—ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের সভাপতি থাকবেন না, উত্তরসূরিও বাছবেন না। খোদ রাহুল গাঁধীই এমনটি জানিয়েছেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকারকে চাপে রাখতে ‘ভোট-বয়কট’ নিয়ে সেই রাহুলের তৎপরতাই শোরগোল ফেলে দিয়েছে কংগ্রেসে।
কংগ্রেস সূত্রের খবর, লোকসভা ভোটে খারাপ ফলের কারণ খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট রাহুলের কাছে জমা দিয়েছেন তাঁর টিমের সদস্যরা। কংগ্রেসের একাধিক নেতার অভিযোগ, অরাজনৈতিক লোকেদের নিয়ে গড়া এই ‘টিম’ই বহু দিন ধরে রাহুলকে পরামর্শ দেয়। কংগ্রেস সূত্রের খবর, হারের কারণ পর্যালোচনা করে ওই টিম যে রিপোর্ট দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে, মোদীর প্রথম জমানায় বরাত দেওয়া ইভিএমে কারচুপি করেই নির্বাচনে এত সাফল্য বিজেপির। ফলে সামনের বিধানসভা ভোটে যে কোনও মূল্যে ব্যালটে ফিরতে হবে। তার জন্য চাপ বাড়াতে হবে সরকারের উপর। আর যদি সরকার না মানে, তা হলে ভোট বয়কটের মতো আন্দোলনের পথেও হাঁটা দরকার।
কংগ্রেসের এক নেতা জানান, এই রিপোর্ট আসার পরেই বিষয়টি নিয়ে সনিয়া গাঁধীর সঙ্গে আলোচনা করেন রাহুল। এমন কোনও পদক্ষেপ কংগ্রেসের করা উচিত কি না, দলের কিছু প্রবীণ নেতার সঙ্গে আলোচনা করেন সনিয়া। সিংহ ভাগ নেতাই পরামর্শ দেন, এমন কোনও পদক্ষেপ করলে কংগ্রেসের বিশ্বাসযোগ্যতায় আঁচ পড়বে। এই ইভিএমেই গত বছরের শেষ দিকে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তীসগঢ়ের মতো রাজ্যে বিধানসভা ভোটে জিতেছে কংগ্রেস। সামনে হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে বিধানসভা ভোট। দলের সূত্রের মতে, রাহুল যদি ভোট বয়কট নিয়ে চাপ দেন, তা হলে দলে আরও ফাটল ধরবে। হরিয়ানার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ভূপিন্দর সিংহ হুডা বলে রেখেছেন, এমন হলে তিনি কংগ্রেস ছেড়ে নিজের নতুন দল গড়বেন। গত কাল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের সঙ্গে দেখা করে সে কথা জানিয়েও এসেছেন হুডা।
কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির এক সদস্য বলেন, ‘‘আমি নিজে লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে বিজেপির কাছে হেরেছি। তবু বলব, ইভিএমে কোনও গরমিল ছিল না। আজ ঠিক এক মাস হল লোকসভা ভোটের ফল বেরিয়েছে। অথচ দল এখনও হারের আসল কারণ চিহ্নিত না করে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় হাতড়ে বেড়াচ্ছে!’’ দলের অনেকের মতে, রাহুল সভাপতি হওয়ার পর দলের প্লেনারি অধিবেশনেই প্রস্তাব গৃহীত হয়, ইভিএমের বদলে ব্যালটে ফেরার জন্য। অন্য অনেক বিরোধী দলেরও মত একই। সকলে মিলে আগের মতো চাপ তৈরি করা যায়। কিন্তু ভোট বয়কট কোনও সমাধান নয়।
কংগ্রেসের একাধিক নেতা মনে করছেন, অবিলম্বে নিজের টিমের সদস্যদের বদলে ফেলে দলের হাল ধরা উচিত রাহুল গাঁধীর। এই টিমের সদস্যরাই রাহুলকে বিপথে চালিত করেছেন। তাঁরাই বলে এসেছিলেন, কংগ্রেস একাই দেড়শোর বেশি আসন পাবে। তাঁরাই এখন পিঠ বাঁচাতে হারের দায় ইভিএমের উপর ঠেলছেন। এখনও তাঁদের কথায় চলেই ভারতীয় সেনার ডগ স্কোয়াডের যোগ ব্যায়ামের ছবিতে ‘নিউ ইন্ডিয়া’ টুইট করে ফের বিতর্ক বাধাচ্ছেন রাহুল। এর মধ্যেই আজ মণিশঙ্কর আইয়ার বলেছেন, গাঁধী পরিবারের বাইরে কেউ সভাপতি হতেই পারেন। কিন্তু সংগঠনে গাঁধী পরিবারকে সক্রিয় থাকতে হবে।
এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy