধ্যমে পরিচয় করেছিল আফতাব। পুলিশ ইতিমধ্যেই বাম্বল কর্তৃপক্ষের কাছে আফতাবের বিষয়ে তথ্য চেয়েছে। এমন আরও কত জন মহিলার সঙ্গে সে ওই অ্যাপের মাধ্যমে যোগাযোগ করেছিল, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।
গত কাল রোহিণীর ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে বিকেল ৪টে থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আফতাবের তৃতীয় এবং শেষ পর্যায়ের পলিগ্রাফ পরীক্ষা হয়। এই প্রক্রিয়ার তিনটি ধাপ থাকে— প্রি, মেন এবং পোস্ট। সবক’টি ধাপই সম্পূর্ণ হয়েছে। এক অফিসার বলেন, ‘‘পলিগ্রাফ পরীক্ষার বিভিন্ন রিডিং দেখে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞেরা রিপোর্ট তৈরি করবেন। তাঁরা সন্তুষ্ট না হলে আবার আফতাবকে ডাকা হতে পারে। (পলিগ্রাফের) চূড়ান্ত রিপোর্ট দেখে আফতাবের নার্কো অ্যানালিসিস পরীক্ষা করানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। অভিযুক্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতে থাকলেও ওই পরীক্ষা করানো যায়।’’ সব ঠিক থাকলে সোমবার দিল্লির অম্বেডকর হাসপাতালে আফতাবের নার্কো পরীক্ষা হতে পারে।
আফতাব-শ্রদ্ধার সম্পর্কের ওঠাপড়া, কোন পরিস্থিতিতে খুন, দেহ কাটা এবং সেই কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র— এ সব নিয়ে আফতাবকে আগেই জেরা করেছে পুলিশ। সূত্রের মতে, পলিগ্রাফ পরীক্ষাতেও ফের তাকে ফের সেই সব প্রশ্ন করে দেখা হয়েছে, উত্তর দেওয়ার সময়ে যন্ত্রের রিডিংয়ে কোনও অসঙ্গতি তথা শারীরিক অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ছে কি না। দু’-তিন দিনের মধ্যে পলিগ্রাফ পরীক্ষার রিপোর্ট তুলে দেওয়া হবে তদন্তকারীদের হাতে।
তবু পুলিশের একাংশের সংশয় হল, যন্ত্রকে ধোঁকা দেওয়ার ব্যাপারেও আফতাব কোনও ‘হোমওয়ার্ক’ করে নামেনি তো? বৃহস্পতিবার আফতাব বলেছিল, তার সর্দি-জ্বর হয়েছে। সূত্রের দাবি, ওই দিন পলিগ্রাফ পরীক্ষার জন্য আফতাবের শরীরে ইলেকট্রোড (তার) জোড়া হতেই সে কাশতে শুরু করে। ফলে সে দিন রিডিং ঠিকমতো আসেনি। গত কাল ফের তাকে ডেকে ওই পরীক্ষা শেষ করতে হয়েছে। তবু আজ সকালে অম্বেডকর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে আফতাবের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করিয়েছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy