বুলেট ট্রেনের স্বপ্ন বা রাম মন্দির নির্মাণের সঙ্কল্প নয়, নরেন্দ্র মোদীকে আপাতত গ্রামের দিকে তাকানোর নিদান দিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। অনেকের মতে, তৃণমূল স্তরে ফিরে যাওয়ার এই বার্তার মধ্যে দিয়ে সঙ্ঘ এটাও বুঝিয়ে দিল যে, মোদী সরকারের কাজকর্মে তারা খুশি নয়।
মধ্যপ্রদেশের ভোপালে সঙ্ঘের নীতি নির্ধারণের সর্বোচ্চ স্তর অখিল ভারতীয় কার্যকরী মণ্ডলের তিন দিনের বৈঠক শেষে শনিবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চাষিদের অবস্থা ফেরানোই তাদের অগ্রাধিকার। সঙ্ঘের সরকার্যবাহ সুরেশ ভাইয়াজি জোশী বলেন, ‘‘চাষিদের সমস্যাগুলি বুঝে তাঁদের অনুকূল নীতি তৈরি করতে হবে সরকারকে। চাষিরা নানা সমস্যায় ভুগছেন। সঙ্ঘ মনে করে, চাষিদের স্বাবলম্বী করার জন্য আরও অনেক কাজ করা দরকার।’’
কেন সঙ্ঘ গ্রামের দিকে নজর ফেরাচ্ছে, তার ব্যাখ্যা দিয়ে ভাইয়াজি বলেন, ‘‘এ দেশে ৬০% মানুষ এখনও গ্রামেই বাস করেন। গ্রাম এবং সেখানকার জীবনযাত্রাই এখনও ভারতের মূল ধারা। তাই সব কিছুকে সরিয়ে রেখে গ্রামে ফিরতে হবে।’’
আরও পড়ুন:মনোরোগীদের মনের আলোয় উজ্জ্বল দীপাবলি
পাশাপাশি, অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গে ভাইয়াজির বক্তব্য, ‘‘আগে সমস্ত বাধা দূর হোক। পরে রাম মন্দির হবে। যা বাধা আছে, তা দূর করার জন্য সরকার কাজ করুক। প্রস্তুতি তো আছেই। বাধা দূর হলেই মন্দির হবে।’’ বিজেপির একাংশ আগামী দেড়-দু’বছরের মধ্যে রাম মন্দির নির্মাণের কথা বললেও এ দিন সঙ্ঘের বিবৃতিতে বিষয়টি ঠাঁই পেয়েছে একেবারে শেষ অনুচ্ছেদে।
আরএসএস সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গ্রামীণ জীবন, চাষবাস এবং চাষিদের উন্নতির জন্য জোর কদমে নামবে তারা। চাষিদের জৈব সার ব্যবহারে উৎসাহী করতে সঙ্ঘের কর্মীরা গ্রামে গ্রামে প্রচার করবেন। ভাইয়াজি বলেন, ‘‘চাষিরা যাতে ফসলের ন্যায্য মূল্য পান, তার জন্য প্রয়োজনে সরকারকে নীতি বদলাতে হবে।’’
রাজস্থানের সিকর, মধ্যপ্রদেশের মন্দাসৌর বা তামিলনাড়ুর কৃষকেরা ফসলের ন্যায্য মূল্যের দাবিতে আন্দোলন করে চলেছেন। মধ্যপ্রদেশে সয়াবিন, সর্ষে এবং গমের সহায়ক মূল্য বাড়ানোর দাবিতে যে আন্দোলন হয়েছিল, তাতে সঙ্ঘের কৃষক সংগঠন ভারতীয় কিষাণ সঙ্ঘও সামিল ছিল। ওই আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে পাঁচ চাষির মৃত্যু হয়। এ বার সেই মধ্যপ্রদেশেই দাঁড়িয়ে সঙ্ঘ জানিয়ে দিল, চাষিদের জন্যই লড়বে তারা। এই সংক্রান্ত আরও স্পষ্ট নীতি মার্চ মাসে ঘোষণা করা হবে।
সংরক্ষণ প্রসঙ্গে সঙ্ঘ নেতা জানিয়েছেন, অম্বেডকর যে উদ্দেশ্য নিয়ে সংরক্ষণ চালু করেছিলেন, তা যত দিন না পূরণ হচ্ছে, তত দিন সংরক্ষণ থাকুক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy