Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Budget session

বলতে চান রাহুল, ক্ষমা চাওয়া নিয়ে বিজেপি অনড়ই

রাহুল গান্ধী আজ ৩৫৭ ধারায় লোকসভার স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়ে তাঁকে বলতে দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন।

রাহুল গান্ধী এবং নরেন্দ্র মোদী।

রাহুল গান্ধী এবং নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৩ ০৯:৫৬
Share: Save:

বাজেট অধিবেশনের দ্বিতীয় সপ্তাহের প্রথম দিনে সংসদে অচলাবস্থা জারি রইল। অচল সংসদের জন্য খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দায়ী বলে আজ আক্রমণ শানিয়েছে কংগ্রেস নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, আদানি প্রশ্নে অস্বস্তি এড়াতেই সংসদ বানচাল করার কৌশল নিয়েছে শাসক শিবির। অন্য দিকে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, রাহুল গান্ধী নিঃশর্ত ভাবে ক্ষমা চাইলেই একমাত্র ওই অচলাবস্থা কাটতে পারে। না হলে কাটবে না।

রাহুল গান্ধী আজ ৩৫৭ ধারায় লোকসভার স্পিকারের কাছে চিঠি দিয়ে তাঁকে বলতে দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন। ওই ধারায় কোনও সদস্য স্পিকারের কাছে ব্যক্তিগত বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার অনুমতি চাইতে পারেন। সে বিষয়ে লোকসভায় কোনও প্রশ্ন না থাকলেও ওই সাংসদ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে তা নিয়ে বলতে পারেন। তবে সাংসদের বক্তব্য নিয়ে কোনও বিতর্ক করা যায় না।

অচলাবস্থা কাটাতে আজ যুযুধান দু’পক্ষকে আলোচনার টেবিলে বসার ডাক দেন স্পিকার ওম বিড়লা। আজ সকালে লোকসভা শুরু হতেই দু’পক্ষ স্লোগান দিতে শুরু করে। কংগ্রেস সাংসদেরা অন্য দিনের মতোই ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। জট কাটাতেদু’পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেন স্পিকার। প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার একটি আলোচনাচক্রে সংসদের অচলাবস্থা কাটাতে দু’পক্ষকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আজ স্পিকারও বলেন, “আপনারা আসুন। আলোচনা করুন। শাসক-বিরোধী উভয়েই আসুন। আশা করছি তাতে অধিবেশন চলার প্রশ্নে সমাধান সূত্র পাওয়া যাবে। আপনারা যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা চান সেগুলি নিয়েও লোকসভায় আলোচনা হবে।” স্পিকারের সেই প্রস্তাবে কোনও শিবির কর্ণপাত না করায় অধিবেশন বেলা ২টো পর্যন্ত মুলতুবি করে দেন তিনি।

স্পিকার মধ্যস্থতার চেষ্টা করলেও, বিরোধীদের মতে— বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব চাইছেন না সংসদের অচলাবস্থা কাটুক। কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারির অভিযোগ, “গত ১৩ মার্চ থেকে সংসদে যে অচলাবস্থার নাটক চলছে তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ছাড়া হতে পারে না। আমরা কী চাইছি? স্বাধীনতার পরে ভারতে হওয়া সব থেকে বড় দুর্নীতির জেপিসি তদন্ত।” কংগ্রেস নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, খোদ প্রধানমন্ত্রী চান না সংসদ চলুক। কারণ শাসক শিবির ভাল করেই বুঝতে পারছে সংসদের অধিবেশন চললে তাতে আলোচনা হবে। সেই আলোচনায় কোনও না কোনও ভাবে আদানি শিল্পসংস্থার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সুসম্পর্ক নিয়ে আক্রমণ শানাবেন বিরোধীরা। সামনে ছয় রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন, তার পরেই রয়েছে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি নিয়ে কোনও ধরনের প্রশ্ন উঠুক তা চায় না বিজেপি। সে কারণে এ বারের অধিবেশন প্রয়োজনে বানচাল করে দিতে কৌশল নিয়েছে শাসক শিবির। অন্য দিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরীর কথায়, “রাহুলের নিঃশর্ত ক্ষমা না চাওয়া পর্যন্ত অচলাবস্থা কাটার প্রশ্নই নেই। তিনি ক্ষমা চাইলেই সংসদ চলতে পারে।” যদিও আজ কংগ্রেস ফের জানিয়েছে, রাহুল গান্ধীর ক্ষমা চাওয়ার প্রশ্নই নেই। উল্টে গত কাল রাহুলের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে কংগ্রেস নেতাকে যে ভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে তার সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিরোধীরা।

দু’পক্ষের অনড় অবস্থান দেখে অধিবেশন চলবে না ধরে নিয়ে আগামী ২৩ মার্চ বাজেটের ব্যয় বরাদ্দ সংক্রান্ত বিষয়গুলি আলোচনা ছাড়াই সংসদে পাশ করিয়ে নেওয়ারকথা ভেবে রেখেছে শাসক শিবির। এমনকি অর্থ বিলও এ যাত্রায় আলোচনা ছাড়াই পাশ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে করছেন বিজেপি সাংসদেরা। সে ক্ষেত্রে এ সপ্তাহেই অথবা পরের সপ্তাহে রামনবমীর আগেই সংসদের এ বারের অধিবেশন স্থগিত হয়ে যেতে পারে।

সংসদে চলতি সপ্তাহের রণকৌশল ঠিক করতে এ দিন বৈঠকে বসেন কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। গত সপ্তাহের মতো তাতে গরহাজির ছিল তৃণমূল কংগ্রেস। আজ বিরোধীদের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, প্রথমত-আদানি কাণ্ডের তদন্ত যৌথ সংসদীয় কমিটিকে দিয়ে করানোর দাবি থেকে সরে আসা হবে না। দ্বিতীয়ত, রাহুল গান্ধীকে সংসদে বলতে দিতে হবে। তৃতীয়ত, গত কাল রাহুলের বাড়িতে পুলিশ পাঠানোর বিষয়টি সংসদে তুলতে দেওয়া হোক।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy