কাছাড়ে মাছ চাষের উপযোগী ২৮ হাজার হেক্টর জলাশয় রয়েছে। রয়েছে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন মাছের চাহিদাও। কিন্তু এখানে ২৫ হাজার মেট্রিক টন মাছও উৎপাদন হয় না। তাই মৎস্যপালন নিয়ে পড়াশোনার জন্য কলেজ ছাত্রদের পরামর্শ দিলেন তিন মৎস্যবিজ্ঞানী।
আজ কাছাড় কলেজে ৬ দিনের ‘জব ট্রেনিং প্রোগ্রাম’ শুরু হয়েছে। তাতে অংশ নিয়েছেন প্রমোদকুমার পাণ্ডে, দীপেশ দেবনাথ ও নীতি শর্মা। প্রমোদবাবু ত্রিপুরার কলেজ অব ফিসারিজ-এর ডিন। অন্য দু’জন গুয়াহাটির সেন্ট্রাল ইনল্যান্ড ফিসারিজ রিসার্চ ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী।
কাছাড় কলেজের ‘সেন্টার ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফিস অ্যান্ড ফিসারিজ’ এই সম্মেলনের আয়োজন করে। সেন্টার কো-অর্ডিনেটর অপূর্ব চক্রবর্তী জানিয়েছেন, কাছাড়ে একমাত্র তাঁদের কলেজেই মৎস্যচাষের স্নাতক কোর্স রয়েছে। প্রতি বছর এই বিষয় পড়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের আগ্রহ বাড়ছে।
প্রধান অতিথি প্রমোদকুমার পাণ্ডে বলেন, ‘‘শুধু কাছাড় বা বরাক উপত্যকা নয়, উত্তর-পূর্ব জুড়েই মাছের চাহিদা ও ঘাটতি দুই-ই বেড়ে চলেছে। এর মূল কারণ এখানকার মানুষের খাদ্যাভাস। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে মাছের চাহিদা বাড়াটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই তুলনায় মাছের উৎপাদন বাড়ছে না।’’ তিনি জানান, এই সময়ে অসমে ৬৮ হাজার মেট্রিক টন মাছের ঘাটতি রয়েছে। গোটা উত্তর-পূর্বাঞ্চল হিসেব করলে তা ২ লক্ষ মেট্রিক টন ছাড়াবে। ওই ঘাটতি পূরণ করছে অন্ধ্রপ্রদেশ। অথচ উত্তর-পূর্বে মাছ চাষের জন্য জলের অভাব নেই। তাঁর কথায়, ‘‘উৎপাদন না বাড়ার একটি বড় কারণ, এই অঞ্চলের মৎস্য চাষীদের প্রথাগত পদ্ধতিতে মাছ চাষ।’’ তার সঙ্গে শিক্ষা ও প্রযুক্তিকে যুক্ত করা গেলে বিরাট লাভ হবে বলেই দাবি তাঁর। প্রমোদবাবু বলেন, ‘‘এই কাজ ছাত্রছাত্রীরাই করতে পারেন।’’ তিনি একজন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘‘মৎস্যচাষের হিসেব দেখাশোনা করতে গিয়ে তাঁর ফিসারি করার ইচ্ছে হয়েছিল। এখন তিনি সব ছেড়েছুঁড়ে মাছেই মনোযোগ দিয়েছেন। সে সূত্রে বহু সম্পত্তির মালিকও।’’তাঁর আহ্বান, ‘‘মানুষের কাছে গিয়ে চাকরি খুঁজবে কেন, মৎস্যচাষের মাধ্যমে অন্যদের চাকরি দেবে।’’
জেলা মৎস্য দফতর এবং কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞরাও কাছাড়ে মাছচাষের বিরাট সম্ভাবনার কথা ছাত্রছাত্রীদের সামনে তুলে ধরেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy