সংসদে ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে কথা বললেন না রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
একের পর এক রেল দুর্ঘটনা ঘটছে দেশের নানা প্রান্তে। মৃত্যুও হচ্ছে অনেকের। মঙ্গলবারও হাওড়া থেকে মুম্বইগামী হাওড়া-সিএসএমটি এক্সপ্রেস ঝাড়খণ্ডে লাইনচ্যুত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। কিন্তু সংসদে বুধবার সে প্রসঙ্গই তুললেন না রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। বদলে তিনি বুলেট ট্রেন নিয়ে কথা বললেন। দেশে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বুলেট ট্রেন চালানোর জন্য দ্রুত গতিতে কাজ চলছে বলে জানান তিনি। শীঘ্রই ভারতে ওই ট্রেন চলবে, আশাবাদী রেলমন্ত্রী।
বুধবার লোকসভার অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন অশ্বিনী। সেখানেই বুলেট ট্রেনের প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। জাপানের সহায়তায় এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ভারতে এসেছে। অধিকাংশ কাজ হয়েও গিয়েছে বলে জানান তিনি। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, রেলমন্ত্রীর তথ্য অনুযায়ী, বুলেট ট্রেনের ৩২০ কিলোমিটার যাত্রাপথে দ্রুত গতিতে কাজ এগোচ্ছে। অশ্বিনী বলেন, ‘‘বুলেট ট্রেন একটি অত্যন্ত জটিল এবং প্রযুক্তিনির্ভর প্রকল্প। যাত্রীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে জাপানি রেলওয়ের সাহায্যে এই প্রকল্পের নকশা তৈরি করা হয়েছে। ভারতের পরিবেশ এবং চাহিদা অনুযায়ী প্রকল্পের কাজ এগোচ্ছে। সমস্ত কাঠামো, রেললাইন, বিদ্যুতের সিগন্যালিং এবং টেলি যোগাযোগের কাজ সম্পন্ন হলে বুলেট ট্রেন চালু করার দিনক্ষণ স্থির করা যাবে।’’
দেশে প্রথম বুলেট ট্রেনটি চলবে মুম্বই থেকে আমদাবাদ পর্যন্ত। এই ৫০৮ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে এই মুহূর্তে ৩২০ কিলোমিটারে কাজ চলছে বলে জানান রেলমন্ত্রী। এই কাজ মাঝে বাধা পেয়েছিল বলেও সংসদে উল্লেখ করেছেন তিনি। অশ্বিনী বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্রের অংশে বুলেট ট্রেনের কাজ কিছুটা বাধা পেয়েছিল। তাই সেখানে কাজ এগোতে দেরি হয়েছে।” ২০২২ সালে মহারাষ্ট্রে বিজেপি-শিবসেনা সরকার ক্ষমতায় আসার পর কাজ আবার দ্রুত গতিতে এগোতে শুরু করে। রেলমন্ত্রী এ-ও জানান, প্রাথমিক ভাবে বুলেট ট্রেনের প্রযুক্তি জাপানের কাছ থেকে নেওয়া হলেও এখন দেশের মাটিতে এমন অনেক প্রযুক্তি তৈরি হচ্ছে।
দেশের প্রথম সমুদ্রের নীচে রেল সুড়ঙ্গ তৈরির কথাও সংসদে বলেছেন অশ্বিনী। সমুদ্রের নীচে রেল যাতায়াতের জন্য ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ তৈরির কাজ চলছে। উঠেছে বন্দে ভারতের প্রসঙ্গও। রেলমন্ত্রী জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে দেশে ১০২টি বন্দে ভারত ট্রেন পরিষেবা চালু রয়েছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েক মাসে পর পর একাধিক রেল দুর্ঘটনা ঘটেছে। ২০২৩ সালে ওড়িশার বাহানগা স্টেশনের কাছে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের কামরা উঠে গিয়েছিল একটি মালগাড়ির উপরে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছিল বেঙ্গালুরু-হাওড়া সুপারফাস্ট এক্সপ্রেসও। সেই ঘটনায় প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যু হয়। এর পর চলতি বছরে নিউ জলপাইগুড়ির কাছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। দুর্ঘটনা ঘটে ডিব্রুগড় এক্সপ্রেসেও। মঙ্গলবার চক্রধরপুরের কাছে হাওড়া-সিএসএমটি এক্সপ্রেসের অন্তত ১৮টি কামরা লাইনচ্যুত হয়। পর পর দুর্ঘটনায় ভারতীয় রেলের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। দিকে দিকে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। তবে বুধবার সংসদে রেলমন্ত্রী এই সমস্ত দুর্ঘটনা নিয়ে কোনও কথা বলেননি। যা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে নানা মহলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy