গত ১৩ অগস্ট পুণেতে কাকা-ভাইপোর সাক্ষাতের পরেই ‘পুনর্মিলনের সম্ভাবনা’ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছিল। শুক্রবার শরদ পওয়ার সরাসরি দলে ভাঙনের কথা অস্বীকার করে জানিয়ে দিলেন, রাজনৈতিক অবস্থানে ফারাক থাকলেও তিনি এবং অজিত দু’জনেই এখনও এনসিপিতে রয়েছেন! মহারাষ্ট্রের বারামতী থেকে কোলাপুরে যাওয়ার পথে এনসিপি প্রধান বলেন, ‘‘অজিত যে এখনও আমাদের দলের নেতা, সে বিষয়ে কোনও সংশয় নেই। হ্যাঁ, কিছু নেতা ভিন্ন রাজনৈতিক অবস্থান নিয়েছেন। গণতন্ত্রে তা তাঁরা নিতেই পারেন।’’
শরদ-কন্যা তথা এনসিপি সাংসদ সুপ্রিয়া সুলে বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘‘অজিত পওয়ার আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতা।’’ শুক্রবার শরদ কার্যত অজিতদের বিদ্রোহের প্রসঙ্গই অস্বীকার করলেন। তিনি বলেন, ‘‘যখন একটি দলে জাতীয় পর্যায়ে বিভাজন হয়, তখনই তাঁকে ভাঙন বলা যায়। এ ক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়নি।’’
আরও পড়ুন:
যদিও তথ্য বলছে, ইতিমধ্যেই ‘আসল এনসিপি’ হিসাবে স্বীকৃতি চেয়ে পতাকা এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’-র অধিকার দাবি করে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছে অজিত শিবির। অন্য দিকে, শরদ শিবির বহিষ্কার করেছে ‘বিদ্রোহী’ দু’জন সাংসদ এবং সাত বিধায়ককে। তবে সেই তালিকায় রয়েছেন প্রফুল পটেল, সুনীল তটকরে, ছগন ভুজবল, ধনঞ্জয় মুন্ডে, দিলীপ ওয়ালসে পাতিলের মতো নেতারা।
গত ২ জুলাই এনসিপিতে পটপরিবর্তন মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে বদলে দিয়েছে বেশ কয়েকটি সমীকরণ। অজিত-সহ ন’জন বিদ্রোহী এনসিপি বিধায়কের মন্ত্রিত্ব এবং ভাল দফতর লাভের পরে এনডিএর অন্দরে ক্রমশ তাঁর শিবিরের পাল্লা ভারী হচ্ছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করেছেন। এই পরিস্থিতিতে কাকা শরদ ফের বিদ্রোহী ভাইপোর সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটতে পারেন বলে মহারাষ্ট্রের বিজেপি বিরোধী জোট ‘মহা বিকাশ আঘাড়ী’র অন্য দুই শরিক কংগ্রেস এবং শিবসেনা(উদ্ধব)-এর নেতাদের একাংশের আশঙ্কা রয়েছে। শুক্রবার শরদের মন্তব্যে সেই আশঙ্কা আরও প্রবল হবে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ।
নির্বাচন কমিশনের কাছে অজিত গোষ্ঠী এনসিপির পতাকা ও নির্বাচনী প্রতীক ব্যবহারের অধিকার দাবি করার পরে পাল্টা কমিশনের কাছে একটি হলফনামা দিয়ে ক্যাভিয়েট দাখিল করেছিল শরদ গোষ্ঠী। গত ১৬ অগস্ট নির্বাচন কমিশন দু’পক্ষকে দাবির সপক্ষে তথ্যপ্রমাণ-সহ বক্তব্য পেশের জন্য তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছিল। সেই সময়সীমা শেষের আগে শরদ প্রকাশ্যে আজিতকে ‘এনসিপি নেতা’ বলায় বিষয়টি অন্য মাত্রা পেল বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
প্রসঙ্গত, এনসিপির ন’জন সাংসদের মধ্যে ছ’জন শরদের পাশে থাকলেও বিধায়ক সংখ্যার হিসাবে অজিত শিবিরের পাল্লা ভারী বলে মনে করা হচ্ছে। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় এনসিপির বিধায়ক সংখ্যা ৫৩। দলত্যাগবিরোধী আইন এড়াতে অজিত গোষ্ঠীর প্রয়োজন ৩৬ জন বিধায়কের সমর্থন। অজিতের দাবি, ৪০ জন বিধায়ক তাঁর সঙ্গে রয়েছেন।