গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পর পর রেল দুর্ঘটনা নিয়ে সংসদে বিরোধী পক্ষের নিশানা হয়েছেন তিনি। তাঁর ‘রিল প্রীতি’ নিয়ে একের পর এক পোস্ট উপচে পড়ছে সমাজমাধ্যম। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার লোকসভায় বিরোধী পক্ষের টিপ্পনীর জবাব দিতে গিয়ে মেজাজ হারালেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। আর বিরোধীদের নিশানা করতে গিয়ে বেছে নিলেন সেই ‘রিল’কেই!
লোকসভায় বৈষ্ণব বিরোধী সাংসদদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনাদের মতো যাঁরা মানুষকে দেখানোর জন্য রিল বানান, আমরা সেই দলে পড়ি না। আমরা কঠোর পরিশ্রম করি।’’ যাত্রিবাহী ট্রেনের চালকেরা (লোকো পাইলট) অত্যাধিক কাজের চাপে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা কার্যত খারিজ করে রেলমন্ত্রী বলেন, ‘‘লোকো পাইলটদের গড় কাজ এবং বিশ্রামের সময়গুলি ২০০৫ সালে প্রণীত বিধি দ্বারা নির্ধারিত হয়। ২০১৬ সালে, কয়েকটি বিধি সংশোধন করে এবং লোকো পাইলটদের আরও সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়েছিল।’’
এর পরেই বিরোধীদের খোঁচা দিয়ে বৈষ্ণবের মন্তব্য, ‘‘আজ যাঁরা রিল তৈরি করে সহানুভূতি দেখান, তাঁদের এই তথ্য জানা উচিত।’’ পরিসংখ্যান বলছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকারে বৈষ্ণব রেলমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরে গত দেড় মাসে যাত্রিবাহী ট্রেনে তিনটি দুর্ঘটনায় ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত অসংখ্য।
জুলাই মাসে নিউ জলপাইগুড়ির কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। উত্তরপ্রদেশের গোন্ডায় দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে ডিব্রুগড় এক্সপ্রেস। এই আবহে ঝাড়খণ্ডে হাওড়া-মুম্বই মেলের দুর্ঘটনার জেরে বুধবার অশ্বিনীকে কটাক্ষ করে আম আদমি পার্টি (আপ) এক্স হ্যান্ডলে লিখেছিল, ‘‘রেলমন্ত্রীর রিল বানানো আর প্রধানমন্ত্রীর জুমলাবাজি ছাড়া অন্য কোনও কিছু করার সময় নেই।’’
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার হাওড়া থেকে মুম্বইগামী হাওড়া-সিএসএমটি এক্সপ্রেস ঝাড়খণ্ডে লাইনচ্যুত হয়েছে। মৃত্যু হয় দু’জনের। কিন্তু সংসদে বুধবার সে প্রসঙ্গই তোলেননি বৈষ্ণব। পরিবর্তে তিনি বুলেট ট্রেন নিয়ে কথা বলেন। জানান, দেশে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বুলেট ট্রেন চালানোর জন্য দ্রুত গতিতে কাজ চলছে। এর পরেই আপের তরফে ওই পোস্ট করা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার লোকসভায় সেই কটাক্ষের জবাব দিলেন বৈষ্ণব।
মোটরবাইকের পিলিয়নে বসে রেলমন্ত্রীর দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছনো দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনের ইঞ্জিনের তলায় ঢুকে যাওয়া ভিডিয়ো ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। যা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। তাঁকে ‘পার্ট টাইম রেলমন্ত্রী’ বলে খোঁচাও দেওয়া হয়েছে। কারণ, রেলের পাশাপাশি ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচারের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্বও বৈষ্ণবের হাতে রয়েছে। ফলে প্রশ্ন উঠছে, রেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের দায়িত্ব কেন এক জন ‘আংশিক সময়ের মন্ত্রী’র হাতে দেওয়া হবে?
বৈষ্ণবের পাল্টা দাবি, তাঁর আমলে সাত হাজারের বেশি লোকো ক্যাব (চালকদের কেবিন) বাতানুকূল করা হয়েছে। কারণ সেগুলি গরম হয়ে যায়, কাঁপতে থাকে। ৫৫৮টি রানিং রুমের সবগুলিই এখন শীতাতপনিয়ন্ত্রিত। কংগ্রেসের বেঞ্চকে নিশানা করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘আজ যাঁরা রিল বানিয়ে সহানুভূতি জানাচ্ছেন, তাঁদের আমলে তো একটিও ছিল না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy