প্রতীকী ছবি।
স্টেন্টের দাম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অর্থোপেডিক ইমপ্ল্যান্ট বা সরঞ্জামের দাম বেঁধে দেওয়া হচ্ছে। ইন্ট্রাঅক্যুলার লেন্সের দাম বেঁধে দেওয়ার কথা চলছে। কিন্তু ইঞ্জেকশনের সিরিঞ্জের দামে কোনও নিয়ন্ত্রণ ছিল না। রোগীর পরিবারের অসহায়তার সুযোগে সিরিঞ্জের ২০-২৫ গুণ দাম নেওয়া হচ্ছিল। এই দুর্নীতি ধরা পড়তেই কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার। তার পরেই লাগামছাড়া লাভে রাশ টানতে রাজি হয়েছেন সিরিঞ্জ উৎপাদকেরা।
দিল্লির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গিতে মৃত এক শিশুর চিকিৎসার বিল নিয়ে তদন্তে নেমে সিরিঞ্জ-দুর্নীতির খোঁজ পায় ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রীর দামের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ন্যাশনাল ফার্মাসিউটিক্যাল প্রাইসিং অথরিটি’ (এনপিপিএ)। সিরিঞ্জ উৎপাদক ও আমদানিকারী সংস্থাগুলিকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, তারা নিজেরা লাভে রাশ না-টানলে সিরিঞ্জের দাম বেঁধে দেবে সরকার।
১৮ ডিসেম্বর তড়িঘড়ি বৈঠকে বসে তাবড় সিরিঞ্জ সংস্থাগুলি। স্টেন্টের দাম বেঁধে দেওয়ায় লাভ কমে গিয়েছে। এনপিপিএ দাম বেঁধে দিলে লাভ এক ধাক্কায় তলানিতে ঠেকবে আঁচ করেই সিরিঞ্জ উৎপাদকেরা দামে রাশ টানতে রাজি হয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
অল ইন্ডিয়া সিরিঞ্জ অ্যান্ড নিডলস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজীব নাথ ফোনে বলেন, ‘‘কিছু সংস্থা বেশি লাভের লোভে সিরিঞ্জের প্যাকেটে বেশি দাম লিখছে। তাই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, কোনও সিরিঞ্জেরই ‘এক্স-ফ্যাক্টরি প্রাইস’ বা উৎপাদন-পরবর্তী মূল্যের থেকে এমআরপি বা প্যাকেটে ছাপা দাম ৭৫ শতাংশের বেশি হবে না। ২৬ জানুয়ারি থেকে এই নিয়ম সব সংস্থাকেই মেনে চলতে বলা হয়েছে।’’
এনপিপিএ-র এক কর্তার কথায়, ‘‘আমরা যে-কর্পোরেট হাসপাতালে তদন্তে গিয়েছিলাম, তারা শিশু রোগীর জন্য ১৬০০ গ্লাভস আর ৬৬০টি সিরিঞ্জের বিল করেছিল! বেশির ভাগ সিরিঞ্জ ১৫ টাকায় কিনে ২০০ টাকা করে বিল করা হয়!’’ ওই হাসপাতালের কলকাতা শাখার দাবি, তারা এতটা লাভ রাখে না। দু’টাকা ১০ পয়সায় সিরিঞ্জ কিনে তারা সাড়ে ছ’টাকায় রোগীকে দেয়। ছ’টাকা ৪০ পয়সায় কেনা সিরিঞ্জের জন্য নেওয়া হয় আট টাকা ৯০ পয়সা। এনপিপিএ জানাচ্ছে, সিরিঞ্জ তৈরিতে যত টাকা লাগছে, তার ২০-২৫ গুণ দাম লেখা থাকছে প্যাকেটে। প্রতিটি সিরিঞ্জে ৫০০ থেকে ১২০০ শতাংশ লাভ করছে বহু হাসপাতাল।
গুরুগ্রামের একটি নামী সিরিঞ্জ সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার প্রদীপ সারিন জানান, অনেক হাসপাতাল নিজস্ব ওষুধের দোকানে দেদার লাভের মওকা ছাড়তে চায় না। কিছু হাসপাতাল আবার অন্য ওষুধের দোকানকে জায়গা ভাড়া দেয় চড়া হারে। সেই টাকা তুলতে দোকানগুলি এমন সংস্থার সিরিঞ্জ দোকানে রাখে, যাদের উৎপাদন-পরবর্তী মূল্যের থেকে এমআরপি অস্বাভাবিক বেশি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy