Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

ফের মুখ্যমন্ত্রী রাওয়াত, সরকার ভাঙতে আজই সুপ্রিম কোর্টে শুনানি চায় কেন্দ্র

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ফের কার্যভার বুঝে নিলেন হরীশ রাওয়াত। নৈনিতাল হাইকোর্টের রায়ে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ফিরে পেয়েই ক্যাবিনেট বৈঠক ডাকলেন তিনি। বৈঠকে রাওয়াতের ১১টি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাওয়াত জানিয়েছেন, সবক’টি সিদ্ধান্তই খুব দ্রুত রূপায়ণের পথে হাঁটবেন তিনি।

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৬ ১২:৩৬
Share: Save:

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ফের কার্যভার বুঝে নিলেন হরীশ রাওয়াত। নৈনিতাল হাইকোর্টের রায়ে মুখ্যমন্ত্রিত্ব ফিরে পেয়েই ক্যাবিনেট বৈঠক ডাকলেন তিনি। বৈঠকে রাওয়াতের ১১টি বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাওয়াত জানিয়েছেন, সবক’টি সিদ্ধান্তই খুব দ্রুত রূপায়ণের পথে হাঁটবেন তিনি। সর্বাগ্রে জলের সমস্যা কাটাতে কাজ শুরু করছে সরকার। কেন্দ্র অবশ্য রাওয়াতের সরকারকে বরখাস্ত করতে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে।

ক্যাবিনেট বৈঠকেই সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২৯ এপ্রিল আস্থা ভোটে যাবে সরকার। সেই অনুযায়ী ২৯ এপ্রিল উত্তরাখণ্ড বিধানসভার অধিবেশন ডেকেছেন স্পিকার। হরীশ রাওয়াতের সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনেছিলেন কংগ্রেসেরই ৯ জন বিদ্রোহী বিধায়ক। দলত্যাগ বিরোধী আইনে স্পিকার তাঁদের বিধায়ক পদ খারিজ করেন। কিন্তু আস্থা ভোট হওয়ার আগেই কেন্দ্র উত্তরাখণ্ডে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে। কেন্দ্রের সেই সিদ্ধান্তই খারিজ হয়েছে নৈনিতাল হাইকোর্টে। নরেন্দ্র মোদীর সরকার এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ। কেন্দ্রের এই আবেদন সুপ্রিম কোর্ট আজ, শুক্রবারই শুনবে নাকি সোমবারে শুনানি হবে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন খোদ প্রধান বিচারপতি টি এস ঠাকুর।

যে নয় বিধায়কের বিধানসভা থেকে তাঁদের সদস্যপদ খারিজ হয়ে গিয়েছে, তাঁরাও আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু তাঁদের আবেদনের ভিত্তিতে কোনও অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি হাইকোর্ট। ফলে এখনও পর্যন্ত বিধায়ক পদ খারিজের সিদ্ধান্তই বহাল রয়েছে। আগামী এক সপ্তাহে কোনও পরিবর্তন না হলে এই ন’জন বিধায়ক হরীশ রাওয়াতের আস্থা ভোটেও অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। ফলে পরিস্থিতির বদল না হলে সংখ্যার হিসেবে রাওয়াতের আস্থা ভোটে জেতার সম্ভাবনাই বেশি।

আদালতের রায়ের পর রাওয়াত আজ বলেন, ‘‘আমাদের কাছে সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। আজ গণতন্ত্রের জয় হল। কেন্দ্রীয় সরকারের উচিত, সব কিছু ভুলে এ বারে রাজ্যের উন্নয়নের জন্য সব রকম সাহায্য করা।’’

আরও পড়ুন:

নামবদলের গেরোয় এ বার মোদী সরকার

কিন্তু বিজেপি এখনই রণে ভঙ্গ দিতে চাইছে না। উত্তরাখণ্ডে ছুটে গিয়ে বিক্ষুব্ধ বিধায়কদের দিল্লিতে নিয়ে এসেছিলেন কৈলাস বিজয়বর্গীয়। তিনি আজ বলেন, ‘‘গত কয়েক দিন ধরে উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট যে ভাষায় সমালোচনা করছিল, তাতে এই রায় অপ্রত্যাশিত ছিল না। এটিকে আমরা আদৌ ধাক্কা বলব না।’’ তাঁর দাবি, ‘হরীশ রাওয়াত সরকারের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। আস্থা ভোটে বিজেপিরই জয় হবে।’’

আদালতের রায়ের পরেই বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের বাড়িতে অরুণ জেটলি ও রাজনাথ সিংহ জরুরি বৈঠকে বসেন। সেখানেই সুপ্রিম কোর্টে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিঙ্ঘভিও জানান, কংগ্রেসও শীর্ষ আদালতে তাদের বক্তব্য জানাবে। তাঁর মতে, ‘‘দেশের ইতিহাসে সম্ভবত এই প্রথম কোনও রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি থাকা অবস্থায় তা খারিজ করল আদালত।’’ সিঙ্ঘভির দাবি, নরেন্দ্র মোদী সরকার লোভী দৃষ্টি দিয়ে একের পর এক রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন করে ক্ষমতা দখল করতে চাইছে। তাদের বোঝা উচিত এ ভাবে রাজ্য হাতিয়ে নেওয়া যায় না।

আজ হাইকোর্টের রায়ের পর রাষ্ট্রপতির ভূমিকা নিয়েও বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। আদালতে মোদী সরকারের পক্ষ থেকে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল, রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তে আদালত নাক গলাতে পারে না। কিন্তু গত কালই উত্তরাখণ্ড হাইকোর্ট স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছিল, রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তও আদালত খতিয়ে দেখতে পারে। রাষ্ট্রপতিও ভুল করতে পারেন। ২০০৬ সালে বিহারের রাষ্ট্রপতি শাসন খারিজ করার পর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি এ পি জে আব্দুল কালাম ইস্তফা দিতে চেয়েছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরে এ কথা জানিয়েছিলেন কালামের প্রাক্তন প্রচারসচিব। তবে কংগ্রেস আপাতত রাষ্ট্রপতির সমালোচনা করতে চাইছে না। অভিষেক মনু সিঙ্ঘভির মতে, ‘‘কিছু নির্দিষ্ট বিষয় ছাড়া আদালত রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্তও খতিয়ে দেখতে পারে। কিন্তু কেন্দ্রের সুপারিশ মানার ব্যাপারে রাষ্ট্রপতিরও একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE