মোদীর-মুদ্রানীতি নিয়ে ভাঙলেন না, মচকালেনও না কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন কংগ্রেস মন্ত্রী গৌতম রায়ের পুত্র রাহুল রায়। গত কাল সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মুদ্রানীতিকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় সমর্থন জানান কংগ্রেসের এই তরুণ নেতা। তার পরেই দলের জেলা নেতাদের মধ্যে আলোড়ন তৈরি হয়। আজ পরিস্থিতি সামাল দিতে রাহুলকে নিয়েই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন জেলা কংগ্রেসের সভাপতি অশোক দত্তগুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন জেলা কংগ্রেসের একগুচ্ছ নেতা। তবে রাহুলকে দিয়ে উল্টো বক্তব্য বলাতে পারলেন না তাঁরা। রাহুল ১৮০ ডিগ্রি না ঘুরে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে আগের অবস্থানেই কার্যত অটল রইলেন।
জেলা কংগ্রেসের নেতারা এদিন রাহুলকে পাশে বসিয়ে বলেন, ‘‘আমরা সরকারের কালো টাকা বিরোধী অভিযানকে সমর্থন জানাচ্ছি। তবে যে পন্থায় সরকার এগুচ্ছে কংগ্রেস তার বিরোধী।’’ রাহুল বলেন, ‘‘আমি একজন ব্যবসায়ী হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে তার মুদ্রানীতিকে সমর্থন করছি।’’ তবে তার জন্য যে প্রস্তুতি নিয়ে এই অভিযানে সরকারের নামা উচিত ছিল তা না করায় মানুষের হয়রানি হচ্ছে বলে রাহুল মনে করেন। জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র হীরালাল দত্তপুরকায়স্থ মোদী সরকারের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘ভারতবর্ষের মতো একটি বিশাল দেশের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা বিজেপির নেই।’’ সরকারের নতুন মুদ্রা নীতির প্রতিবাদে সোমবার কংগ্রেসের দেশব্যাপী ‘আক্রোশ দিবস’-এরও বিরোধিতা করেন রাহুল রায়। তিনি বলেন, ‘‘যে কোনও রাজনৈতিক দলকে মানুষের মনের কথা বুঝতে হবে। মানুষের উপর কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিলে তাতে অনেক সময় দলের ক্ষতি হয়।’’
আগামী সোমবার দেশের অন্য অংশের সঙ্গে হাইলাকান্দিতেও কংগ্রেস আক্রোশ দিবস পালন করবে। কংগ্রেসের এই কর্মসূচি নিয়ে জেলা কংগ্রেস সভাপতি অশোক দত্তগুপ্ত বলেন, তাঁদের এই প্রতিবাদ কালোটাকা উদ্ধারের বিপক্ষে নয়। মানুষের হেনস্থার বিরুদ্ধেই তাঁদের প্রতিবাদ। কংগ্রসের এই কর্মসূচিতে রাহুল রায় অংশ নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি উত্তর এড়িয়ে যান।
অন্য দিকে, কংগ্রেসের প্রাক্তন বিধায়ক রাহুল রায়ের অভিমতে বিস্মিত খোদ বিজেপি নেতারা। প্রসঙ্গ উঠতেই রাজ্য বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার তথা শিলচরের বিধায়ক দিলীপকুমার পাল মন্তব্য করেন, ‘‘এ কি কথা শুনি আজ মন্থরার মুখে!’’ দিলীপবাবু পরে বলেন, ‘‘বিপদে পড়লে রাজনীতিবিদরা ‘ব্যক্তিগত মন্তব্য’ বলে এড়িয়ে যান বটে। কিন্তু ব্যবসায়ী বা রাজনীতিবিদ, যে পরিচিতিতেই রাহুলবাবু প্রধানমন্ত্রীকে সমর্থন করুন না কেন, আমরা একে দেশভক্তির লক্ষণ বলেই মনে করি। কারণ দেশভক্ত-মাত্রই নোট বদলে খুশি হয়েছেন।’’
রাহুলবাবু কি বিজেপি-তে যাচ্ছেন, এমন প্রশ্ন গত বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই ঘুরপাক খাচ্ছে। বিজেপিরই একটি শিবির তখন জানিয়েছিল, তিনি চাইলেও দল তাঁকে নিতে রাজি নয়। তবে কি এখন বরফ গলছে? দিলীপবাবু সোজাসুজি কিছু বলতে চাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy