এক বছর হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গে এখনও চালু হয়নি খাদ্য সুরক্ষা আইন। রাজ্য সরকারের মন জানতে তাই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নির্দেশে কলকাতায় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করবেন কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান। যাওয়ার আগে আজ মমতাকে চিঠিও লিখেছেন তিনি।
আজ সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে খাদ্য সুরক্ষা আইনের ভবিষ্যৎ নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন রামবিলাস। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও। কারণ, ইউপিএ আমলে তৈরি এই প্রকল্পটি রাজ্যগুলি চালু করলে বাজেটে সে জন্য বরাদ্দও স্থির করতে হবে। কিন্তু পর্যালোচনা করতে বসে মোদী দেখেন, মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, রাজস্থান, পঞ্জাব, ছত্তীসগঢ় ছাড়া আর কোনও রাজ্যে এই প্রকল্পটি পুরোপুরি চালু হয়নি। আংশিক কাজ হয়েছে দিল্লি, হিমাচল, কর্নাটক, মধ্যপ্রদেশ, বিহার, চন্ডীগড়ে। কিন্তু বাকি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে এই প্রকল্প অধরাই থেকে গিয়েছে। তাই মোদী আজ দুটি সিদ্ধান্ত নেন। এক, এই প্রকল্প রূপায়ণের জন্য রাজ্যগুলিকে আরও তিন মাস সময় দেওয়া হবে। দুই, যে সব রাজ্য এই প্রকল্প চালু করেনি, তাদের মত নেওয়া হবে। এই বিষয়ে মমতার মত জানার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পাসোয়ানকেই। ৪ জুলাই রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও কেন্দ্র এই বিষয়টি নিয়ে সবিস্তারে আলোচনা করবে। জেটলিও থাকবেন সেই বৈঠকে।
পাসোয়ান আজ বলেন, “আগামিকাল পটনায় গিয়ে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব। পরশু মমতাজির সঙ্গে দেখা করব। আমার দফতর মমতাজির সঙ্গে ইতিমধ্যেই যোগাযোগ করেছে।” পাসোয়ান জানিয়েছেন, খাদ্য সুরক্ষা আইনটি গরিবদের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ভাবে জড়িত। আর মোদী সরকার গরিবদের জন্যই কাজ করার ব্যাপারে বদ্ধপরিকর। এই প্রকল্পটি কার্যকর করার জন্য রাজ্যগুলিকে এক বছর সময় দেওয়া হয়েছিল। জুলাই মাসের গোড়ায় সেই সময় শেষ হচ্ছে। পাসোয়ানের কথায়, “কেন এখনও এই প্রকল্প চালু করা হচ্ছে না, তা আমি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে বোঝার চেষ্টা করব। তাঁদের মত নেব।”
খাদ্যমন্ত্রক সূত্রে খবর, এই প্রকল্পের জন্য বিপুল ভর্তুকি বহন করতে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকারকে। রাজ্যগুলির মেয়াদ সুকৌশলে বাড়িয়ে দেওয়া হল, যাতে বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ করতে না হয়। অনেক রাজ্য এই প্রকল্প চালুই করতে চায় না। যেমন তামিলনাড়ু। তারা নিজেদের ব্যবস্থাই কার্যকর করতে চায়। কিন্তু কেন্দ্র রাজ্যের উপরে গোটা বিষয়টি ছেড়ে দিয়ে তাদের ঘাড় থেকে যতটা সম্ভব দায় ঝেড়ে ফেলতে চাইছে।
এখনও কুড়িটির বেশি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে এই প্রকল্প চালু হয়নি। তিন মাসের মধ্যেও তারা আগ্রহ না দেখালে আখেরে কেন্দ্রকেই আর্থিক বোঝা নিতে হয় না। সে কারণেই আগে রাজ্যগুলির মত নেওয়ার কৌশল নেওয়া হয়েছে। আবার মোদী যে সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ধর্মে বিশ্বাস করেন, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে সেই বার্তাও দেওয়া যাবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy